সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-৫
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ এএম
প্রকৃতির প্রতি নিমগ্ন মুগ্ধতা ছিল জাহাঙ্গীরের। প্রাণীদের বিপুল সমাগম ঘটিয়েছিলেন নিজের অভয়ারণ্যে। বিরল প্রাণীদের সংরক্ষণ ও সংগ্রহে তার আগ্রহের ব্যাপারটি উপমহাদেশের বাইরেও ছিল সুবিদিত। ১৬১৯ সালে ইরানের শাহ আব্বাস তাকে উপহার হিসেবে পাঠান একটি বার্বারিয়ান ফ্যালকন। বিনিময়ে ইরানের শাহকে তিনি উপহার দেন একটি জেব্রা, যা তার কাছে ইথিউপিয়া থেকে মীর জাফর নামে এক ব্যবসায়ী উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন। জেব্রাটিকে নিয়ে মুঘল শিল্পীদের চিত্রকর্মগুলো অনন্য। বার্বারিয়ান ফ্যালকনের চিত্রকর্মও অসাধারণ। পাখিটির প্রতি জাহাঙ্গীরের মমতা প্রেমে পরিণত হয়েছিল। সে মারা গেলে তার অবিকল ছবি আঁকার আদেশে দেন তিনি, যেন তার স্মৃতি রক্ষা করতে পারেন। পাঞ্জাবের শেখপুর জেলার বিখ্যাত হরিণ-মিনার জাহাঙ্গীরের প্রিয় হরিণ হংসরাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল। বেশির ভাগ শিকার যাত্রায় নিজের পালিত চিতার পাশাপাশি এই হরিণ তার সঙ্গে থাকত। হরিণটির সম্মানে জাহাঙ্গীর এই এলাকার অ্যান্টিলোপ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
জাহাঙ্গীর কেবল প্রাণীদের প্রতি আগ্রহী ছিলেন, তা নয়, নিবিড়ভাবে তিনি তাদের শরীর, মন ও আচরণকে অধ্যয়ন করেন। তুজুক-ই জাহাঙ্গীরিতে আছে তার সংগৃহীত বিভিন্ন পাখি ও প্রাণী-অধ্যয়নের নিবিড় বিবরণ।
উপমহাদেশে বিরল টার্কি পাখি। ১৬১২ সালে সম্ভবত গোয়া থেকে জাহাঙ্গীর একটি টার্কি সংগ্রহ করেন। তার ছবি আঁকা হয় রাজকীয় স্টুডিওতে। প্রাণীটির বিবরণে জাহাঙ্গীর লিখেন : ‘১৬ তারিখে আমার প্রধান খাদেম মুকররব খাঁকে আদেশ দিলাম যে, সে গোয়ার বন্দরে গিয়ে সেখান থেকে কিছু দুর্লভ বস্তু নিয়ে আসুক। আমার আদেশানুসারে সে ফিরিঙ্গিদের থেকে নামমাত্র দামে কয়েকটি দুর্লভ বস্তু খরিদ করে নিয়ে এলো। এই বস্তুগুলোর মধ্যে কিছু পশুও ছিল, যা বড়ই বিচিত্র ও আশ্চর্যজনক। আমি তাদের কখনোই দেখিনি এবং নামও জানতাম না। এদের মধ্যে একটি জীবের শরীর মুরগির চেয়ে বড় এবং ময়ূরের চেয়ে ছোট। এ যখন গরম হয় তখন ময়ূরের মতো পেখম ছড়িয়ে নাচে। এর মাথা, ঘাড় এবং গলার নিচের অংশ প্রতি পলে পলে রং বদলাতে থাকে। গরম হলে এই অংশটি লাল হয়ে ওঠে, যেন লাল মুরগি। কিছুক্ষণ পর এই লালিমা শ্বেতবর্ণ ধারণ করে, তারপর নীলাভ। এটি গিরগিটির মতো বারবার রঙ বদলায়। এর ঠোঁট এবং পা মুরগির মতো হয়। আর মাথা মুরগির মতো সরু হয়। তবে যখন সে গরম হয়ে যায় তখন মুরগির মতো মাথাটি হাতির শুঁড়ের মতো ঝুলে পড়ে এবং সেটা উঠিয়ে নিলে গÐারের শিঙের মতো লাগে। তার চোখের চারিদিকে নীল বেষ্টনী থাকে, যেটার রঙ বদলায় না। তার পাখনা বিভিন্ন রঙের হওয়া সত্তে¡ও ময়ূরের পাখনার থেকে আলাদা।’
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১৪ ফিলিস্তিনি
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