অযত্ন অবহেলায় ঝিটকা পোদ্দারবাড়ি
০১ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৫৯ পিএম | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে একমাত্র দর্শনীয় স্থান, ঐতিহাসিক নিদর্শন ঝিটকা পোদ্দারবাড়ি। উপজেলার ঐতিহাসিক এই বাড়িটির প্রায় দুইশো বছরের পুরোনো প্রাসাদগুলি পরে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। এতে করে দিনে দিনে বাড়িটির সৌন্দর্য যেন অনেকটাই মিলিয়ে গেছে।
পোদ্দারবাড়ির চতুর্থ পুরুষ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলের বাল্লা ইউনিয়নে তৎকালিন সময়ের ধনাঢ্য পরিবার খ্যাত পোদ্দার বাড়ির মূল কর্ণাধার ছিলেন মহারাজ পোদ্দার। মহারাজ পোদ্দারের ছিল দুই সন্তান। রাম পোদ্দার ও আনন্দ মোহন পোদ্দার। এই আনন্দ মোহন পোদ্দারের ছিল তিন ছেলে। যোগেশ্বর পোদ্দার, সর্বেশ্বর পোদ্দার ও হরমোহন পোদ্দার। বাবার পৈুৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৭ একর জায়গার ওপর উনিশ শতকের গোড়ার দিকে তিন সহোদর মিলেই গড়ে তোলেন দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন স্থাপনা। বর্তমানে এটি ‘ঝিটকা পোদ্দারবাড়ি’ নামে পরিচিতি এবং উপজেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
আনন্দ মোহন পোদ্দার ৭ একর জমির ওপর বাড়িটির দক্ষিণ ও উত্তর পাশে দু’টি বিশাল পুকুর। তবে দক্ষিণ পাশে পুকুরটি গোসলের জন্য তৎকালিন সময়ে দৃষ্টিনন্দন শান বাঁধাই ঘাট নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়াও বাড়িটির পূর্ব পাশে আছে দিগন্ত জোড়া সবুজ শ্যামল ফসলের মাঠ।
বাড়ির আঙ্গিনায় দক্ষিণে পুকুর পাড়ে রয়েছে বিশাল চৌচালা ঘর। ঘরটির চাল টিনের হলেও চারপাশের দেয়াল কাঠের। চারপাশের বারান্দাও কাঠের তৈরি। এই ঘরেই তৎকালিন আমলে বিচার-সালিসের বৈঠক হতো। এর উত্তর পাশে পূর্ব-পশ্চিমে দৃষ্টিনন্দন বিশাল আধা পাকা দু’টি ঘর। ঘরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে লোহার কাঠ। সামনের অংশে রয়েছে নিপুণ হাতের নয়ন জুরানো কারুকাজ। এর পেছনের অংশে অর্থাৎ উত্তর পাশে আছে দক্ষিণ, পশ্চিম ও পূর্বমুখী কারুকার্য খচিত একতলা বিশিষ্ট তিনটি প্রাসাদ। প্রতিটি প্রাসাদে চার থেকে পাঁচটি করে বিশালকায় কক্ষ। এই প্রসাদেই বসবাস করতেন পোদ্দার বাড়ির সদস্যরা। তবে সংস্কারের অভাবে অযুœ অবহেলায় বর্তমানে প্রাসাদগুলো এখন জরাজীর্ণ।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় আনন্দ মোহন পোদ্দারের বংশধরেরা স্বপরিবারে ভারতে চলে গেলেও রাম পোদ্দারের বংশধরেরা এখানেই থেকে যায়। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার আনন্দ মোহন পোদ্দারের বংশধরের ৭ একরের বাড়িটি অধিগ্রহণ করে নেয়। এর ফলে ১৯৬৭ সালে তৎকালিন পাক সরকার বাড়ির দক্ষিণের ঘরটিতে সার্কেল অফিস (রাজস্ব) করে। যা বর্তমানে বাল্লা ইউনিয়নের ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যদিও বছর তিনেক আগে পাশেই ভূমি অফিসের জন্য একতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়, যা এখনও উদ্বোধন করা হয়নি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও বহন করে বাড়িটি। ওই সময় এখানে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প করা হয়। আগস্ট মাস থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, পোদ্দারবাড়ির পরিত্যক্ত যে ভবনগুলো আছে সেগুলো সংস্কারসহ পুরো বাড়িটি নিয়েই আমরা প্ল্যান করেছি। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। অনুমোদনসহ বরাদ্দ পেলেই এই ঐতিহাসিক স্থানটিকে আরও আকর্ষনীয় করে তোলা হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস
লেবাননে এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা ইসরায়েলের
সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাইলেন পঞ্চগড়ের নতুন জেলা প্রশাসক
ইনস্টাগ্রামের মতো ফিচার এবার আসছে হোয়াটসঅ্যাপেও!
যুক্তরাষ্ট্রে কোর্টহাউসে বিচারককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা
তাপপ্রবাহ নিয়ে যা জানা গেল
৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
‘ভারতীয় খাবার জঘন্য’, অস্ট্রেলিয়ান ইউটিউবারের পোস্ট ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে
ট্রাম্পের তথ্য চুরি করে বাইডেন শিবিরে পাঠিয়েছিল ইরান! দাবি গোয়েন্দা সংস্থার
সুনামগঞ্জে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান গ্রেফতার
ইয়ামালের মাইলফলকের রাতে হারের তেতো স্বাদ বার্সার
আর্সেনালের স্বস্তির ড্র,অ্যাটলেটিকোর দারুণ জয়
হেডের বিধংসী শতকে লন্ডভন্ড ইংল্যান্ড
পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে