খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ এএম
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পাড়াসাদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চার মাস আগে করাল গ্রাসী তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। এখন খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। দেখার যেন কেউ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৪/১৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে। চার মাস আগে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়। সে সময় স্থানীয় জনগন ও শিক্ষকরা নিজেদের অর্থে টিনশেড বিদ্যালয়ের টিন খুলে নিয়ে ভেসে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করলেও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিদ্যালয়ের জমি। এরপর অর্থের অভাবে পুরাতন টিন দিয়ে বিদ্যালয় ঘরটি অন্যত্র উত্তোলন করতে পারেনি। বর্তমানে লেখাপড়ার কোন পরিবেশ না থাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যায় না। এরপরও কোমলমতি কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে গিয়ে রোদে ধবধবে বালির উপরে খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করছে। মেঘ দেখলেই তারা বই খাতা গুটিয়ে বাড়ির দিকে দৌড় দেয়। এজন্যই চরাঞ্চলের মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ভেস্তে যেতে বসেছে বলে ওই এলাকার অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীরা জানান।
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সরকার পরিবর্তনের কারণে কমিটি বিলুপ্তের পরই তিস্তা নদীর ভাঙনে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়। সে সময় শিক্ষক ও এলাকাবাসির কাছ থেকে চাঁদা তুলে মিস্ত্রি লাগিয়ে বিদ্যালয়ের টিন খুলে নেয়া হয়। এরপর পাশাপশি স্থানে মাটি ভরাট, কাঠ ক্রয় করে ঘরের ফ্রেম তৈরি করা হয়। এখন অর্থের অভাবে কোন কাজই হচ্ছে না। বাধ্যহয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠ সংলগ্ন বসতঘরের পাশে বসে খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করছে।
অভিভবক সোলায়মান হাজারী বলেন, সরকারি কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় বিদ্যালয় ঘর উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। চরের গরীব মানুষদের পক্ষে বার বার অর্থনৈতিক সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। বিদ্যালয় ঘর না থাকায় চার মাস থেকে লেখাপড়ায় ভাটা পড়েছে।
হোসেন আলী নামে এক এলাকাবাসি জানান, বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের শিকার হলে তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারীর অভাবে শিশুরা শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে সহজেই শিশুরা ঝড়ে পরছে। অপরদিকে শিক্ষকদের অনিয়মিত গমনাগমনের ফলে শিক্ষার্থীরা খেলা-ধুলা ও খোশ গল্প করে বাড়ি ফিরছে।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯৫ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে বলে জানান সহকারি শিক্ষক মোছাঃ অজিদা খাতুন। শিক্ষক রয়েছে তিনজন। বসার জায়গা নেই। নেই পায়খানা-প্রসাবের ব্যবস্থা। এজন্য শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সহকারি শিক্ষক মোহসিনা খাতুন বলেন বিদ্যালয় ঘর না থাকায় ঠিকমত পাঠদান করা সম্ভব হয় না। কারণ খোলা আকাশের নিচে পাঠদানে শিক্ষা উপকরণের সঠিক ব্যবহার করা যায় না।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নদী ভাঙ্গনের পর ঘরটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অর্থ বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। চার মাসেও কোন কাজ হয় নাই।
ওই ক্লাষ্টারের সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রিপন আলীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এলাকাবাসির আন্তরিকতায় বিদ্যালয়ের টিন নদীতে ভেসে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। ঘরটি পুনরায় উত্তোলনের পদক্ষেপ নিয়েছেন তারাই। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে এখনো সম্ভব হয়নি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নদী ভাঙনের শিকার বিদ্যালয়টির বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ
কারাগারে এস কে সুর
‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’
ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে
অভি খালাস! তাহলে খুনী কে?
জল্পনা উড়াল চীনা সংস্থা টিকটক কিনছেন না মাস্ক
ধামরাইয়ে খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানায় ফের আবার ডাকাতির চেষ্টা
রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তর আদেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন
দ্বিতীয় দিনের মতো অনশনে অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা
বন্ধ বেক্সিমকো খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস
পরিবারসহ জ্যাকব ও ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানির নতুন তারিখ
সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনের বিষয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান ইউজিসি’র
চুক্তিতে নিয়োগের দৌড়ে নওফেলের জালাল উদ্দিন চৌধুরী
পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সাকরাইনে মেতেছে পুরান ঢাকা