আর কত লোকসান গুনবে জিল বাংলা সুগার মিলস
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ এএম
দেওয়ানগঞ্জের জিল বাংলা সুগার মিলস লিমিটেড ৬৬ মাড়াই মৌসুমের ৪৮ মাড়াই মৌসুম লোকসান গুনেছে। এতে লোকসানের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৬৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৭ হাজার ৩৬৫ টাকা। আর কতো লোকসানের পর লাভের মুখ দেখবে জিল বাংলা চিনি কল? নাকি লোকসান গুনতে গুনতে একসময় বন্ধ হয়ে যাবে। এমন প্রশ্ন বহু আগে থেকেইে উঠেছে মিলপাড়ায়। তবে চিনি কলটিকে বহুমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার মাধ্যমে লোকসান ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করেন মিলের বেশিরভাগ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের যৌথ কারিগরি সহায়তা ও অর্থায়নে মিলটি স্থাপিত। মিলের বার্ষিক চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ১০,১৬০ মেট্রিক টন। দৈনিক আখ মাড়াই ক্ষমতা ১,০১৬ মেট্রিকটন। দৈনিক আখ মাড়াই সম্ভব হয় ৮৭৪.৯৭ মেট্রিক টন পর্যন্ত। মিলটির সর্বোচ্চ কার্যদিবস ছিলো ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম ২১১ দিন। সর্বনি¤œ কার্যদিবস ২০২২-২৩ মৌসুম ৪১ দিন। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ মৌসুম ১০১ দিন কার্যদিবস ছিলো। মিলের ইতিহাসে দেখা যায় ২৭ মৌসুম ১০০ দিনের উপর, ৯ মৌসুম ১৫০ দিনের উপর এবং ১টি করে মৌসুম ১৯০ ও ২০০ দিনের উপর কার্যদিবস সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে কোন ভাবেই ১০০ কার্যদিবসে পৌঁছাতে পারছে না। কার্যদিবস কমে আসার অন্যতম কারন হিসাবে দেখা গিয়েছে আখ সংকট।
মিল জোন এলাকা হিসেবে আছে ৬টি উপজেলা। দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, বকশিগঞ্জ উপজেলা আংশিক হ জামালপুর সদর। এখানে ইক্ষু চাষির সংখ্যা ১২ হাজার। মোট ইক্ষু কেন্দ্র ২৯টি। ইক্ষু আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১৮ হাজার একর। আখ চাষ হচ্ছে ৩-৪ হাজার একর জমিতে। অথচ এক সময় ১২ হাজার একর পর্যন্ত আখ চাষ সম্ভব ছিলো এই অঞ্চলে।
মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষে চাষিদের উদ্ভুদ্ধ করতে এ পর্যন্ত আখের মূল্য বৃদ্ধি করেছে কয়েক ধাপে। ২০২২-২৩ মৌসুম প্রতি কুইন্টাল ক্রয় মূল্য ছিলো ১৮০ টাকা, ২৩-২৪ মৌসুম ৪০ টাকা বড়িয়ে ২২০ টাকা, সর্বশেষ আরো ২০ টাকা বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করা হয়েছে। তবুও আখ চাষ পূর্বের লক্ষ্যমাত্রায় ফিরানো সম্ভব হচ্ছেনা।
লোকসানের প্রভাবে প্রশাসনিক দপ্তরে জনবল কমেছে। মিলটিতে চার শ্রেণির জনবল রয়েছে। যেখানে কর্মকর্তা, স্থায়ী কর্মচারী, মৌসুমী কর্মচারী, স্থায়ীশ্রমিক, মৌসুমী শ্রমিক ও চুক্তিভিত্তিক। ২০০২ সাল পর্যন্ত জনবল ছিলো ৯৮৯ জন। ৩৪২ জন ছাটাই হয়ে বর্তমানে কর্মরত আছে ৬৪৭ জন।
আখ সংকট ও কার্যদিবস কমে আসার সাথে লক্ষনীয় হয়েছে মিলের মেশিনারিজগুলো সেকেলে, আধুনিকায়নে প্রয়োজন উদ্যোগ। নয়তো একসময় উভয় সংকটের সম্মুখীন হতে হবে মিল কর্তৃপক্ষকে।
জিল বাংলা চিনি কল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হানুল হক রায়হান বলেন, মিলটিতে বাই প্রডাক্ট চালু করা সম্ভব। যেমন: কয়লা হতে বিদ্যুৎ, সফট ড্রিকস, স্পিরিট বার্নিশ, কম্পোস্ট সার, পানি বোতল জাতকরণ ইত্যাদি উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হলে প্রতিষ্ঠানটি ধারাবাহিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, এখন প্রান্তিক চাষির চেয়ে বর্গা চাষির সংখ্যা এখন বেশি। প্রান্তিক চাষিরা আখ চাষ বেশি করতো। বর্গা চাষিরা বেশি আখ চাষ করে না। তবে কৃষকদের আখ চাষ বাড়াতে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাসহ উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মিলটিতে বাই প্রডাক্ট চালু করার বিষয়ে কোন পরিকল্পনা বা প্রস্তাবনা হয়নি।
উল্লেখ্য, আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর মিলটির ৬৭তম (২০২৪-২৫) মাড়াই মৌসুমের শুভ উদ্ভোধন। উৎপাদন পূর্বাভাসে মিল কর্তৃপক্ষ ৭৯ কার্যদিবসে ৭১ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়ই করে ৭ রিকোভারিতে ৪৯৭০ মে.টন চিনি উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধার্য করেছে। এ মৌসুমে লাভ না হলে লোকসানের তালিকা আরো এক ধাপ বৃদ্ধি হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক
ধামরাইয়ে খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানায় ফের আবার ডাকাতির চেষ্টা
রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দ্বিতীয় দিনের মতো অনশনে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা
বন্ধ বেক্সিমকো খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস
পরিবারসহ জ্যাকব ও ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানির নতুন তারিখ
সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান ইউজিসি’র
চুক্তিতে নিয়োগের দৌড়ে নওফেলের জালাল উদ্দিন চৌধুরী
পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা