ওয়াশিংটন ডিসির দিকে তাকিয়ে সবাই : ড. মোমেন-ব্লিঙ্কেট বৈঠক
১১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২৩ পিএম
দেশের রাজনীতি সচেতন সবাই তাকিয়ে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির দিকে। সেখানে আজ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কি আলোচনা হয় তা জানার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন মানুষ। এদিকে গতকাল জাতীয় সংসদে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইলে যে কোনো দেশের ক্ষমতার পালাবদল তথা উলোট-পালট করে দিতে পারে।
কূটনৈতিক সুত্রগুলো জানিয়েছে, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হতে পারে এ আলোচনায়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের কৌশল নির্ধারণসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন অবস্থানকে সমর্থন দেয়ার আহŸানও আসতে পারে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে।
যুক্তরাষ্ট্র্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে গত ২৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন, সেখানেও সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের ঢাকা সফরের সময়ও গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ যাতে অঙ্গীকার পূরণের কথা বলে গেছেন। ফলে ড. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় এ প্রসঙ্গগুলো আবারও অ্যান্টনি বিঙ্কেন গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবেন এমন আভাস মিলেছে। গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং মানবাধিকারের বিষয়ে বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, সে সম্পর্কে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে গেছেন ড. আব্দুল মোমেন। অ্যান্টনি বিঙ্কেনের সঙ্গে আলোচনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতি এবং অবস্থান তিনি তুলে ধরবেন।
ওয়াশিংটনে এবারের আলোচনায় আগামী নির্বাচনের বিষয়টি যে গুরুত্ব পাবে, সেটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন নিজেও স্বীকার করেছেন। গত বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, আমেরিকা চায় বাংলাদেশে যেন স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের নীতিও নির্বাচন। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। গণতন্ত্র আমাদের অস্থিমজ্জায়। আমাদের রক্তে গণতন্ত্র। সরকার যে সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী, আমরা সেটা তাদের জানাব।
গত বৈঠকে অংশগ্রহণের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ওয়াশিংটন ডিসিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি জানান, বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে (রাশেদ চৌধুরী) ফেরত চাওয়া হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বন্ধু দেশ, সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ, বড় ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে তাদের সঙ্গে। এগুলো আগামী ৫০ বছরে আরও শক্তিশালী কীভাবে করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে মোমেন বলেন, বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরতের বিষয়টি তুলে ধরা হবে। আমেরিকার মতো একটি দেশ, এ দেশ আইনের দেশ, এদেশে কেন খুনিকে আশ্রয় দেওয়া হবে? এই খুনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে এখানে দিব্যি আরামে আছে। অবশ্যই আমরা বিষয়টি আবারও তুলে ধরব।
এর আগে, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা নেয়ার পর এটি ছিল দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিতীয় বৈঠক। ওই বৈঠক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ গ্রহণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে রাজী করানোর অনুরোধ করেছিলেন।
ড. মোমেন-বিøঙ্কেন বৈঠক নিয়ে ঢাকার একটি ক‚টনৈতিক সূত্র বলছে, গতবছরের এপ্রিলেই যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিল মোমেন-বিøঙ্কেন। ওই বৈঠকের পর দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেড়েছে। এরপর দুদেশের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সিরিজ সফর বিনিময় হয়েছে। এবারের বৈঠক অনেক কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, বৈঠকে বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ বেশ গুরুত্ব পাবে। ঢাকার পক্ষ থেকে নির্বাচন ইস্যু তোলা হতে পারে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর - এমন বার্তা ওয়াশিংটনকে দেয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গতবছরের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ক‚টনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিøঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। সবশেষ, চলতি বছরে মার্চের শুরুর দিকে নয়াদিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের সময় বিøঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল ড. মোমেনের। তবে সেখানে আনুষ্ঠানিক বা সাইডলাইনে কোনো বৈঠক হয়নি দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে। ##
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জুলাই হতাহতের বিচার আদৌ হবে কিনা সংশয় স্বজনের মধ্যে
হরিণাকুন্ডুতে যুবদল সভাপতির উপর গুলি অল্পের জন্য রক্ষা
সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা : যুব সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে :পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সেই সুখরঞ্জন বালির ভারতে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী
খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন শাস্তি হলে হাসিনার সুযোগ নেই :অ্যাটর্নি জেনারেল
থার্টি ফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করতে হবে আইন করে :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
হাসিনা-জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন
সংস্কারের সঙ্গেই নির্বাচন প্রস্তুতি
‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে বিকল্প সোলার সিস্টেম চালু করুন’
আসিফ মাহমুদের হেলিকপ্টারে ছয় দিনে ২৮ বার সফর বিতর্ক
বন্ধ রয়েছে পায়রা বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রম
ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৫৩
নববর্ষ উদযাপনে ৭ বছরে শব্দদূষণ বেড়েছে ৭৪ শতাংশ
হাসিনা পরিবারের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরুর পরই সচিবালয়ে আগুন : রিজভী
হাসিনার ফ্যাসিজম নিয়ে সস্তা কথা টিকবে না : শফিকুল আলম
চাঁদপুর মেঘনায় ড্রেজারসহ ২৮ জন আটক
ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল অভিষিক্ত বশ,চালকের আসনে দক্ষিণ আফ্রিকা
১৬ বছরের অভিনেতার অকাল প্রয়াণে হলিউডে শোকের ছায়া