পুলিশের ভয়ে বন্ধ ছিল মূল দরজা, আগুন থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়েন অনেকে
০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২২ পিএম | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের একটি পাঁচতলা ভবনে আগুন লেগে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এই অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। যারা আগুনের এই ভয়াবহতা থেকে বেঁচে গেছেন— তারা সেই রাতের রোমহর্ষক ঘটনার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। এছাড়া কেন এত প্রাণহানি ঘটল সেটিও জানা গেছে তাদের বক্তব্য থেকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়। কিন্তু ওই সময় ভবনটিতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার একমাত্র দরজাটি তালাবদ্ধ ছিল। এ কারণে কোনো বাসিন্দাই দরজা দিয়ে বের হতে পারেননি। ভবনটির দরজা মূলত ইচ্ছেকৃতভাবেই রাতের বেলা বন্ধ করে রাখা হতো যেন পুলিশ কোনো অভিযান চালাতে না পারে এবং চোর কোনো কিছু চুরি করে নিয়ে যেতে না পারে।
ওই ভবনে মূলত অবৈধ অভিবাসী ও অস্বচ্ছলরা থাকতেন। ফলে পুলিশের অভিযানের আশঙ্কা থাকত সবসময়। ভবনটিতে প্রায় ৪০০ মানুষের বাস ছিল।
গার্ডিয়ান আরো জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর উদ্ধারকারীরা ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরে ফ্লোরে গিয়ে মরদেহ বা জীবিত মানুষের সন্ধানে সারাদিন কাটায়। ওই সময় দেখা যায় ভবনটির প্রায় সব জানালা ভাঙা। এগুলো কিছু আগুনের তাপে ভেঙে গেছে। আর বেশিরভাগই ভবনের বাসিন্দারা ভেঙেছেন। যারা বেঁচে গেছেন তারা মূলত জানালা ভেঙে নিচে লাফিয়ে পড়েই বেঁচেছেন।
ওই ভবনের ভেতর যারা থাকতেন তাদের পরিচিতজনরা বৃহস্পতিবার পুলিশের তথ্যকেন্দ্রে ভীড় জমান। এমপাথো মোতানি নামের এক ব্যক্তি জানান তার বোনকে খুঁজতে এসেছেন তিনি। কিন্তু এখনো কোনো খোঁজ পাননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত কিছু বলা হয়নি। আমরা খুবই হতাশ।’
ভবনটিতে থাকতেন দক্ষিণপূর্ব আফ্রিকার মালাওইয়ের নাগরিক ওমর আরাফাত। তিনি আগুন লাগার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেছেন, “আমি রাত ১টায় প্রচ- জোরে শব্দ ও মানুষের ‘আগুন আগুন’ চিৎকারে জেগে ওঠি। আমি ভবনের মূল দরজার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আগুনের কারণে সেটির কাছে যাওয়া যায়নি। কোনো উপায় না পেয়ে তিন তলার জানালা ভেঙে নিচে লাফ দেই।”
ওমর আরাফাত জানিয়েছেন, লাফ দেওয়ার পর আর তার কিছু মনে নেই। এরপর প্রায় তিন ঘণ্টা পর যখন জ্ঞান ফিরে আসে তখন তিনি তার আশপাশে অনেক অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দেখতে পান। এছাড়া তার আশপাশে অসংখ্য দেহ পড়ে ছিল। তিনি বলেছেন, ‘আমি যখন জেগে ওঠি তখন, আমি মনে করি, আমার বোন কোথায়?’
ওমর জানিয়েছেন, তার বোনও ওই ভবনে থাকতেন। কিন্তু এখনো তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে তার দুই বছরে শিশু সন্তানকে জানালা দিয়ে কেউ একজন নিচে ছুড়ে মারেন। নিচে থাকা অন্যরা তখন শিশুটিকে লুফে নিতে সমর্থ হন। বর্তমানে অন্যরা তার বোনের সন্তানকে দেখভাল করছে।
তানজানিয়ার অভিবাসী ও মুদির দোকানি মুসা জানিয়েছেন, তিনিও তিন তলা থেকে লাফ দেন। তা সত্ত্বেও আহত না হয়ে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু তার ছোট ভাইয়ের ভাগ্য এতটা ভালো ছিল না। তিন তলা থেকে লাফ দিয়ে তার ভাইয়ের কোমরের অংশ ভেঙে যায় এবং পরবর্তীতে তিনি মারা যান।
এদিকে যে ভবনটি আগুন লেগেছিল সেটি জোহানেসবার্গ সিটি কর্তৃপক্ষের ছিল। কিন্তু প্রভাবশালী একটি মহল পরিত্যক্ত ভবনটি দখল করে সেখানে অভিবাসী ও নি¤œ আয়ের মানুষদের কাছে ভাড়া দিয়েছিল। এছাড়া সেখানে গৃহহীনরাও থাকতেন। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক
দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম
জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে
সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট
মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে
চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল
সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক
মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’
সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে
মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার
ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্
মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান
মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন