সদরপুরে দু’শতাধিক ঘরবাড়ি পদ্মায় বিলীন
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৮ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৯ পিএম
ফরিদপুর জেলার সদরপুরের দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মায় নদী ভাঙনে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। গতকাল সরেজমিনে ঐ এলাকা পরিদর্শনে অব্যাহতভাবে চলামান নদী ভাঙনের চিত্র চোখের সামনেই দৃশ্যমান হয়।
চলতি বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণের ফলে তীব্র গ্রোতে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ইউনিয়টির প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পদ্মাপাড়ের শত শত ঘর। ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। সব হারিয়ে ভাঙনকবলিতরা আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় স্কুল ঘর ও খোলা মাঠে। সেই সাথে খাদ্য, চিকিৎসা, বিদ্যুৎসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সংকট। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না কোন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বলে জানায় স্থানীয়রা।
গতকাল সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা যায়, পদ্মার তীব্র গ্রোতে ইউনিয়নটির নন্দলাপুর, নুরুদ্দিন সরদারকান্দি, জহুরুল হক বেপারীকান্দি ও কুদ্দুস মোল্যাকান্দি গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ পদ্মা নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়া পদ্মার ভাঙন শঙ্কায় নদীপাড় থেকে সরে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। নদী ভাঙনের ফলে ইউনিয়নটিতে প্রায় ১০ দিন যাবত বিছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ভাঙন রোধে এখনো নেয়া হয়নি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ।
ইউনিয়নের নন্দলাপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ বেলাল ইনকিলাবকে জানান, গত ২৮ আগস্ট রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করে আমাদের গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মুহূর্তে মধ্যে আমার ও আমার প্রতিবেশীদের বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। আমরা আমাদের ছেলে-মেয়ে, গরু-ছাগল ও ঘরের মালামাল নিয়ে বেরিয়ে আসি। তাড়াহুড়ো করে ঘরের কিছু অংশ ভেঙে এনেছিলাম তা দিয়েই পরিবার নিয়ে খোলা মাঠে আশ্রয় নিয়েছি। এখন আমরা খুব অসহায় অবস্থায় দিন পার করছি।
নুরুদ্দিন সরদারকান্দি গ্রামের ইলিয়াস আলী ইনকিলাবকে বলেন, নদীতে আমাদের সব নিয়ে গেছে। এদিকে আমাদের কোন কর্ম নেই। পরিবার নিয়ে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। এখনো সরকারিভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাই।
কুদ্দুস মোল্যাকান্দি গ্রামের রহিমা খাতুন ইনকিলাবকে জানান, সন্তানদের নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে এলাকাবাসীর ডাক-চিৎকার শুনে বাইরে আসি। দেখি নদীতে সবকিছু বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমার স্বামী, সন্তান নিয়ে দ্রুত ঘরের মালামাল সরিয়ে নিতে নিতেই সব শেষ হয়ে যায়। এখন খুব অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছি। আমি ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে স্থায়ী সমাধনের প্রার্থনা করছি, যাতে আর কেউ ভিটা-মাটি হারা না হয়।
সদরপুর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি পদ্মা নদী বেষ্টিত হওয়ায় প্রতি বছরই ভাঙনের শিকার হয়। আমি ভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে আবেদন করেছি। আশা করছি ভাঙন রোধে দ্রুত সরকার কার্যকারী পদক্ষেপ নিবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইউনিয়নে প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষ ভাঙন কবলিত রয়েছে। আমরা তাদের নামের তালিকা করে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করার প্রস্তুতি নিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহসান মাহমুদ রাসেল ইনকিলাবকে বলেন, আমি ক্ষতিগ্রস্থদের নামের তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি- এই কাজ চলমান রয়েছে। আমরা দ্রুত ভাঙন কবলিতদের পাশে দাড়াবো। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত
শেষ তিন মাসে রেকর্ড বাজেট ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের