আতঙ্ক নিয়ে ছুটিতে বাফুফের কর্মচারীরা
২০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:০৭ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম
আজ বাদে কাল ঈদুল ফিতর (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে )। অফিস-আদালত বন্ধ। ইতোমধ্যে লাখ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পাড়ি জমিয়েছেন। ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই সারাদেশের মতো ঈদের আমেজ বিরাজ করছে ক্রীড়াঙ্গনেও।
রমজান উপলক্ষ্যে এমনিতেই ক্রীড়াঙ্গণ ছিল নিরব। ঈদুল ফিতরের জন্য বেশ কিছুদিন মাঠে গড়াবে না কোনো খেলা। যুব এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এতদিন চলছিল বাংলাদেশ যুব হকি দলের ক্যাম্প। বৃহস্পতিবার থেকে ছুটি পেয়েছেন হকি খেলোয়াড়রা। এদিন বিকালে অনুশীলনের পর শিষ্যদের ঈদের ছুটি দিয়েছেন কোচ মামুন-উর রশিদ। চার দিন ছুটির পর মঙ্গলবার থেকে ফের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেবেন খেলোয়াড়রা। ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে ফুটবলাঙ্গনেও। সপ্তাহে একদিন করে চলছিল বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপের খেলা। ১৮ এপ্রিল তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের ছুটির কারণে ১৩ দিন পর ২ মে থেকে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালের মধ্য দিয়ে ফের মাঠে গড়াবে ফুটবল। যদিও ১৯ এপ্রিল চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের শেষ খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের ছুটির আমেজ চলমান ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল)। ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ লিগের খেলা হয়েছিল। ৫ মে ফের মাঠে গড়াবে বিপিএল।
এদিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগের দায়িত্বকালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে কর্মরত যেসব কর্মচারীরা ফুরফুরে মেজাজে সময় কাটতেন তাদের মধ্যে এখন ভয় কাজ করছে। মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে চাচ্ছেন না। কারণ, ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে হবে তাদের। সেখানে দোষী প্রমাণিত হলে বাফুফেতে যারা যে পদে আছেন, তা স্বেচ্ছায় ছাড়তে হবে নয়তো তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফের শীর্ষ এক কর্তা। বুধবার থেকেই ঈদুল ফিতরের ছুটি দেওয়া হয়েছে বাফুফের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কিন্তু আতঙ্কে থাকা কর্মচারীদের কাছে এবারের ঈদটা যেন অতীতের মতো আনন্দের নয়। তাই ছুটিতে গেলেও চাকরি হারানোর ভয় কাজ করছে তাদের মনে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাল এ তথ্য জানান বেশ কয়েকজন এক্সিকিউটিভ। দরপত্রে অনিয়ম, ফিফা ফান্ডের অপব্যবহারে দায়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহাগ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পর তার অনুসারীরা রয়েছেন অস্বস্তিতে। চাকরি হারানোর আতঙ্ক কাজ করছে সোহাগের আস্থাভাজন এক্সিকিউটিভদের মধ্যে। অন্যদিকে বাফুফে ভবনে সোহাগের বাজে আচরণের শিকার অনেক কর্মকর্তাই এখন রয়েছেন স্বস্তিতে। ২০১৬-১৭ সাল থেকেই বাফুফেতে আর্থিক অনিয়ম হয়ে আসছে বলে জানা গেছে ফিফার ৫১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে। এর সবই অর্থ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। অর্থ বিভাগের চেয়ারম্যান বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। সব ধাপ পার হওয়ার পরই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কাগজপত্র তার কাছে আসে। এরপর যাচাই-বাছাই করে কাগজপত্রে সই করেন সালাম। কিন্তু অজানা কারণে ফিফার প্রতিবেদনে সালাম মুর্শেদীর নাম নেই। মূলত অভিযুক্ত হয়েছেন সোহাগ। বাফুফের প্রশাসনিক কর্মকর্তার প্রধান হিসেবে সবকিছুই দেখভাল করতেন সোহাগ। আর দরপত্র আহ্বান, কেনাবেচার বিষয়গুলো ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। ক্রয়সংক্রান্ত বিভাগ পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ সম্পন্ন করার পরই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা চলে যায় বাফুফের অর্থ বিভাগে। ফিফার তদন্তে গাফিলতিটা এ দুই বিভাগের বিরুদ্ধেই উঠেছে। ফলে ফিফার পর বাফুফে থেকেও আবু নাইম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর এই বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আছেন চাকরি হারানোর শঙ্কায়।
বিভাগ : খেলাধুলা