নির্বাচনী রোডম্যাপ পেয়ে যাবেন
১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
নির্বাচনের ট্রেনযাত্রা শুরু করেছে জানিয়ে আন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা (দেশবাসী) নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন। নির্বাচনের ট্রেনযাত্রা শুরু করেছে, এটি আর থামবে না। সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুযোগ কতটুকু পাবো জানি না। তবে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করা হবে। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়া হবে। গতকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার আক্রোশের শিকার হয়ে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক জনতা শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছে ১৯ হাজার ৯৩১ জন। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি। বিচারের প্রয়োজনেই পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।
জাতির উদ্দেশে দেয়া এটি ড. ইউনূসের তৃতীয় ভাষণ। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর আরো দুবার তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, দৈনন্দিন রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যতের বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথাও ভাবতে হচ্ছে। আমাদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মতামত নিয়ে যাচ্ছি। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে এসব মতামত অনেকাংশে প্রতিফলিত হচ্ছে। চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাদের প্রতিটি মতামত সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ে, ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যেই সংস্কার কমিশনগুলো তাদের সুপারিশমালা সরকারের কাছে পেশ করতে পারবে। তাদের সুপারিশ নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ক্রমাগতভাবে আলোচনায় বসব। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতেই আমরা সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করব।
নির্বাচন কবে হবেÑ এই প্রশ্ন আপনাদের সবার মনেই আছে। নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। তারপর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব তাদের উপর বর্তাবে। প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে লক্ষ্যেও সরকার কাজ করছে।
তবে আমরা মনে করি না যে, একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিলেই নির্বাচন আয়োজনে আমাদের দায়িত্ব শেষ। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার আমাদের এই সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। যে ছয়টি সংস্কার কমিশন আমরা শুরুতে গঠন করেছিলাম তারা ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে।
প্রথম ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে একটি হলো নির্বাচন সংস্কার কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই কমিশনের সুপারিশমালা অত্যন্ত জরুরি। তাদের প্ল্যাটফর্মে যান। আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে তুলে ধরুন। নির্বাচন নিয়ে আপনাদের সব বক্তব্য বিনাদ্বিধায় বলতে থাকুন। সবার মনের কথা তুলে ধরুন। আমার অনুরোধ সংস্কারের কথাটাও একই সঙ্গে বলুন। সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে যাবেন না। নির্বাচনের কথা বলার সঙ্গে নির্বাচন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের কথাটিও বলুন। সংস্কার হলো জাতির দীর্ঘমেয়াদি জীবনীশক্তি। সংস্কার জাতিকে বিশেষ করে আমাদের তরুণ-তরুণীদের নতুন পৃথিবী সৃষ্টির সুযোগ দেবে। জাতিকে বঞ্চিত করবেন না।
নির্বাচন আয়োজনে যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালায় রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশের সব মানুষের মতামত অপরিহার্য সে কমিশন হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। এই সুপারিশমালার কোন অংশ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করতে হবে। সমান্তরালভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
আমি নিশ্চিত নই, সংস্কার প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের সুযোগ আমরা কতটুকু পাব। তবে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার কাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাক্সিক্ষত নির্বাচন আয়োজন করব। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ট্রেনযাত্রা শুরু করেছে। যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলো কাজ সেরে ফেলতে হবে। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটি নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা তার জন্য রেল লাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি, আর তা হবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে আলাপ চলতে থাকবে। নির্বাচন ছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার ব্যাপারে ঐকমত্য গঠনের জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতে পারে। নির্বাচনের আয়োজন চলাকালীন কিছু সংস্কার হতে পারে। সংস্কারের জন্য নির্বাচনকে কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে।
অর্থনীতি সেক্টরে সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, ১০০ দিন আগে আর্থিক দিক ছিল লণ্ডভণ্ড। দেশের অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। এই রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন উন্নতির পথে। গত তিন মাসে রিজার্ভে কোনো রকম হাত না দিয়েই আমরা প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পেরেছি। জ্বালানি তেল আমদানিতে পুঞ্জীভূত বকেয়ার পরিমাণ ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে আনতে পেরেছি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ইতোমধ্যে ঋণ ও অনুদান হিসেবে প্রায় আট বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আমাদের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল করতে সক্ষম হবে। পতিত সরকার যে ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রেখে গেছে তাতে রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। জুলাইয়ের নেতিবাচক অবস্থা থেকে অক্টোবর নাগাদ রাজস্ব আদায়ে পৌনে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে আমি এখন অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে উৎসাহিত করছি। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএনডিপি ইত্যাদির প্রধানদের সঙ্গেও আমার দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। তারাও বাংলাদেশকে নতুনভাবে এবং সর্বাত্মকভাবে সাহায্যের জন্য তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
