‘সোনালি আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস’
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৫ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৯ পিএম
ফরিদপুরের সদরপুরে ‘সোনালী আঁশ’ খ্যাত পাট বর্তমানে কৃষকের গলার ফাঁস হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় পাটের ফলন ভালো হলেও পাটের বর্তমান বাজার দর উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় নিশ্চিতভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে স্থানীয় পাট চাষিদের। ফলে পাটচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন পাটচাষিরা। পাটের পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে আখ, সবজি, তরি-তরকারি চাষের চিন্তা করছেন কেউ কেউ। কৃষক পর্যায়ে এমন ধারণায় ভবিষ্যতে পাট চাষের জমি কমে যাবে, হুমকির মুখে পড়তে পারে বিপুল সম্ভাবনার সোনালি আঁশ।
উপজেলার হাটকৃষ্ণপুর, সাড়ে সাত রশি বাজার, পিঁয়াজখালী, বালিয়াহাটি, নচুনগঞ্জ বাজারে পাটের মান ও রং ভেদে মণপ্রতি বর্তমান দর ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা। বিভিন্ন কৃষকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, জায়গা ভেদে পাট উৎপাদন ও বাজারজাত করা পর্যন্ত খরচ হয়েছে মণপ্রতি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ২ শত টাকা । অর্থাৎ বর্তমান বাজার দরের চেয়ে কৃষকদের প্রতিমণে লোকসান হচ্ছে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকার মতো। সুতরাং পাটে লাভের আশা ছেড়েই দিয়েছেন কৃষকরা, উৎপাদন খরচ উঠলেই তারা খুশি।
তবুও পাট নিয়ে ব্যস্ততার কমতি নেই চাষিদের। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা কেউ কেউ পাট কাটা, পচন, সংগ্রহ ও শুকাতে ব্যস্ত। আবার নিশ্চিত লোকসান গুনতে হবে ভেবে পাট না কেটে ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন কেউ কেউ।
উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের পাট চাষি সায়ীদ হাসান জানান, রোদে শুকিয়ে বিক্রির জন্য হাটে নেয়া পর্যন্ত মণপ্রতি ৩ হাজার ২ শত টাকার মতো খরচ হয়েছে। কিছু পাট বিক্রি করেছি। লোকসান হয়েছে। আগামীতে খরচ ওঠার মতো দাম বাড়লে বাকি পাট বেচে দেবো। আগামীতে আমি আর পাট চাষ করব না। সেখানে আখ বা সবজি চাষ করব।
উপজেলার মটুকচরের চাষি হাসেম সরদার জানান, এই বছর পাট চাষে খরচ বেশি হয়েছে। দিনমজুর, বীজ, সার, কীটনাশক, পরিবহণ সবকিছু মিলিয়ে খরচ অনেক বেশি। বাজার ঘুরে দেখেছি পাটের দাম একেবারেই কম। নিশ্চিতভাবে লোকসান হচ্ছে। না পারি বেচতে না পারি ঘরে রাখতে। এখন পাট আমাদের গলার ফাঁস হয়েছে।
সাড়ে সাত রশি বাজারের পাট ব্যবসায়ী পরিতোষ সাহা জানালেন, এ মৌসুমে পাটের উৎপাদন বেশি হয়েছে। বর্তমানে বাজারে পাটের প্রাপ্যতা বেশি হওয়ায় দাম কম। কিছুদিন গেলে পাট ভাল করে শুকালে দাম বাড়তে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ বছর উপজেলায় ৬ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উৎপাদনও আশানুরূপ । খাল বিলে বৃষ্টি ও বর্ষার পানি স্বল্পতার কারণে পাট পচন, সংগ্রহ ও পরিবহণ বাবদ পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অথচ প্রতিমণ পাটের বাজার মূল্য হওয়া উচিত ৪ হাজার টাকা। গুদামজাতকারী ও ফড়িয়াদের অপকৌশলের কারণে কৃষকরা সাময়িক ক্ষতির শিকার হন। তবে ১৯ ধরণের পণ্য সংরক্ষণ, সরবরাহ ও মোড়কীকরণে পাটের বস্তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। যদি মিলগুলো চাহিদা বাড়ায়, পাট ও পাটজাত দ্রব্যের বহুবিধ ব্যবহার ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা যায় তবে পাট চাষে কৃষকদের নিশ্চিত লাভ হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত