গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করতে চাই না -সিইসি এ এস এম নাসির উদ্দীন
২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এস এম নাসির উদ্দীন। একতরফা বা গায়ের জোরে নির্বাচন আমরা চাই না বলে তিনি।
গতকাল রোববার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেয়ার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নিয়ত সহিহ। আমরা জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে যা করা দরকার, তাই করব। নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও ৪ নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নিয়েছেন।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‹আমাদের সব প্রচেষ্টা নিবেদিত থাকবে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা যেন দেশের সব ভোটার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।›আমরা একতরফা নির্বাচনে বিশ্বাস করি না। একতরফা করে দেশের বারোটা বেজে গেছে। গায়ের জোরে নির্বাচন করে যা হওয়ার তা হয়েছে। আমরা একতরফা বা গায়ের জোরে নির্বাচন দেখতে চাই না। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য আমরা একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেবো,› যোগ করেন তিনি। আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‹আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে শতভাগ ফেয়ার নির্বাচনের। আগে ডামি নির্বাচন হয়েছে, ১৫৩ জন বিনা ভোটে এমপি হয়েছেন। আমাদের আগমন এগুলো মোকাবিলা করতেই। নির্বাচন সংস্কার কমিশন বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছেন। অনেকেই আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইন প্রণয়ন এবং অন্যান্য বিষয়ে কথা বলছেন। এগুলোর সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে। নির্বাচন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ শেষ হলেই আমরা পরবর্তী নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনা করব।
পর সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এর আগে শপথ নিতে দুপুরের দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আসেন সিইসিসহ চার নির্বাচন কমিশনার। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রথমে নতুন সিইসিকে শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি। এরপর শপথ নেন চার নির্বাচন কমিশনার। নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহ্মদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ওইদিন ইসি গঠনে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান (সিইসি) করে গঠন করা হয় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে ইসি গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন,হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান (পিএসসি) মোবাশ্বের মোনেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম। পরে ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা দেওয়া হয়। গত ২১ নভেম্বর ওই তালিকা থেকে ৫ জনকে নিয়ে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়।
এদিরেক নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন দায়িত্ব নেয়ার পরে বলেছেন, আমরা গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করতে চাই না। সংস্কার শেষে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। গতকাল নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, আগে একতরফা নির্বাচন করে দেশের ১২টা বাজিয়েছে একটি সরকার। আমরা গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করতে চাই না। সামনে হয়তো অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ আসবে। আমরা এটাকে সুযোগ হিসেবে দেখছি। আমি একটা সুন্দর টিম পেয়েছি। আমাদের দেখতে বুড়া মনে হলেও মনের দিক থেকে অনেক তরুণ। আশা করি সফল হবো। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় প্রত্যাশা পূরণে আমরা কাজ করবো। সর্বশক্তি দিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবো। আমার জীবনে কোনো ব্যর্থতা নেই। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অনেক কঠিন কাজ করেছি। কোনো ব্যর্থতা নেই। মানুষ এখন ভোটের নাম শুনলে নাক ছিটকায়। কারণ তারা ভোটে দিতে পারেনি। আপনারা (গণমাধ্যম) লিখেছেন। এখানে ভোটারদের আগ্রহ বাড়াতে বা খাস নিয়তে যে কাজ, সেটা জানাতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। আমরা খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবো। কিন্তু ভালো কাজগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। ফলে আমরা উৎসাহিত হবো, কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। নির্বাচন কখন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্থার কমিশনের কাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার হওয়ার পর নির্বাচন হবে। কেননা বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার প্রস্তাব আসছে। কেউ বলছেন সংসদের আসন ৪০০ করার কথা। কেউ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাচ্ছে। কাজেই কোন পদ্ধতিতে কীভাবে নির্বাচন হবে সেই সংস্কার হলেই না সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। আওয়ামী লীগসহ সমমনা দলগুলোর নির্বাচন নিয়ে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গণে যে বিতর্ক চলছে আওয়ামী লীগ নিয়ে তা আগে নিরসন হোক। আমরা তারপর সিদ্ধান্ত নেবো। এ সময় নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, তহমিদা আহমদ, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব শফিউল আজিম উপস্থিত ছিলেন।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত
কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা
হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন
শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত
পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন
মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন
ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা
বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা
কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ
হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার
ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশে আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি
বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান
সাগরে মিলছে না আশানুরূপ ইলিশ হতাশায় মীরসরাইয়ের জেলেরা