ঈদে গোশত খেতে অল্প অল্প করে টাকা জমান সমিতিতে
৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৭ এএম | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

ব্যাটারি দিয়ে তৈরি তিন চাকার ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক চালান শহিদুল ইসলাম (৪৮)। এই আয়ে কোনোরকমে চলে তার চার সদস্যের সংসার। বছরে তিন বা চার দিন গরুর গোশত খাওয়ার সুযোগ মেলে তাও ঈদের সময়টায়। একবারে কিনতে গেলে আর্থিক চাপ পড়ে এ কারণে তারা গ্রামের বাসিন্দারা মিলে ‘গোশত সমিতি’ করেছেন।
প্রতি সপ্তাহে শহিদুল এই সমিতিতে ১০০ টাকা করে জমা রাখেন। জমা করা এই অর্থ দিয়ে গরু কেনেন সমিতির সবাই। এরপর গরু জবাই করে সবাই মিলে গোশত ভাগ করে নেন। গ্রামে বা পাড়ামহল্লায় এই সমিতি ‘গোশত সমিতি’ নামে পরিচিত। শহিদুল ইসলামে বাড়ি কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার সরকারি খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ পাড়ায়। এ গ্রামের ২৫ থেকে ৩০ জন মিলে এই গোশত সমিতি করেন। ঈদের আগে গরু কিনে গোশত ভাগাভাগি করে নেন।
একি এলাকার আরেক সদস্য আরিফ হোসেন বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে। ঈদের আগে বউ-পোলাপানের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনতে হয়। ঈদে আরও বাজারসদাই আছে। সব মিলে ঈদের আগে বেশি টাকা খরচ হয়। তার ওপর মাংসের জন্য চাপ বেশি পড়ে। এ কারণে গোশত সমিতিতে নাম লিখাইছিলাম। এবার সমিতির সবাই মিলে গরু কিনে জবাই করছি। ভাগে সাড়ে ৭ কেজি করে গোশত পাবো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের মতো কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দিনমজুর, খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ বছরজুড়ে গোশত সমিতিতে চাঁদা দেন। সাপ্তাহিক অথবা মাসিক হিসেবে তারা এই সমিতিতে টাকা দিয়ে থাকেন। জমা দেওয়া এই টাকা দিয়ে তারা ঈদের আগে গরু কিনে গোশত ভাগাভাগি করে নেন।
উপজেলার বহরমপুর, ফুলবাড়ি, কুলনা, এলাঙ্গী, পৌর এলাকার, উপজেলা গেট, বড়বামনদাহ,সলেমানপুর,মেন বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন জায়গায় এ গোশত সমিতি আছে। কয়েক গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাম, পাড়া ও মহল্লায় গোশত সমিতি গঠন করা হয় থাকে। দেড় থেকে দুই যুগ ধরে চলছে এই উদ্যোগ। সাধারণত ২০ রমজান থেকে গরু কিনে গোশত ভাগাভাগি করে নেন সমিতির অনেকে। আবার কোনো কোনো সমিতির সদস্যরা ঈদের আগের দিনও গরু কিনে গোশত ভাগ করেন। এতে ঈদে পরিবারগুলোর আর্থিক চাপ কমে, পাশাপাশি বাড়তি আনন্দ করতে পারে।
বহরমপুর গ্রামের শিপন রহমান বলেন, তাঁদের সমিতির সদস্যরা সারা বছর টাকা জমা রাখেন। গত শনিবার সমিতির সদস্যরা সবাই মিলে গরু কিনে গোশত ভাগ নিয়েছেন। প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা দরে সাড়ে ৭ কেজি গোশত পেয়েছেন। তিনি বলেন, বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাস ৭৫০ টাকা। ঈদের আগে দাম আরও বেড়ে যায়। তবে সমিতির মাধ্যমে প্রতি কেজি মাংসের দাম পড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।পৌর এলাকার গোশত ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, অনেক এলাকার মানুষ সমিতি করে গরু কিনে গোশত ভাগ করে নিচ্ছেন। প্রতিদিন এসব সমিতির দুই থেকে তিনটি গরু কাটছেন তিনি। দিন দিন সমিতির সংখ্যাও বাড়ছে বলে তার ধারণা।কম দামে ভালো মানের গোশত পাওয়ার জন্য গ্রামে ও পাড়ামহল্লায় এই সমিতির প্রতি অনেকে আগ্রহী হচ্ছেন, এমন মন্তব্য মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কর্মী রেজাউল ইসলামে। তিনি বলেন, সমিতি না করলে নিম্ন আয়ের মানুষের একসঙ্গে এতগুলো টাকা দিতে হিমশিম অবস্থায় পড়তে হয়। সমিতির মাধ্যমে শুধু কম দামে মানসম্মত গোশতই নয়, এভাবে সবাই মিলে গোশত ভাগ করে নেওয়ায় ঈদের আনন্দও বাড়িয়ে তোলে। সমাজে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি হয়।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে শীর্ষ চারে নিউক্যাসেল

জয়ের ম্যাচে এমবাপের লাল কার্ড অস্বস্তিতে রিয়াল

নাটকীয় জয়ে শিরোপার আরও কাছে লিভারপুল

র্যাংগস ই-মার্টে শুরু হলো এসি কার্নিভাল

ঈদুল ফিতরে ২১ হাজার উদ্যোক্তাকে ডিজিটাল রূপান্তরে সহায়তা করলো জাতিকইজি

‘মঙ্গল’ নাম বদলে ক্ষোভ, ব্যাখ্যা চান চারুকলার শিক্ষার্থীরা

এক হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতাল উপহার দিচ্ছে চীন

২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

বৈশাখের কালো ঘোড়া

কালবৈশাখী

বৈশাখ

আচানক এইসব দৃশ্য

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

নারায়ণগঞ্জে আরসা প্রদানসহ ছয় জনের ফের আট দিনের রিমান্ডে

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ সরদার বকুলের বিরুদ্ধে

ভারতীয় আধিপত্যবাদের হুমকিভারতীয় আধিপত্যবাদের হুমকি

কবিতায় বৈশাখ

দ্রুত সময়ে ময়মনসিংহে বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হবে: বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ

নববর্ষ ও বিজাতীয় আগ্রাসন

নানার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে প্রাণ গেলো শিশুর