গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই
১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িত ৭৪৭ জন পুলিশকে শনাক্ত করা হয়েছে। চিহ্নিতদের মধ্যে কনস্টেবল থেকে শুরু করে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন। আর এসব পুলিশ সদস্যদের আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে দমাতে গুলির নির্দেশদাতা শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার নামও উঠে এসেছে। এদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিসি) থেকে শুরু করে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের গ্রেফতারে কোন উদ্যোগ নেই। যা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের সময়, পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী গুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩৫৭ পুলিশ সদস্যই প্রায় ৮ হাজার গুলি ছুড়েছেন, যার ফলে অনেক বিক্ষোভকারী নিহত এবং আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আহ্বান করা হয়েছিল। তালিকার মধ্যে ৭৪৭ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ৪৬৭ জন কনস্টেবল, ১০৬ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ১৫৭ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), দুইজন পরিদর্শক এবং একজন এএসপি রয়েছেন। অন্য সদস্যরা পুলিশ বিভাগের অন্যান্য পদমর্যাদার। পুলিশ আন্দোলন দমাতে ২৬ হাজার ২৩টি গুলি ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে ১৬ হাজার ৯১২টি প্রাণঘাতী ছিল। অধিকাংশ গুলির ঘটনায় ‘এইম ফায়ার’ বা লক্ষ্যবস্তু করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার, আর কতজন পলাতক বা আত্মগোপনে আছেন তা তদন্ত করে জানাতে বলা হয়েছে। দেশ থেকে পলাতক হলে সেটাও ট্রাইব্যুনালকে জানাতে হবে। সে অনুযায়ী পলাতকদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে পুলিশ। এ জন্য যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
গণহত্যায় জড়িত ও বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত এবং তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে। এগুলো প্রতিপালন সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় পলাতক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশ সদর দফতর সক্রিয় রয়েছে।
সূত্র জানায়, গণহত্যায় জড়িত ও অভিযুক্ত পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা দেশে আত্মগোপনে আছেন তাদের গ্রেফতারের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পুলিশ সদর দফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যে সব অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বিদেশে পালিয়ে গেছেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রেফতার হননি কিন্তু পলাতক অথবা আত্মগোপনে আছেন, তাদের গ্রেফতারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকায় যারা দেশ থেকে পলাতক, তাদের ফেরাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণে ২০১৩ সালে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ভারতে আশ্রয় নেয়া পলাতক আসামিদের প্রত্যর্পণের জন্য ঢাকা ২০১৩ সালের চুক্তি অনুসরণ করবে। চুক্তিটি ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, ট্রাইব্যুনালের পাঠানো তালিকা মোতাবেক পলাতকদের বিষয়টি নিশ্চিতে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে যে, কারা দেশে আর কারা বিদেশে পলাতক। সে অনুযায়ী ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হচ্ছে। এর আগে তাদের অবস্থান এবং অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী অভিযোগগুলো নথিভুক্ত করে প্রস্তুত করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, ১৮ নভেম্বরের আগেই আমরা তাদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগটা গ্রহণ করতে পারব।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সরকারির চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ আজ
২ মার্চ 'জাতীয় পতাকা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান : ড. আব্দুল মঈন খান
সাংবাদিক নূরুল কবিরকে হয়রানি, তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
রাজধানীতে আজও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ
"বহুল সমালোচিত ডা. সাবরিনা এবার নাম লেখালেন অভিনয়ে"
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবারো সড়ক অবরোধ
৩৭ বছর পর চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে প্রকাশ্যে ছাত্রশিবির
ঘোড়াঘাটে যৌথবাহিনীর অভিযানে যুবক আটক, পিস্তল ও গুলি উদ্ধার
বাঘ শিকারী ও রোলস রয়েস চালানো ভারতীয় মুসলিম রাজকন্যা আবিদা সুলতানা
মিরপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৭, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি
ট্রাম্পের সহায়তায় পুরো পশ্চিম তীর দখলের প্রত্যাশা ইসরায়েলের
মানিকগঞ্জে তেলের অবৈধ পাম্পে আগুন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
পঞ্চগড়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ মা-ছেলে আটক
"অন্তবর্তী সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি এবং প্রশ্নের ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে আসিফ আকবরের ফেসবুক পোস্ট"
অবশেষে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী ‘হীমনীড়’এর ‘পদ্মপুকুর’ থেকে শ্বেতপদ্ম বিনাশের ঘটনায় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করল
কাজে এলো না ‘বাংলাদেশি’ ইস্যু, ঝাড়খণ্ডে বিজেপির ভরাডুবি
কপ২৯-সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি
সভাপতি মাসুদ পারভেজ সম্পাদক মানিক খান
ছক্কা হাঁকিয়ে জয়সোয়ালের সেঞ্চুরি
পশ্চিমবঙ্গে উপনির্বাচন : ৬ আসনেই মমতার হাসি, বিজেপির ভরাডুবি