বিচার বিভাগের চিত্র তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে সংগঠিত অন্যান্য অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় সহস্রাধিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টে ইতোমধ্যে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ২৩ জন নতুন বিচারক। বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য সম্ভব সব ধরনের চেষ্টাই করা হচ্ছে। বিচারপতিদের নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করা হয়েছে। সর্বগ্রাসী দুর্নীতির হাত থেকে দেশের সব খাতকেই রক্ষা করতে আমরা সচেষ্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন পুনর্গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে অভিযুক্ত প্রভাবশালী ১৫০ ব্যক্তির তালিকা তৈরি এবং ৭৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ, অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার বিধান বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকারি কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বিভিন্ন পর্যায়ের ১৯ হাজার ৮৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি, ১৩ হাজার ৪২৯ জনকে বদলি এবং ১২ হাজার ৬৩৬ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। কুখ্যাত সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই আইনের অধীনে হওয়া সেসব মামলা মানুষের মত প্রকাশের অধিকারের সাথে সম্পর্কিত সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়াও ১৩৩টি আইন, বিধিবিধান তৈরি ও সংশোধন করা হয়েছে এবং ৩৫৩টি গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এমনকি ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মেনে ইতোমধ্যে সরকারি চাকরির বয়স সীমা ৩২-এ উন্নীত করা হয়েছে। তিনি বলেন, কেবল জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডই নয়, আমরা গত ১৫ বছরে সব অপকর্মের বিচার করব। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছে, খুন হয়েছে এই সময়ে। আমরা গুমের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছি। কমিশন প্রধান আমাকে জানিয়েছেন, অক্টোবর পর্যন্ত তারা এক হাজার ৬০০ গুমের তথ্য পেয়েছেন। তাদের ধারণা এই সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যাবে। গুম কমিশনের সদস্যদের কাছে ভুক্তভোগীদের যে বিবরণ আমরা পেয়েছি তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। জুলাই-আগেস্টের বিপ্লবের পর ছাত্র-ছাত্রীরা শহর বন্দরের দেয়ালে দেয়ালে তাদের মনের কথা লিখেছে। গুমের সঙ্গে জড়িতদের আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবই। গুম, খুন ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সাথে জড়িতদের আমরা আন্তর্জাতিক আদালতেও বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের প্রধান কৌশলী করিম খানের সঙ্গে আমার এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথা হয়েছে। গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছি। জাতিসংঘ জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তারা আমাদেরকে তাদের রিপোর্ট হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, বন্যা-পরবর্তী সময়ে বাজারে শাক-সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারে সে জন্য রাজধানীসহ বিভিন্ন স্পটে সরকারি কিছু পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি নিম্ন আয়ের ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও দাম যাতে স্বাভাবিক থাকে এ জন্য সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে কোনো লুকোছাপা নেই। মূল্যস্ফীতির পূর্ণ তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, সামান্য হলেও জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হয়েছে। শিল্প কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যাতে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যাহত না হয় এবং রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। গণশুনানি ছাড়া নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম না বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বৃহৎ রফতানি পণ্য গার্মেন্টস শিল্পে গত কিছু দিন ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী বেশ কিছু গার্মেন্টস মালিক পালিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শ্রমিকরা তাদের দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে এবং অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতে রাস্তায় নেমে আসে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ১৮ দফার একটি ব্যাপকভিত্তিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই আমরা শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন করতে পেরেছি।
ড. ইউনূস বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও দেশে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তরুণদের কর্মসংস্থানের মূলে রয়েছে বেসরকারি খাত। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান দুই শতাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীর সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ নিরসনে আমরা অনেকগুলো কাজ করেছি। ইতোমধ্যে সত্যিকারের ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হয়েছে, বিনিয়োগ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ সমাধানে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন হয়েছে। বেসরকারি খাতের উপদেষ্টা কাউন্সিল ও ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সরকারি অফিসে না এসে প্রয়োজনীয় কর্ম সম্পাদনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা আমাদের অগ্রগতির বিষয়ে সবাইকে মাসিক ভিত্তিতে আপডেট করে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরশাসনে বিপর্যস্ত এই দেশকে আমাদের সবাইকে মিলে পুনর্গঠন করতে হচ্ছে। জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের পর আমরা এমন একটি দেশ হাতে পেয়েছি যার সর্বত্র ছিল বিশৃঙ্খলা। স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিপ্লব চলাকালে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক জনতার শহীদী মৃত্যু হয়। প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, তার কাজও বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়
‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