একটা গ্রাম মিশে গেল মাটিতে
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৭ পিএম | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে মরক্কোর পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল। গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। তেমনই একটি গ্রাম তিখত। মরক্কোর প্রধান পর্যটন শহর মারাকেশ থেকে গাড়িতে গ্রামটিতে যেতে সময় লাগে ২ ঘণ্টা। শুক্রবার রাতের ভূমিকম্পের পর প্রায় ১০০ পরিবার অধ্যুষিত গ্রামটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ শুরু করছেন গ্রামের। রোববার তেমনই ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী ওমর এইত এমবেরেক। কাঁদতে পারছেন না, কিন্তু তীব্র কষ্টে তার সজল হয়ে ওঠা চোখে উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলেন তিনি। এএফপির যখন তার সঙ্গে কথা বলতে চাইল, তখন প্রথমে সাড়া দেননি ওমর। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি আমার কাছে কী জানতে চান? আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’ পরে ধীরে ধীরে তিনি জানান, এখন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন সেটি তার বাগদত্তা মিনা এইত বিহির বাড়ি। আর এক সপ্তাহ পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে যখন ভূমিকম্প হওয়ার আগমুহূর্তে মোবাইল ফোনে ওমরের সঙ্গে কথা বলছিলেন মিনা। ভূমিকম্প শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তার মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উদ্ধারকারী বাহিনীর কর্মীরা তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপ থেকে মিনার লাশ উদ্ধার করেছে। ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা সরিয়ে যখন মিনাকে উদ্ধার করা হয়, সেসময়ও তার হাতে মোবাইল ফোন ধরা ছিল। সেই ফোনটি ওমরকে হস্তান্তর করেছেন কর্মীরা। ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া মরক্কোর বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মতো তিখতও এখন ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা, ভাঙাচোরা বাসন-কোসন, বাতিল জুতা প্রভৃতি নানা জঞ্জালে ভর্তি। ভূমিকম্পে নিজের পরিবারের সদস্যদের হারানো তিখতের আরেক বাসিন্দা মহসিন আকসুম (৩৩) এএফপিকে বলেন, ‘এখানে জীবন শেষ হয়ে গেছে। এই গ্রাম এখন মৃত।’ মরক্কোর আর দশটি গ্রামের মতো তিখতের বাড়িঘরগুলোও পাথর, কাঠ এবং চুন-বালিমিশ্রিত কাদা দিয়ে তৈরি। রোববার গ্রামটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বাড়ির ধ্বংস্তুপের সমানে জড়ো হয়েছেন ওই বাড়ির জীবিত সদস্য, শোকে ভারাক্রান্ত আত্মীয়-স্বজন ও উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, তিখতে এর আগে কবে ভূমিকম্প হয়েছে— জানেন না তারা। ২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আবদেলরহমান এদজাল এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের প্রায় সবার বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে কিন্তু তা নিয়ে এই মুহূর্তে ভাবছি না। বাড়িঘর আবার তোলা যাবে, কিন্তু যাদের আমরা হারিয়েছি, তারা তো আর ফিরে আসবে না।’ উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা ধ্বংস্তুপ থেকে তার পরিবারের সদস্যদের দেহ উদ্ধার করেন। মা-ভাই-বোনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল, গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল তার বাবাকে। কিন্তু উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান এদজালের বাবা। ‘আমার পরিবারের কেউ আর বেঁচে নেই,’ বলেন এদজাল। এএফপি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার
উন্মুক্ত মঞ্চে তরুণদের উচ্ছ্বাস