‘স্কুল ব্যাগটি ফেলতে পারিনি’
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম
স্কুল ব্যাগে শ্বশুরের কাটা মাথাটি ছিল। আমি ও আমার স্বামী শফিক সেটি বীচে নিয়ে যাই। শফিক মাথাটা বীচের পুলিশ বক্সের একদম নিচের দিকে পাথরের ফাঁকে ফেলে দেয়। আমাকে বলে স্কুল ব্যাগটা ফেলে দিতে। কিন্তু আমি ফেলিনি। এটা আমি স্কুলে প্রথম হওয়ায় আমাকে পুরস্কার দেয়। শ^শুর মো. হাসান আলীকে হত্যা এবং টুকরো টুকরো করে লাশ গুমের ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন পুত্রবধূ আনারকলি ওরফে কলি। গতকাল মঙ্গলবার মহানগর হাকিম মো. সাদ্দাম হোসেনের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আনারকলি।
তার জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান ইনকিলাবকে বলেন, শ^শুরকে খুনের সাথে সরাসরি জড়িত না থাকলেও লাশ গুমে স্বামী ভাসুরকে সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন আনারকলি।
আনারকলি বলেন, ভালো ছাত্রী ছিলাম। ক্লাস ওয়ান থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে রোল নম্বর এক ছিল। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ পাই। কিন্তু অভাবের কারণে আমার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী মারা যায়। এরপর দুই বছর আগে শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরের সাথে বিয়ে হয়। এ ঘরে আমার এক সন্তান রয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর আমার শ^শুর হাসান আলী বাসায় আসেন। রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকাল বেলা আমার বাসার পাশের একটি খালি ঘরে স্বামী শফিক, ভাসুর মোস্তাফিজ ও আমার শ^শুর কথাবার্তা বলে। ঘরের ভেতর তারা কি করছিল তা আমি দেখিনি। একবার আমি জানালা দিয়ে লুকিয়ে দেখতে পাই আমার স্বামী ও ভাসুর আমার শ^শুরকে একটি বস্তায় ভরছে। পরে বিকেলে জানতে পারি ওরা আমার শ^শুরকে মেরে ফেলেছে। এরপর আমি ও আমার স্বামী লাশটা ঘরে নিয়ে রেখে দিই।
এরপর আমার স্বামী ও ভাসুর মিলে লাশটা টুকরো করে আমার লাগেজ, স্কুল ব্যাগ ও বস্তায় ভরে। আমার স্বামী পলিথিন ও টেপ আনতে বললে আমি সেগুলো এনে ভাসুরকে দিই। একটা লোককে দিয়ে রাতেই তারা বস্তাভর্তি লাশের খ- ফেলে দেয়। কোথায় ফেলেছে জানি না। পরদিন ভোরবেলা আমি স্বামী ও ভাসুরকে নিয়ে লাগেজটি ১২ নম্বর ঘাটের দিকে ফেলি।
এরপর আমি ও আমার স্বামী স্কুল ব্যাগে রাখা কাটা মাথা নিয়ে পতেঙ্গা সৈকতে চলে যাই। আমি খুনের বিষয়ে জানতাম না। পরে জেনেও চুপ ছিলাম। ভাবলাম সংসার ভেঙে যাবে কিনা। অভাবের জন্য আমাকে ৮ম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে দিয়ে দেয়। গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশকে আমি হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দামা ও ব্যাগ উদ্ধারে সহায়তা করি।
উল্লেখ্য, হাসান আলী হত্যার ঘটনায় আগেই তার স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গতকাল পুত্রবধূ আনারকলিকে তার বাবার বাড়ি মহেশখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপর আসামী হাসানের ছোট ছেলে শফিকুর রহমান এখনও পলাতক রয়েছেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিএসএফ সাইন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে : লে. কর্নেল কিবরিয়া
যুদ্ধবিরতির প্রতীক্ষায় গাজার ফিলিস্তিনিরা, নিহত ৪৭ হাজার ছুঁই ছুঁই
এক সপ্তাহে মসজিদে নববীতে ৫৪ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
ধর্ম নিয়ে তাচ্ছিল্যকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিলেন আজহারী
‘মা’ দেশ স্বাধীন করেছি- মৃত্যু শয্যায় শহীদ সাব্বির
নাইজেরিয়ায় পেট্রোল ট্যাংকার বিস্ফোরণে নিহত ৭০
লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা : মেঘমল্লার বসুর শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
চুয়াডাঙ্গার কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুল হককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম
বিএনপিতে কোন সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু
মধ্যরাতে জাবির ছাত্রী হলের রুম থেকে লালন ভক্ত যুবক আটক
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান
ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের
গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি
বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান
২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা