মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বাজারে আসা নতুন কন্দ পেঁয়াজ (শাখা বা মুড়িকাটা) মূল্য দ্বিগুণ হওয়ায় জমি থেকে পেঁয়াজ চুরি যাওয়ার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন কৃষকেরা।

গতকাল সকালে উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ কাঁচামালের আড়ৎ ঝিটকা বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, কন্দ পেঁয়াজ (শাখা বা মুড়িকাটা) পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৬শ’ থেকে ৩৮শ’ টাকা মণ দরে। আর পুরাতন হালি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ৪ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার ৪শ’ টাকা পর্যন্ত। খুচরা ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করছেন কেজি প্রতি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আর পুরাতন হালি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের এমন দামে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেত থেকে ঘটছে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা। ফলে পেঁয়াজ ভাল হলেও তা ঘরে উঠানো নিয়ে আতংকে রয়েছে কয়েক হাজার পেঁয়াজ চাষি। পেঁয়াজ চুরি ঠেকাতে পেঁয়াজ ক্ষেতে ঝুপরি টং ঘর তুলে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার কৃষক মো. হারুনার রশিদ বলেন, আমি এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। আমার ৪ শতাংশ একটি জমির ১ শতাংশ পেঁয়াজ চুরি হয়েছে। চোরের ভয়ে দ্রুত পেঁয়াজ তুলে ফেলতে হচ্ছে। পেঁয়াজ আরো কিছুদিন পরে তুলতে পারলে আরও ভালো হতো। কিন্তু কয়েকদিন আগে আমার পাশের জমি থেকে রাতের আঁধারে পেঁয়াজ চুরি হয়েছে।

আ. মালেক বলেন, আমরা ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। আমাদের প্রায় ৪-৫ শতাংশ জমির পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। চুরি হওয়ার পরে আমরা রাত-দিন পাহারা দিচ্ছি। চোরের ভয়ে পেঁয়াজ তোলার উপযোগী না হলেও অপরিপক্ক অবস্থায় পেঁয়াজ তুলতে হচ্ছে।

বাহিরচর গ্রামের মামুন জানান, পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় রাতের আঁধারে এমনকি দিনেও ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা ঘটছে। পেঁয়াজগুলো ১৫ থেকে ২০ পরে তুলতে পারলে পরিপক্কতা পেত। কিন্তু চুরির ভয়ে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ অঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এখানে পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কন্দ পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। এখানকার কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবেন। তবে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে এটা দুঃখজনক।

এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার ওসি শাহ্ নুর এ আলম জানান, পেঁয়াজ চুরির ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে এলাকার জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। তবে এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।