আকবর দ্য গ্রেট-১০
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম
আকবরের রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ও বিবেচনাবোধকে আধুনিক ইতিহাস যেভাবে দেখেছে, অন্য কোনো মুঘল সম্রাট সেভাবে মনোযোগ পাননি। তবে অনেকের মতে, তিনি ছিলেন নিরক্ষর। ব্যাপারটা বিস্ময় সৃষ্টি করে। যদিও আকবর বেড়ে উঠেছিলেন চরম অনিরাপত্তা ও অস্থিতিশীলতার মধ্যে, কিন্তু মুঘল আমীর ও রাজকীয় পরিবেশে তার চারধারে ছিলো উন্নত জ্ঞান ও প্রজ্ঞাচর্চাকারীদের সমাবেশ। সেখানে অক্ষরজ্ঞানশূন্য হয়ে তিনি বেড়ে উঠবেন, এটা প্রাথমিক জীবনীকারদের বিবরণে চমকপ্রদ ভাষ্য লাভ করেছে। তবে বাস্তবতা হিসেবে তা বিতর্কিত। মাত্র ১৩ বছরে নিজের কাঁধে সমগ্র শাসনের ভার বহন করেন তিনি। এর মূলে ছিলো জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা। তবে আকবরকে নিরক্ষর হিসেবে উপস্থাপনের একটি কারণ হলো, তার ডাই¯েøক্সিয়া নামক রোগ। রোগের কারণে পড়তে গেলে কখনোই তিনি অক্ষরগুলো ঠাহর করতে পারতেন না। প্রথানুসারে চার বছর চার মাস চার দিন পরে আকবরের বিদ্যারম্ভ হয়েছিলো। মোল্লা আসামুদ্দীন ইব্রাহিম হলেন শিক্ষক, তারপর মোল্লা বায়জিদ, তারপর মাওলানা পীর মুহাম্মদ, তারপর মীর আবদুল লতিফ কাজবিনী। তাদের কাছে পড়ালেখা তেমন এগোয়নি। পুস্তকের পৃষ্ঠায় নজর পড়লেই তাঁর মুখভাব বিবর্ণ হয়ে যেত। প্রাচীনকালে যখন লিপি আবিষ্কার হয়নি, তখন জ্ঞানীরা জ্ঞানী হতেন শ্রুতির সাহায্যে। কান দিয়ে পড়তেন তারা। সেজন্য সংস্কৃতে জ্ঞান শব্দের অর্থ শ্রুত এবং আজও বড় জ্ঞানীদের বলা হয় বহুশ্রুত। আকবর বহুশ্রুত ছিলেন। তার স্মৃতিশক্তি ছিলো অতুলনীয়। দেওয়ানে হাফিজ বা মসনবিয়ে রুমীর পৃষ্ঠাগুলো পড়তে না পারলেও কবিতার পর কবিতা মুখস্ত বলে যেতে পারতেন।
আকবর শিক্ষিত ও জ্ঞানী-গুণীদের সমাদর করতেন খুব। তার সভাকে অলংকৃত করেছিলেন ইতিহাস বিখ্যাত নবরতœ। তার রাজসভার সোনাদানা, হীরা মাণিকের চেয়ে গুণীর কদর ছিলো বেশি। তার নবরতেœর তালিকায় ছিলেন হিন্দু-মুসলিম পÐিতক‚ল, যাদের অন্যতম হলেন বীরবল, তানসেন, টোডরমল, আবুল ফযল, রাজা মানসিংহ, আবদুল রহিম খান ই খানান, ভগবান দাস, রাজা বিহারীমল। রাজকার্যে তিনি তার সভাসদ, মন্ত্রী ও উচ্চ রাজকর্মচারীদের মতামত গ্রহণ করতেন। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কতকগুলো বিভাগের মাধ্যমে তিনি শাসন কার্যকর করতেন। সুবিশাল ভারতকে শাসন করার জন্য আকবর তার সাম্রাজ্যকে ১৫৮২ খ্রি. ১৫টি সুবা বা প্রদেশে বিভক্ত করেন এবং সুবার শাসক হিসেবে ১ জন সুবাদার নিয়োগ দেন। সুবাগুলো হচ্ছে ১) দিল্লি, (২) আগ্রা, (৩) আজমির, (৪) বাংলা, (৫) বিহার, (৬) এলাহাবাদ, (৭) অযোধ্যা, (৮) মুলতান, (৯) লাহোর, (১০) কাবুল, (১১) গুজরাট, (১২) মালব, (১৩) খান্দেশ, (১৪) বেরার ও (১৫) আহমেদনগর। সুবাদার ছাড়াও প্রদেশের শাসনকর্মে দিওয়ান, আমিল, ফৌজদার, কাজি ইত্যাদি পদের রাজকর্মচারী ছিলেন। শাসনের সুবিধার জন্য প্রত্যেক সুবাকে কতগুলো সরকার ও প্রত্যেক সরকারকে কতগুলো পরগনায় বিভক্ত করে তার সরকার।
রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারে আকবরের পথপ্রদর্শক ছিলেন শেরশাহ। মোজাফফর খান তুরবতী ও রাজা টোডরমল রাজস্ব ব্যবস্থার উন্নয়নে তার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। আকবরের প্রশাসন ‘ইলাহীগঞ্জ’ নামক রাশের চেইন ব্যবহার করে আবাদযোগ্য জমির সঠিক পরিমাপ করে। জমিকে উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী পোলাজ, পারউতি, চাচর ও বন্জর এই চারভাগে বিভক্ত করে। রাজস্ব হিসেবে ফসলের এক তৃতীয়াংশ রাষ্ট্র আদায় করত। এই ব্যবস্থা রায়তোয়ারি ব্যবস্থা বা ‘যাবতি’ পদ্ধতি নামেও পরিচিত। রাজস্বের উৎস হিসেবে ভ‚মি রাজস্বের উপর নির্ভরতা কমানো হয়। বাণিজ্য শুল্ক, টাকশাল, হাদিয়া-তুহফা ইত্যাদি থেকেও রাজস্ব আয় হতো।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মার্সেল ফ্রিজ কিনে গাড়ি পেলেন ঢাকার আনিসুর রহমান
বিএনপি ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যম হবে মুক্ত বিহঙ্গের মতো : খোকন
শহীদদের রক্তের সঙ্গে যাতে বেঈমানি না হয়, সুষ্ঠু নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা থাকবে : নতুন সিইসি
খালেদা জিয়াকে ১২ বছর সেনাবাহিনী থেকে দূরে রাখা হয়েছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা বিশ্বাস ফিরে আনতে হবে -আল-কাউসার পরিষদ বাংলাদেশ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কুশল বিনিময়
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি
শিখ নেতা হত্যা, মোদীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ কানাডার
দলীয় ভিত্তিতে প্রশাসন সাজিয়ে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না: এ এম এম বাহাউদ্দীন
আদানির সঙ্গে জড়িত মোদিও: রাহুল গান্ধী
আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ২৫ নভেম্বর ঢাকায় আসছেন
সোহেল-টুকু-হেলালসহ খালাস পেলেন বিএনপির ২২ নেতাকর্মী
ইরানে উদ্ভাবনে নারীদের অবদান ২৪ শতাংশের বেশি
প্রকাশায় ৯৩ শতাংশ নকল করেও পদোন্নতি পান রাবি অধ্যাপক সাহাল উদ্দিন
বোরহানউদ্দিনে নিখোঁজের দুই ঘন্টা পর লেবু বাগানে মিললো শিশুর লাশ
নাবালক ছাত্রের সঙ্গে জবরদস্তি যৌন সঙ্গম, ৩০ বছরের জেল শিক্ষিকার
সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ
মার্কিন সংসদের নারী শৌচাগার ব্যবহার করতে পারবেন না রূপান্তরকামী এমপি
বাগেরহাটে হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন জিওসি