পরিকল্পিত এই খুনের বিচার হবে কি?
২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম
দুই সহোদর হাফেজ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার বিচার চায় ফরিদপুরের মধুখালীর স্থানীয় জনগণ। তারাই সকলেই সমাবেশ করবেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিচারের দাবিতে ফেঁপে ফুলে উঠছে স্থানীয় আলেম ওলামা ও সাধারণ জনতা।
আজ মধুখালী ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন মসজিদের জুম্মার নামাজ বাদ তৌহিদী জনতা এবং মুসল্লিদের সমন্বয় হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল শেষে পথসভা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচারের কোনো দৃশ্য চোখে পড়ছে না। পরিকল্পিতভাবে দুই সহোদর ভাই হত্যা করা হলেও আসল খুনিরা এখনও রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মধুখালীর গোপেরঘাট বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. আকরাম আলী খান ইনকিলাবকে বলেন, যেহেতু খুনিরা সবাই হিন্দু সীমান্তও খুব কাছে তারা যেন ভারত পালিয়ে যেতে না পারে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেড এলার্ট জারি করার দাবি করছি। মধুখালীবাসী তথা যার খুনিদের বিচার চায় আশঙ্কা করছেন খুনিরা ভারতে পালাতে পারে। তাদের মনে হচ্ছে বিচারের নিশ্চয়তা খুব ক্ষীণ। তাদের আটকের বিষয়টি ও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। উগ্রবাদী হিন্দুদের হাতে দুটি সন্তান খুন। স্বজনরা সারাজীবনের জন্য তাদের সন্তানদের হারানোর ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ছে। সন্তানদের মায়ায় স্বজনরা গুমরে গুমরে কাঁদছেন এখনও। তাদের ব্যথায় ব্যথিত পুরো ফরিদপুরবাসী।
দুই ভাইকে একসাথে পিটিয়ে হিন্দুদের ছেলেরা শেষ করে দিলো। এটা নাকি মুসলমানদের দেশ। এটাই কি বাংলাদেশ? ইনকিলাবকে কথাগুলো বলেছেন ফরিদপুরের একটি মাদরাসা সিনিয়র শিক্ষক মাওলান আমজাদ আলী।
হত্যাকারীদের কঠোর বিচারের দাবিতে কোনো সংগঠন বা রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে থেকে তথা তৌহিদ জনতা ও সাধারণ মুসল্লিদের ডাকে মধুখালী ও ফরিদপুরে জুমার নামাজ বাদ আজকের এ শান্তি সমাবেশ হবে বলে জানা গেছে। তবে কোথায় হবে? কার নেতৃত্বে হবে, এরকম নির্ভরযোগ্য কোনো ব্যক্তির নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মাগুরা বায়নার মোড় এলাকা থেকে আগত স্থানীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ আলী হায়দার ইনকিলাবকে বলেন, দুই কোরআনের হাফেজ সন্তান হিন্দুদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছে এই বিচার চাওয়া একটি ঈমানি দায়িত্ব। এখানে কারোর নেতৃত্ব বা শক্তির প্রয়োজন নেই। আমরা মুসলমান আমাদের সন্তান পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের ছেলেরা পিটিয়ে খুঁচিয়ে থেতলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করছে। আমরা নিজ নিজ দায়িত্ব নিয়ে রাজপথে নামবো। ডুমাইন পঞ্চপল্লী এলাকা চোপড়া ঘাট ও গোপের ঘাট এলাকার মুসলমানদের শ্রেণির মানুষের মুখে একটাই কথা স্বাধীন দেশে আমরাই যাযাবর।
ফরিদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুরব্বি প্রফেসর এম এ সামাদ ইনকিলাবকে বলেন, ৯০% মুসলমানের এই বাংলাদেশে। সেখানে আজ হিন্দুদের হাতে মুসলমানদের মরতে হচ্ছে। হাফেজ দুটি ভাইকে এভাবে মরতে হলো? সত্যি এটি দুঃখজনক একটা ঘটনা।
তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তি চাই। আর যেন কোনো মায়ের সন্তানের লাশ দেখতে না হয়। সে হিন্দু হোক বা মুসলিম। কেন এ লাশ? কেন এ হিন্দুবাদী উগ্রতা? এত শক্তির উৎস কি? হিন্দুরাম এতো শক্তি পেল কোথায়? এর কারণ খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে হিন্দুদের একনায়কতন্ত্রের রহস্য।
মধুখালী-বালিয়াকান্দি দুটি উপজেলা পাশাপাশি এবং মাগুরা উপজেলার শ্রীপুর এলাকাটিও হিন্দুখ্যাত। বালিয়াকান্দির মধুমতী নদীর এপার ওপার সকলের অবস্থান। এ এলাকাগুলোতে হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকদের বসবাস খুব বেশি। মধুখালী ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী ৯টি গ্রামজুড়ে হিন্দুদের বসবাস এখানে ৪/৫ ঘর মাত্র মুসলমান। বাকিরা সবাই হিন্দু।
