সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী সরকার -মির্জা ফখরুল

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৩ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম

সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সরকারই কারণেই বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কতবড় লজ্জার কথা! সাবেক সেনা প্রধানকে আমেরিকা থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক, শেইম। এরজন্য দায়ী কে? এর জন্য (নিষেধাজ্ঞা) দায়ী তো এই সরকারই, এই শাসকগোষ্ঠি, তারা সেনাবাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। এজন্য এই ঘটনাটা ঘটেছে। আমরা আগেই বলেছি, এর জন্য দায়ী এই শাসকগোষ্ঠি, এই সরকার। তারাই তাদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছে। সেজন্য এদেরকে (সরকার) সরিয়ে দেয়া ছাড়া, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশি-বিদেশি মিডিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকবার এই আজিকের (আজিজ আহমেদ) কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরকার কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। শুধু তাই নয়, এখনো যেটা বলছে যে, এটা নাকি রাজনৈতিক কথা-বার্তা। এভাবে দেশকে, একটা জাতিকে তার মর্যাদা থেকে ধবংস করে দেয়া, তার সম্মানকে কেড়ে নেয়ার অধিকার কারো নেই। কারণ সেনাবাহিনী হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে ভরসার স্থল, প্রতিষ্ঠান। সেই সেনাবাহিনীকে সরকারের কারণে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়, সেটা কখনই এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।

র‌্যাবের ওপর অতীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, র‌্যাবের যেসব কর্মকর্তার উপরে নিষেধাজ্ঞা আসলো তা থেকে তো তারা (সরকার) কোনো শিক্ষা নিলেন না। তাদের থেকে একজন পুলিশ বাহিনীর আইজি হয়ে গেলেন, এখনো বোধহয় আইজি আছেন। এটার কতটুকু ইমপ্যাক্ট পড়ে এব্যাপারে আমার ধারণা নেই। এজন্য নাই যে, এই ধরণের সরকারগুলো, যারা গায়ের জোরে, দখল করে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে, এই বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকে, যারা তাদের ক্ষমতাটাকে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে এই বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা চরম দুর্ভাগ্য, আনফরচুনেট শুধু নয়, এটা লজ্জার কথা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে গণতন্ত্র সূচক, দুর্নীতির ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থানে গিয়ে পৌঁছেছে সেটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, দুঃখজনক। দেশের মাথা নিচু হয়ে আসে।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ইলেকশন (উপজেলা) নিয়ে তো জনগণের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখি না। কেউ লক্ষ্যও করছে না কোথাও ইলেকশন হচ্ছে, এটা কোথাও দেখছি না। মিডিয়ায় কিছু কিছু দেখছি। প্রতিদিন এটাকে (উপজেলা নির্বাচন) বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে- ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতেও প্রিন্টিং মিডিয়াতেও। এছাড়া জনগণের কোথাও এটা নিয়ে কথা-বার্তা নেই, কোনো আলোচনা নেই। কারণ নির্বাচনী ব্যবস্থাটার ওপরই মানুষের আস্থা চলে গেছে। এই সরকার সেটা সাকসেসফুলি করেছে। এই জায়গাগুলো আমাদের রিকভার করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের খুব কষ্ট হয় যখন দেখি, আমাদের কিছু কিছু মিডিয়া আছেন যারা সরকারের সমালোচনা করেন না, হয়ত ভয়ে করেন না অথবা বিভিন্ন কারণে করেন না। কিন্তু বিএনপির সমালোচনা করতে একেবারে সিদ্ধহস্ত। খুঁজে খুঁজে বের করছেন কোথায় কি আছে না আছে। জাতির সামনে সেটা কোনো সমস্যা না, জাতির সামনে সমস্যা এই সরকার, এই শাসকগোষ্ঠি। আমাদের গোটা জাতি আজকে ধবংস হয়ে যাচ্ছে, পরনির্ভরশীল দেশে, নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। আজকে গোটা জাতির উপর কিভাবে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে গোটা জাতির ওপর যে ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাদের ব্যর্থতার কারণে মানুষ যাবে কোথায়?”

