সবজি ও মাছের বাজারে আগুন
১৪ জুলাই ২০২৩, ১১:৩০ পিএম | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
গ্যাস সংকটে রাজধানীর হাজার হাজার ঘরে চুলা জ্বলছে না। চুলায় আগুন নেই অথচ সবজির বাজারে আগুন। প্রায় সব সবজি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সবজির বাজার ঈদের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাছের দাম। কোরবানির ঈদের পর মাছের চাহিদা বাড়তেই দামও বাড়তে শুরু করেছে। মাছ কিনতে এসে এই মূল্যদ্ধি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বাজার করতে আসা ভুক্তোভোগীরা বলছেন, বছর জুড়ে কোনো না কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। সরকারি দলের লোকজন ও মন্ত্রীরা অসাধু ব্যবসায়ী সি-িকেটে থাকায় সি-িকেটেরধারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে মানুষের পকেট সারা বছর জুড়ে কাটা হচ্ছে।
সবজি আর মাছের বাজারে অস্বস্তি থাকলেও কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আদা, আটার মতো নিত্যপণ্য। গত সপ্তাহের তুলনায় এই পণ্যগুলোর দাম কমেছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম এখনও রয়েছে অস্থিতিশীল। তবে একাধিক দোকানি জানিয়েছেন, সরকারের নতুন রেটের সয়াবিন তেল এখনো বাজারে পৌঁছেনি। ফলে কিছু কিছু দোকানে নতুন দামে সয়াবিন বিক্রি হলেও রাজধানীর অনেক এলাকায় আগের বেশি দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, নতুন দামের সফাবিন তারা এখনো পাননি।
কখনও বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়, আবার কখনও ৪০০ টাকায়। গতকাল শুক্রবার শনিরআখড়া কাঁচা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ৬০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই। লম্বা বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করল্লা ১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০, পেপে ৬০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ৩২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০-৯০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ কেজি, লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা পিস। ক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম দিগুণ বেড়েছে। বাজার করতে আসা মো. ফাহিম বলেন, ঈদের পর থেকেই দেখছি সবজির দাম বেশি। এখনও সেটা কমেনি। সবজির দাম অনেক বেড়ে গেছে।
বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের অনেক জায়গায়ই পানি বেড়ে গেছে। বন্যার মতো অবস্থা, তাই সবজির দাম এখন বাড়তি। সবজি বিক্রেতা মো. রাজিব হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। আর শুক্রবার বিক্রি করছি ৪০০ টাকা কেজি। এটার দামের কোনও ঠিক-ঠিকানা নাই। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আদা ২০০-২৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আদা-রসুন বিক্রেতা শরীফুল ইসলাম বলেন, আদার দাম কমেছে। শুক্রবার বিক্রি করছি ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা। পেঁয়াজের দামও কমেছে কিছুটা। আজ দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি। যা আগে ছিল দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫, ক্রস জাতের ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।
রাজধানীর শনির আখড়া, যাত্রবাড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেল মাছের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। ঈদুল আহজার পর মাছের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন দোকানীরা। শনির আখড়া, গবিন্দপুর ও যাত্রাবাড়ি বাজারে ইলিশ মাছ ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০, কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৫০০, চিংড়ি মাছ ৯০০, কাঁচকি মাছ ৫০০, টেংরা মাছ ৮০০, কৈ মাছ ২৫০, পাবদা মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬৫০, বেলে মাছ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, কাজলী মাছ ১৪০০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭৮, পাকিস্তানি বা কক মুরগি ২৫২ থেকে ২৬০, দেশি মুরগি ৫৫০, গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেশায় আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুর রমান এসেছিলেন বাজার করতে। তিনি বলেন, আমি টেংরা মাছ ৮০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ৪০০ টাকা কেজি করে কিনেছি। সব মাছের দামই দ্বিগুণ বেড়েছে। আসলে কোরবানির ঈদের সময় মানুষের গোশত বেশি খাওয়া হয়। তাই ঈদের পরে যখন মাছের চাহিদা বাড়ে তখনই দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। মাছের ব্যবসায়ী মো. শিপন বলেন, আজ মাছের দাম একটু বেশি আছে। শুক্রবার বলে দাম বেশি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুদি দোকানে বিভিন্ন পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। কমেছে সয়াবিন তেল ও আটার দাম। বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি দাম ১৬৯ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। আর আটার দাম (দুই কেজির প্যাকেট) আজ ১২০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা।
এছাড়া মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, খোলা ময়দা ৬৩ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদপুর জেনারেল স্টোরের মালিক মো. মনির হোসেন বলেন, বুধবার দাম কমে সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৯ টাকা হয়। তবে বাজারে এখনও নতুন রেটের তেল আসেনি। তার আগে তেলের দাম ছিল ছিল ১৯০ টাকা। আটার দাম কমেছে, দুই কেজির দাম এখন ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা। বিক্রেতা মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, পণ্যের দাম সব সময় বাড়তি। আমরা যে দরে কিনি সামান্য লাভ করে বিক্রি করি। দামের ব্যাপারে আমাদের করার কিছু নেই।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কে হবেন বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার?
বোলারদের নৈপুণ্যে অল্প টার্গেটেও স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান
৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামোর বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে: আমিনুল হক
পিরোজপুর প্রেসক্লাব নির্বাচন শামীম সভাপতি ও তানভীর সম্পাদক
বিরক্তিকর সময়কে গুডবাই বলুন! এন্টি ডোট হিসেবে সেরা অ্যাপ (পর্ব-১)
দেশের বিরাজমান সংকট উত্তরণে জাতির আস্থা তারেক রহমান : মীর হেলাল
টোল প্লাজায় দুর্ঘটনা: বাসের ব্রেকে সমস্যা ছিল, চালক নেশা করতেন
পাবনার আমিনপুরে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন, শঙ্কিত পরিবার
দেশে এলো ভিভোর নতুন ফ্ল্যাগশিপ এক্স২০০
বিএনপির দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হলে কাউকে ছাড় নয়: শাহ সুলতান খোকন
সচিবালয়ে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য বিশেষ সেল গঠন
যুদ্ধের দামামা, তালেবানের পাল্টা হামলায় ১৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত
ফিরে দেখা ২০২৪: ফুটবলে ঘটনাবহুল বছর
বড় চমক অ্যাপলের, জ্বর ও হার্ট অ্যাটাকের আগেই সতর্ক করবে ইয়ারবাডস
রাস্তাটি সংস্কার করুন
থার্টি ফাস্ট নাইট এবং প্রাসঙ্গিক কথা
ইসলামী শক্তির সম্ভাবনা কতটা
কিশোরগঞ্জে দুই নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার-১
সাধারণ মানুষের স্বস্তি নিশ্চিত করা জরুরি
দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা