যে কারণে চাঁদ পৃথিবীর কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে
১৭ জুন ২০২৩, ০৯:৩৩ পিএম | আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩, ১২:০২ এএম
শত শত কোটি বছর আগে পৃথিবীতে দিনের বেলার দৈর্ঘ্য গড়ে ১৩ ঘণ্টারও কম ছিল এবং এখন এটি বাড়ছে। এর পেছনে প্রধান কারণটি হলো চাঁদ এবং আমাদের মহাসাগরের মধ্যে সম্পর্ক। চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে তার সূ²ভাবে ভারসাম্যপূর্ণ অ্যাস্ট্রো-ব্যালের মাধ্যমে প্রদক্ষিণ করে, কিন্তু কখনই নিজে ঘুরপাক খায় না। সে কারণে আমরা সব সময় চাঁদের একটি মাত্র পীঠই দেখতে পাই। কিন্তু ‘লুনার রিসেশন’ নামে এক প্রক্রিয়ার ফলে চাঁদ ধীরে ধীরে আমাদের গ্রহ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অ্যাপোলো মিশনের মহাকাশচারীরা চাঁদের পীঠে যেসব রিফ্লেক্টার বা প্রতিফলক বসিয়েছিলেন তার ওপর লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি শতভাগ নির্ভুলতার সাথে পরিমাপ করতে সক্ষম হয়েছেন যে চাঁদ ঠিক কত দ্রæত গতিতে পৃথিবীর কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা নিশ্চিত করছেন, চাঁদ প্রতি বছর ১.৫ ইঞ্চি (৩.৮ সেমি) হারে দূরে সরে যাচ্ছে। এবং এর ফলে আমাদের দিনের দৈর্ঘ্য একটু একটু করে বাড়ছে। ‘এসবই হচ্ছে জোয়ারের জন্য,’ বলছেন লন্ডনের রয়্যাল হলওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিও-ফিজিক্সের অধ্যাপক ডেভিড ওয়ালথাম। চাঁদ ও পৃথিবীর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তিনি গবেষণা করেন। ‘জোয়ারের টানের ফলে পৃথিবীর ঘ‚র্ণন ধীর হয়ে আসে, এবং সেই শক্তিতে চাঁদে কৌণিক ভরবেগ তৈরি হয়।’
মূলত, পৃথিবী তার কক্ষপথে ঘোরার সাথে সাথে একটু দূরে চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সমুদ্রে জোয়ার ও ভাটার সৃষ্টি করে। এই জোয়ার সমুদ্রের পানিকে ‘ফুলিয়ে’ দেয় যা উপবৃত্তের আকারে একবার চাঁদের অভিকর্ষের দিকে এবং অন্যবার বিপরীত দিকে প্রসারিত হয়। কিন্তু যেহেতু পৃথিবী তার অক্ষের ওপর চাঁদের কক্ষপথের চেয়েও অনেক বেশি দ্রæতবেগে ঘুরছে, তাই চাঁদের নীচের সমুদ্রের অববাহিকাগুলোর সাথে ঘর্ষণের কারণে চাঁদ সেই পানিকে টেনে ধরে রাখতে কাজ করে। এর মানে হলো, সমুদ্রের পানির এ ফুলে ওঠার ব্যাপারটি ঘটে চাঁদের কক্ষপথের কিছুটা সামনে। চাঁদ তখন এটিকে পেছনের দিকে টেনে ধরে রাখার চেষ্টা করে। ফলে সামান্য হলেও এটি আমাদের গ্রহের ঘ‚র্ণন শক্তিকে কমিয়ে দেয়। চাঁদের শক্তি অর্জনের সময় পৃথিবীর আরও ঘ‚র্ণন ধীর হয়ে যায়, যার ফলে চাঁদ একটু ওপরের কক্ষপথে সরে আসে।
সর্বশেষ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আমাদের গ্রহের ঘ‚র্ণনের এই ক্রমবর্ধমান ধীরগতির মানে হল যে ১৬০০ শতকের শেষের দিক থেকে পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য প্রতি শতাব্দীতে গড়ে প্রায় ১.০৯ মিলি-সেকেন্ড হারে বেড়েছে। চন্দ্র গ্রহণের ওপর প্রাচীন পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি অন্যান্য পরিমাপগুলিতে এই সংখ্যাকে আরও একটু বেশি করে দেখানো হয়েছে – প্রতি শতাব্দীতে ১.৭৮ মিলি-সেকেন্ড হারে। এমনিতে এটি খুব বেশি বলে মনে না হলেও পৃথিবীর সাড়ে চারশো কোটি বছরের ইতিহাসে এটা এক গভীর পরিবর্তনকে তুলে ধরে। সূত্র : বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল
ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা
মেজর জে. অব. তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনের নামে মামলা
বহিঃশক্তি শকুনের মত শিল্প কলকারখানায় থাবা দেয়ার চেষ্টা করছে : শিমুল বিশ্বাস
বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বরদাশত করা হবে না: আইন উপদেষ্টা
মূল সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার অঙ্গীকার
সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রেজাউল করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের এমডি নিয়োগ চুক্তি বাতিল
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন পরিচালক ড. ফাহমিদা আকতার