মজুরি বৈষম্যের শিকার শেরপুরের নারী শ্রমিক
১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম

পুরুষের সমান কাজ করেও বেতন পাই পুরুষের চেয়ে অর্ধেক। এক সঙ্গেই কাজে আসি, এক সঙ্গেই কাজ শেষে পুরুষরা মজুরি পান ৫/৬শ’ টাকা। আমরা পাই ৩শ’ টাকা। কাজ সমানই করি। বেতন পাই পুরুষের অর্ধেক। সংসারে আর কেউ আয় করারও নেই। ৫ জন খাওয়ার মানুষ। দিন চলা খুবই কঠিন। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের ছোট গজনীর কৃষি শ্রমিক মালতী কোঁচনী। শুধু মালতীই নন। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চাতাল মিল, ইটভাটা, বন্দরে পাথর ভাঙ্গা, হোটেলে রান্নায় সহায়তা, হিমাগারে আলু বাছাই, নার্সারিতে মাটির কাজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিকের কাজ করেন অংসখ্য নারী। পরিবারের সাংসারিক চাহিদা মেটাতে বাধ্য হয়েই বিভিন্ন খাতে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন নারী শ্রমিকেরা।
কিন্তু পুরুষ শ্রমিকের সমান কাজ করেও বেতন পান পুরুষের অর্ধেক। দিনভর হাঁড়-ভাঙা খাটুনির পর যে মজুরি পান তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। তাই দাদন ব্যবসায়ী অথবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চলতে হয় তাদের। বছরের পর বছর এভাবে চললেও মজুরির পরিবর্তন হয় না। তাই নারী নেত্রীরা দাবি তুলেছেন, নারীর অধিকার। মজুরিসহ নানা বিষয়ে সমঅধিকার নিশ্চিতের।
নারী শ্রমিকরা বলছেন, একই সময়ে কাজে এসে পুরুষের সমান কাজ করেও তারা বেতন বৈষম্যের শিকার। পুরুষরা যেখানে ৫/৬শ টাকা বেতন পান। নারীরা পান আড়াইশ ৩শ টাকা। অথচ সমান কাজ সময় দিতে হয়। ঝিনাইগাতীর ছোট গজনীর কৃষিশ্রমিক শান্তি রানি, মালিনী কোঁচনী, পল্লবী রেমা, সেলচি সাংমা বলেন, কোন ভাবেই পুরুষের চেয়ে কাজ কম করি না। আমরাও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু আমাদেও বেতন পুরুষের চেয়ে অর্ধেক। চাতাল মিলের শ্রমিক হুজুরা বানু বলেন, মানুষ যখন ঘর থেকে ছাতি ছাড়া বের হতে পারে না। তখন কাঠফাঁটা রোদে ধানের খলায় ধান শুকাই। মেঘের সময় যে কাপড়ে ভিজি। সেই কাপড় পড়নেই শুকাই। সকালে ৮/৯টায় আসি ফিরি সন্ধ্যায়। এত কষ্ট করেও বেতন পাই পুরুষ শ্রমিকের অর্ধেক। চাতাল শ্রমিক জোসনা বেগম বলেন, আমি কুড়া ঝাড়ি। বেতন পাই আড়াইশ’ টাকা।
একই সময়ে কাজে এসে পুরুষরা পায় ৫শ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চাতাল মালিক বলেন, জেলার প্রায় সব চাতালই বন্ধ। যারা দু-একটা চালাচ্ছি তাও লোকসানে। শ্রমিকদের বেতন বাড়াই কেমনে। অন্য ব্যবসাও বুঝিনা। তাই লোকসানেও কোনোমতে ধরে রেখেছি। একই পরিস্থিতি ইটভাটাগুলোতেও। নারীরা পান সপ্তাহে ১৫শ / ২ হাজার টাকা। পুরুষদের অগ্রীম টাকা দিয়ে কাজে আনা হয়। সরদারকে জানালে কাজ থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয় বলে জানান নারী শ্রমিকরা। নার্সারিতে কাজ করা শিউলি বেগম জানান, প্রতিদিন ৩ কিলো: হেঁটে কাজে আসেন।
সকাল ৮টায় এসে যেতে হয় সন্ধায়। সারাদিন মাটি কাটেন। মাটি ঝুড়িতে তুলে দেন। মাথায় মাটি বহন করেন। মজুরি পান ৩শ টাকা। যা দিয়ে সংসার চালানো দায়। অথচ পুরুষ শ্রমিকরা বেতন পান ৫/৬শ টাকা। শেরপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লুৎফুল কবীর দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পুরুষের চেয়ে নারী শ্রমিকের বেতন অর্ধেক দুঃখজনক। সরকারি দফতরে বেতনে অসমতা নেই। ব্যক্তি মালিকানায় বৈষম্য রয়েছে। বৈষম্য নিরসনে সচেতনতামূলক সভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। সবার সহযোগিতায় অসমতা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে শীর্ষ চারে নিউক্যাসেল

জয়ের ম্যাচে এমবাপের লাল কার্ড অস্বস্তিতে রিয়াল

নাটকীয় জয়ে শিরোপার আরও কাছে লিভারপুল

র্যাংগস ই-মার্টে শুরু হলো এসি কার্নিভাল

ঈদুল ফিতরে ২১ হাজার উদ্যোক্তাকে ডিজিটাল রূপান্তরে সহায়তা করলো জাতিকইজি

‘মঙ্গল’ নাম বদলে ক্ষোভ, ব্যাখ্যা চান চারুকলার শিক্ষার্থীরা

এক হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতাল উপহার দিচ্ছে চীন

২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

বৈশাখের কালো ঘোড়া

কালবৈশাখী

বৈশাখ

আচানক এইসব দৃশ্য

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নারায়ণগঞ্জে আরসা প্রদানসহ ছয় জনের ফের আট দিনের রিমান্ডে

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ সরদার বকুলের বিরুদ্ধে

ভারতীয় আধিপত্যবাদের হুমকিভারতীয় আধিপত্যবাদের হুমকি

কবিতায় বৈশাখ

দ্রুত সময়ে ময়মনসিংহে বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হবে: বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ

নববর্ষ ও বিজাতীয় আগ্রাসন

নানার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে প্রাণ গেলো শিশুর