নিখোঁজ এমপির মৃত্যুর বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা কি এখনো আইনের শাসন, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এই সরকারের সক্ষমতা দেখেন? বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক নয়, তাদের তথাকথিত একজন এমপি বিদেশী গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন, তার কোনো খবর দিতে তারা পারলেন না। না পারলেন বাংলাদেশ সরকার, না পারলেন তাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত। তাহলে আমরা কি মনে করব? এটা দুর্নীতি কিংবা টাকার পাহাড় তৈরি করার কারণে বিদেশের মাটিতে কোনো ঘটনা কিনা আমরা জানি না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে হামলা এবং সেগুনবাগিচায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবণের ওপরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপুসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।###


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সোনালী ব্যাংকে হুইসেল ব্লোয়ার্স পলিসি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সোনালী ব্যাংকে হুইসেল ব্লোয়ার্স পলিসি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

বীমা সেবার পরিধি বাড়াতে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স-ব্র্যাক হেলথকেয়ার স্ট্র্যাটিজিক পার্টনারশিপ চুক্তি

বীমা সেবার পরিধি বাড়াতে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স-ব্র্যাক হেলথকেয়ার স্ট্র্যাটিজিক পার্টনারশিপ চুক্তি

পদ্মায় পানি বেড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ভাঙন আতঙ্ক

পদ্মায় পানি বেড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ভাঙন আতঙ্ক

ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই আওয়ামী লীগের জন্ম -আনন্দ র‌্যালি পূর্ব অনুষ্ঠানে আ জ ম নাছির উদ্দিন

ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই আওয়ামী লীগের জন্ম -আনন্দ র‌্যালি পূর্ব অনুষ্ঠানে আ জ ম নাছির উদ্দিন

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে বাকৃবি

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে বাকৃবি

স্ট্রিট ফুডের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে

স্ট্রিট ফুডের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে

পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই

পাহাড় ধসে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই

আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন সঠিক হয় না?

আবহাওয়ার পূর্বাভাস কেন সঠিক হয় না?

নেতানিয়াহু পদত্যাগ করুন, নয়তো জিম্মি বিনিময় অসম্ভব

নেতানিয়াহু পদত্যাগ করুন, নয়তো জিম্মি বিনিময় অসম্ভব

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে রুশ অ্যান্টি-ভাইরাস জায়ান্ট ক্যাসপারস্কি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে রুশ অ্যান্টি-ভাইরাস জায়ান্ট ক্যাসপারস্কি

তাইওয়ানের স্বাধীনতা চাইলেই চরম শাস্তি!

তাইওয়ানের স্বাধীনতা চাইলেই চরম শাস্তি!

তীব্র তাপপ্রবাহ, মক্কা-মদিনায় জুমার খুতবা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ

তীব্র তাপপ্রবাহ, মক্কা-মদিনায় জুমার খুতবা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে বিশাল দাবানল, নিহত অন্তত ১২

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে বিশাল দাবানল, নিহত অন্তত ১২

আফগানিস্তানে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে নিকারাগুয়া

আফগানিস্তানে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে নিকারাগুয়া

নেতানিয়াহুর আসন্ন সফর ও কংগ্রেসে ভাষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হোয়াইট হাউস

নেতানিয়াহুর আসন্ন সফর ও কংগ্রেসে ভাষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হোয়াইট হাউস

৩৩০০ বছরের পুরনো জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মিলল ভূমধ্যসাগরে

৩৩০০ বছরের পুরনো জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মিলল ভূমধ্যসাগরে

এনভিডিয়ার চমক শেষে ফের শীর্ষে মাইক্রোসফট

এনভিডিয়ার চমক শেষে ফের শীর্ষে মাইক্রোসফট

যৌথ মহড়ার জন্য দ.কোরিয়ায় পৌঁছেছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী

যৌথ মহড়ার জন্য দ.কোরিয়ায় পৌঁছেছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী

দক্ষিণ মেক্সিকোতে এক সপ্তাহের মধ্যে দু’জন মেয়র নিহত

দক্ষিণ মেক্সিকোতে এক সপ্তাহের মধ্যে দু’জন মেয়র নিহত

ইসরাইলের স্পর্শকাতর লক্ষ্যবস্তুর ফুটেজ প্রকাশ করল হিজবুল্লাহ

ইসরাইলের স্পর্শকাতর লক্ষ্যবস্তুর ফুটেজ প্রকাশ করল হিজবুল্লাহ