অপরদিকে, মধুমতী নদীর বিপরীত পাড় মাগুরা শ্রীপুর ও বালিয়াকান্দির ২৩ এলাকা হিন্দুদের বসবাস। তিন উপজেলার ৩২ পাশাপাশি গ্রাম তাদের দখলে। সবাই হিন্দুদের পরিবার। এই এলাকাগুলো প্রথম এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় কলকাতা নামে পরিচিত। তৃতীয়ত দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মধ্য সবচেয়ে বড় কালীপূজা হয় বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের সমাধিনগরে। এখানে প্রতি বছর ১৪ হাত উঁচু করে কালীরমূর্তি বানানো হয়।
অন্যদিকে, সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজা হয় মধুখালী উপজেলার বৈুকুন্ডুপুরে। কয়েক বছর আগে এখানে ১৫১ খÐ মূর্তি বানিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে মধুখালী সেরা হয়েছে তারা। সেই উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী এলাকায় এমন ঘটনায় হতবাক হওয়ার কথা ভাবছেন না কেউ।
স্থানীয় একজন বুট পালিশ ওয়ালা তাপস সেখ ইনকিলাবকে বলেন, এই তিন উপজেলার হিন্দুদের একটা বিশাল জোট। তারা মুসলমানদের গোনায়ই ধরতে চায় না।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল বিকেলে মধুখালীতে সর্বশ্রেনীর মানুষের উপস্থিতিতে সাদা পতাকা হাতে নিয়ে মধুখালী শহরে একটি শান্তি সমাবেশ করা হয়। সকলেই খুনিদের দ্রæত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় এমপি আব্দুর রহমান তিনি মধুখালী ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বর, মসজিদের ঈমাম, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং নির্ভরযোগ্য লোকদের ডেকে উপজেলা হল রুমে উপস্থিত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা মিটিং করে বলেন, আর কোনো সহিংসতা নয়। আমার শান্তিতে থাকি। শান্তি চাই। কোনো ধরনের সভা সমাবেশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
অপরদিকে, খুনিদের আটক এবং বিচারের দাবিতে মধুখালি প্রেসক্লাবের সকল সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সাংবাদিক নেতা ও প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. রেজাউল হক বকু, সম্পাদক কাজল বসু, সিনিয়র সাংবাদিক মো. শাহজাহান হেলাল, অ্যাডভোকেট খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান পলাশ, মো. সামাদ খানসহ বহু সাংবাদিকরা একটি মানববন্ধন করেন। তারা সকলে বক্তব্যে বলছেন, আর কোনো খুন নয়। আমরা সবাই শান্তি চাই, শান্তি চাই, এই হোক মধুখালিবাসীর সকলের সেøাগান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি
ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী
লক্ষ্যটা নাগালেই রাখল বাংলাদেশ
ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন দূরভিসন্ধি রুখে দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই
জনসমর্থন না থাকায় বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকছে: কুষ্টিয়ায় হানিফ
উখিয়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা
ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম প্রত্যাখ্যান করুন
শাহজালালে তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
মুস্তাফিজকে ছাড়াই চেন্নাইয়ের বড় জয়
সুদহার শিগগিরই বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে: গভর্নর
মোদির মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণায় এবার উপজীব্য ভোট জিহাদ, তারপর কী?
‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর শরি‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ৪৪তম সভা অনুষ্ঠিত
দুই দিনে সোনার দাম বাড়ল ১৭৮৫ টাকা
এসআই পদে বয়সসীমা ৩০ করা হোক
ইউরোপীয় রাজনীতিতে শরণার্থী প্রসঙ্গ
হিন্দুত্ববাদের কবলে আমাদের পাঠ্যবই
রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব কী?
দরকারী কাগজে নাপাকি লাগলে কী করণীয় প্রসঙ্গে।
প্রভাবিত হবে ইসরাইলের লোহা ইস্পাত পরিবহন ও ইলেকট্রনিক খাত