অক্টোবরে যাত্রা শুরু হচ্ছে এমআরটি পুলিশের
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পিএম | আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পিএম
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে বিশেষ পুলিশ ইউনিট। মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করেন পুলিশের এই বিশেষ ইউনিট।
দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তার জন্য অক্টোবর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন এমআরটি পুলিশ সদস্যরা। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ট্রেনিং সেন্টার এবং উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিএমপি পুলিশ লাইন্সে মৌলিক প্রশিক্ষণ চলছে। এই প্রশিক্ষণের আওতায় প্রতি ব্যাচে ৪০ জন যুক্ত থাকছেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রোরেলের সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে এমআরটি পুলিশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার বিষয় সামনে রেখে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হচ্ছে। নিরাপত্তা তল্লাশির যেসব ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন তা এমআরটি প্রকল্পে ধরা হয়নি। যদি প্রয়োজন অনুভব হয় বা দরকার হয় তাহলে সরকারকে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হবে। কোনও ধরনের হুমকি না থাকলে স্ক্যানার কিংবা আর্চওয়ের মতো ব্যবস্থা রাখার প্রয়োজন দেখছে না কর্তৃপক্ষ। এসব যন্ত্রপাতি যাত্রীদের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাবে বলেও মনে করছেন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বর্তমানে সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে যে কেউ যেকোনও ধরনের ব্যাগ কিংবা বস্তু নিয়ে টিকিট কেটে কোনও ধরনের নিরাপত্তা তল্লাশি ছাড়াই মেট্রোরেলে ভ্রমণ করছেন। কারও ব্যাগে কোনও ধরনের দাহ্য পদার্থ কিংবা বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য রয়েছে কিনা তা শনাক্তের জন্য নেই কোনও যন্ত্রপাতি।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল আগারগাঁও থেকে উত্তরগামী মেট্রোরেল কাজীপাড়া স্টেশনে প্রবেশের আগ মুহূর্তে পাশ ঢিল ছুড়ে মেট্রোরেলের কাচ ভাঙা হয়। এমন ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই ঘটনার পরও মেট্রোরেলের ভেতরে-বাইরে নিরাপত্তা বাড়ানোর কোনও দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি।
এমআরটি পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথমে ২৩১ জনের জনবলের অনুমোদন পাওয়া যায়। এই জনবল আরও বাড়ানো হচ্ছে অক্টোবরর শুরুর আগেই। তবে এই জনবল দিয়ে মেট্রোরেলের যাত্রীদের নিরাপত্তা, লাইনের নিরাপত্তা, স্টেশনের নিরাপত্তা দেয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পুরোদমে চালু হলে ১৭টি স্টেশনে নিরাপত্তা দেখভাল করতে হবে।
এমআরটি পুলিশের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয় উত্তরার দিয়াবাড়িতে করার বিষয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পুলিশের ব্যারাক বা থাকার বিষয়েও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেহেতু এটি একটি নতুন ইউনিট, নিজস্ব পোশাক নিয়েও আলোচনা চলছে। এছাড়া এমআরটি পুলিশের বিধিমালা প্রস্তুত হলে তখন বোঝা যাবে নিরাপত্তার দায়িত্বের পাশাপাশি মামলা তদন্ত করার এখতিয়ারের বিষয়গুলো।
এমআরটি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশন জাতীয় সম্পদ ও কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা)-এর অন্তর্ভুক্ত। সেই সঙ্গে অত্যাধুনিক একটি গণপরিবহন। যাত্রী নিরাপত্তা ও স্টেশনের নিরাপত্তা এসব বিষয়ে মনিটরিংয়ের জন্য প্রতিটি স্টেশনে এমআরটি পুলিশের একটি কক্ষ থাকবে। যেখান থেকে প্রতিটি স্টেশনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা এক একটি স্টেশনে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করতে পারবেন।
কেন্দ্রীয়ভাবে সিসিটিভি মনিটরিং থাকবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি স্টেশনে যত সিসিটিভি রয়েছে তা মনিটরিংয়ের জন্যও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সিসিটিভি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি স্টেশনের নিরাপত্তার বিষয় বা কোনও ধরনের অসামঞ্জস্যতা দেখতে পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে প্রতিটি স্টেশনে স্থানীয় থানা পুলিশ, রিজার্ভ পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। এমআরটি পুলিশ দায়িত্ব নিলে সেগুলো চলমান থাকবে কিনা সেসব বিষয়েও আলোচনা চলছে।
এমআরটি পুলিশের জন্য প্রাথমিকভাবে একটি পাজেরো গাড়ি, ১০টি মোটরসাইকেল এবং পাঁচটি ডাবল পিকআপ গাড়ির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে এমআরটি পুলিশের প্রধান ডিআইজি জিহাদুল কবির বলেন, যাত্রী নিরাপত্তা স্টেশনে নিরাপত্তা এবং মেট্রো লাইনের নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এমআরটি পুলিশ আগামী অক্টোবরের মাসের মধ্যে কাজ শুরু করবে। অক্টোবর মাসের যেকোন সময় কাজ শুরু করার লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা।
এমআরটি পুলিশে যারা নিয়োগ পেয়েছে তাদের অত্যাধুনিক বাহন মেট্রোরেলের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রযুক্তিগত দক্ষ কর্মকর্তাদের এই ইউনিটে নিয়োগ দেয়া হবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, এমআরটি পুলিশে যারা মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির বাহনের বিভিন্ন বিষয় এবং নিরাপত্তার বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেয়া হবে। প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ যারা রয়েছে তারা এমআরটিতে নিয়োগ পেলে এসব বিষয় নিয়ে কাজ করতে তাদের সহজ হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চাঁদপুর ডাকাতিয়া নদী থেকে বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
বাংলাদেশ কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ১৮ ই জানুয়ারি শুরু
ভূয়া আসামি দাঁড় করিয়ে জামিনের ঘটনায় ৪ জনের নামে মামলার নির্দেশ
শরীয়তপুরে ওরশ পালনকে কেন্দ্র করে জেলা হেফাজতে ইসলাম ও আয়োজক - ভক্তবৃন্দের মধ্যে উত্তেজনা
কুমিল্লায় ভিন্ন ধর্মের দুই প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ৩৯ বছর
সিএনজি চালিত অটো রিক্সাভর্তী ভারতীয় মদসহ গ্রেপ্তার ৪
বিএমআই নয়, স্থূলতার জন্য চাই নতুন মানদণ্ড ,প্রস্তাব বিশেষজ্ঞদের
শিল্পকলার জমজমাট আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল 'সাধুমেলা'
মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের কাজে যোগ দিতে না দেওয়া ১২০ শ্রমিকদের চাকরী বহাল
হুথি লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন হামলার ফুটেজ প্রকাশ
লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান দাবানলে ৬০ লাখের বেশি মানুষ মারাত্মক ঝুঁকিতে
জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে মৌখিক হস্তান্তর,দুটি হল পরিদর্শন রবিবার
কোটচাঁদপুরে পুলিশের সোর্স হত্যা মামলার আসামি কটাকে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা
শুল্ক বৃদ্ধি প্রমাণ করে সরকার সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে উদাসীন : বাংলাদেশ ন্যাপ
কিশোরগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় দুই রোগীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
কালীগঞ্জের পল্লীতে টমেটো, বেগুন ও সবজিসহ বিভিন্ন গাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা
অধিক গাড়িতে সারচার্জ খড়গ
সীমান্ত থেকে বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডেই বিদায় অলিম্পিক সোনাজয়ীর
সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পতিত স্বৈরাচারের ৯ দোসর নতুন মামলায় গ্রেপ্তার