অনেক দুয়ার খুলে দেয়া এক জয়
০৮ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম
শেষ বলে প্রয়োজন ৫ রান। হারিস রউফের ফুল টস ডেলিভারি মিড অফ ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন নিতিশ কুমার। পিচের পাশেই পড়ে রইলেন হারিস রউফ। তার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে একটানা কিছু বলতে থাকলেন বাবর আজম। পরে সুপার ওভারে যুক্তরাষ্ট্রকে থামাতে পারলেন না মোহাম্মদ আমির। ম্যাচ হেরে বোলারদেরই পুরো দায় দিলেন বাবর। গতপরশু রাতে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে স্মরণীয় এক জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র।
পাকিস্তানের বিপক্ষে মূল ম্যাচ টাই করার পর সুপার ওভারে তারা ফল আনে নিজেদের পক্ষে। আগে ব্যাট করে ১৫৯ রানে থামে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ঠিক ১৫৯ রানই করে স্বাগতিকরা। ফল নির্ধারণের জন্য সুপার ওভারে আমিরের বলে একটির বেশি বাউন্ডারি মারতে পারেননি অ্যারন জোন্স, হারমিত সিংরা। কিন্তু এলোমেলো বোলিংয়ে ১৮ রান করে ফেলে তারা। সেটি তাড়ায় ১৩ রানের বেশি নিতে পারেনি পাকিস্তান।
ম্যাচের শুরুতে টপ-অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়ে যায় ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নরা। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে কেবল ৩০ রান করতে পারে তারা। এরপর শাদাব খানের ২৫ বলে ৪০ রানের ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। তার সঙ্গে ৪৮ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়া বাবর করেন ৪৩ বলে ৪৪ রান। শেষ দিকে শাহিন শাহ আফ্রিদির ২৩ রানের সৌজন্যে দেড়শ পার করে তারা। বাবরের মতে, এই পুঁজি নিয়ে মূল ম্যাচেই তাদের জয় পাওয়া উচিত ছিল। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে তাই বোলারদেরই দুষলেন পাকিস্তান অধিনায়ক, ‘দিনের প্রথম ৬ ওভারে উইকেট থেকে সাহায্য পেয়েছে বোলাররা। এরপর আমার মনে হয়নি এটি ভিন্ন উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে আমার মনে হয়েছে যে, আমরাও সাহায্য পেয়েছি। কিন্তু বোলিংয়ের দিক থেকে আমরা সঠিক মানে ছিলাম না। প্রথম দশ ওভারে আমাদের ঘাটতি ছিল। এরপর আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এর আগেই তারা মোমেন্টাম পেয়ে যায়। তবে আমাদের যে মানের বোলার আছে, এই সংগ্রহ ডিফেন্ড করা উচিত ছিল। এই পিচে আমাদের বোলিংয়ের জন্য এটি জেতার মতো স্কোর ছিল।’ পাকিস্তান অধিনায়ক মনে করেন, নিজেদের মানের ধারেকাছেও বোলিং করতে পারেননি হারিস, আমিররা, ‘তারা যেভাবে সুপার ওভারে খেলাটি শেষ করেছে, কৃতিত্ব অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র দলকে দিতে হবে।’
মাঠে পাকিস্তানের মুখোমুখি স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু গ্যালারিতে দাপট পাকিস্তান সমর্থকদের। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু দর্শককে যুক্তরাষ্ট্রের হয়েও গলা ফাটাতে দেখা যায়। তবে প্রতিপক্ষের তুলনায় সেটি খুবই কম। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের সামগ্রিক বাস্তবতাই এমন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হলেও দেশটির মানুষের কাছে এখনও খুব একটা পরিচিত নয় খেলাটি। তবে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে পাওয়া সাফল্য সামনের দিনগুলোতে অনেক সম্ভাবনা বাড়াবে বলে বিশ্বাস যুক্তরাষ্ট্র অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেলের।
কানাডার বিপক্ষে রেকর্ডগড়া জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে সুপার ওভারে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথমবার খেলতে নেমে উপহার দেয় ঐতিহাসিক এক জয়। চলতি বিশ্বকাপে প্রথম অঘটনের জন্ম তাদের হাত ধরেই। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে মোনাঙ্ক বলেছেন, সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এই জয় তাদের জন্য অনেক দুয়ার খুলে দেবে, ‘ম্যাচ জিতে আমি খুশি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলা এবং তাদেরকে হারানো আমাদের দলের জন্য অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স। অবশ্যই আমি বলব যুক্তরাষ্ট্র দল ও ক্রিকেট সম্প্রদায়ের জন্য অনেক বড় দিন। অবশ্যই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানো আমাদের সামনে অনেক দুয়ার উন্মোচন করবে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ আয়োজন করা এবং এখানে দল হিসেবে পারফর্ম করা এই দেশে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।’
পরপর দুই জয়ে সুপার এইটে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখনই সেসব নিয়ে ভাবতে চাইছেন না দলটির অধিনায়ক, ‘আমরা এক সময়ে একটি ম্যাচেই মনোযোগ দিতে চাই। এখন আমাদের পূর্ণ মনোযোগ ভারত ম্যাচের দিকে। আয়ারল্যান্ড ম্যাচ নিয়েও এখন ভাবছি না। সুপার এইট অনেক দূরের বিষয়।’ নিউইয়র্কে আগামী বুধবার ভারতের বিপক্ষে খেলবে স্বাগতিকরা।
পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকদের এমন পারফরম্যান্স মন জয় করে নিয়েছে কেন উইলিয়ামসনের। মুগ্ধ নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক বলেছেন, এসব ম্যাচই ক্রিকেটের সৌন্দর্য। গায়ানা থেকে ভিডিও কলে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, সম্প্রসারিত টুর্নামেন্ট ক্রিকেটের উন্নতির পথে দারুণ এক পদক্ষেপ, ‘এই ধরনের টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা দলগুলোকে কেবল উপকৃতই করবে। টুর্নামেন্টের সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, আর এটাই খেলাটির সৌন্দর্য। তবে এটা ক্রিকেটের উন্নতির জন্য দারুণ কিছু।’
পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচটি গায়ানায় বসে দেখেছেন উইলিয়ামসন। তার মতে, এসব টুর্নামেন্টে সব দলের দারুণ সম্ভাবনা থাকে ভালো করার, ‘দুর্দান্ত একটা ক্রিকেট ম্যাচ ছিল। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা থাকুক বা না থাকুক, এসব টুর্নামেন্টে সব দলেই প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকে। ওই দিন আপনি কেমন খেলেন (ফল) তার ওপর নির্ভর করে।’
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা
মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ
ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান
সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ
দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড
বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই
শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী
নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ
ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে
স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ
বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর
গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন
নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে