ফিলিস্তিনিদের ঢল ঠেকাতে সীমান্তে সেনা মোতায়েন মিসরের
১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সঙ্গে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে মিসর। দেশটি আশঙ্কা করছে, গাজার লাখো ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে সিনাই মরুভূমিতে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে ইসরাইল। কায়রো বলেছে, নিজেদের বাড়ি থেকে এত বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন এবং মিসরের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি। ফিলিস্তিনিরা আশঙ্কা করছেন, একবার উচ্ছেদের পর অন্য আরব দেশে শরণার্থী হয়ে গেলে আরও কখনও নিজের বাড়িতে ফিরতে পারবেন না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে এমন পরিস্থিতির কথা উঠে এসেছে। গাজায় কয়েক দিন ধরে বিমান হামলা চালানো অব্যাহত রাখা ইসরাইলের কূটনীতিকরা স্বীকার করছেন না যে, গাজার ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা তাদের লক্ষ্য। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেছেন, তাদের পরিকল্পনা হলো সবকিছু নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। অপর এক মন্ত্রী গিদিয়ন সার বলেছেন, যুদ্ধের শেষে গাজাকে আগের চেয়ে ছোট হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালন করা সাবেক ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি আয়ালন বলেন, মিসরের উচিত সাময়িক সময়ের জন্য শরণার্থীদের গ্রহণ করা। সিনাই মরুভূমিতে অনেক জায়গা রয়েছে। এটি একেবারে গাজার পাশে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরাইল কর্তৃক গাজার ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের সম্ভাব্যতা নিয়ে রবিবার সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ওই দিনই তার কায়রো সফরে যাওয়ার কথা। সব আরব দেশ এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এতে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে। কিন্তু যদি উচ্ছেদ ঘটে যায় তাহলে হয়ত তাদের সামনে শরণার্থী শিবির স্থাপনে তহবিল দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। ১৯৪৮ সালে উচ্ছেদ হওয়া বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিদের আত্মীয় গাজায় রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা আরেকবার গণ উচ্ছেদের ফলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্নের মৃত্যু ঘটতে পারে। বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি বলেছেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের অবশ্যই তাদের ভূমিতে অটল থাকতে হবে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, মিসরের সঙ্গে তিনি সম্পূর্ণ একমত। কায়রোতে তিনি বলেছেন, আমি আরও একবার ইসরাইলকে আহ্বান জানাচ্ছি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার জন্য। ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আমরা। মিসরে তাদের স্থানান্তর আমরা কখনও সমর্থন করব না। মিসরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি শনিবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বায়েরবকের সঙ্গে বৈঠকে জোর দিয়ে বলেছেন, গাজায় আটকে পড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি নাগরিকদের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে মিসরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত ইসরাইল গাজায় ত্রাণ বহরের প্রবেশের অনুমতি দেবে। মিসরের হাতে দরকষাকষির যেসব হাতিয়ার রয়েছে এটি সেগুলোর একটি। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ঢল মিসরে প্রবেশ এড়াতে চায় কায়রো। একই সঙ্গে বেশ কিছু জরুরি উদ্যোগও গ্রহণ করছে তারা। তারা দাবি করছে, অল্প সংখ্যক শরণার্থীদের জন্য এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বড় আকারের শরণার্থী শিবির গড়ে তোলার বিরুদ্ধে তারা। তাদের আশঙ্কা, এসব শিবিরে সিসি ও ইসরাইলি বিরোধী ব্যক্তিরা অবস্থান নিতে পারে। সিনাই উপদ্বীপে ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে মিসরীয় সেনারা। কয়েক দশকের সংঘাতের পর ১৯৭৯ সালে ইসরাইলের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি করেছে মিসর। এরপর থেকে দুই দেশ পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ধারণা করা হয় বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনি অভিবাসীদের সংখ্যা ৬০ লাখের বেশি। এর মধ্যে জর্ডানে ৩০ লাখ ও লেবাননে ৪ লাখের মতো ফিলিস্তিনি রয়েছেন। মিসরে এই সংখ্যা অনেক কম। ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তির পর থেকে মিসরে খুব কম ফিলিস্তিনি শরণার্থী বা নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত। মিসর যে কিছু মাত্রায় শরণার্থীদের জায়গা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তার ইঙ্গিত দিয়েছেন সিনাইয়ের উত্তরাঞ্চলীয় গভর্নর জেনারেল মোহামেদ আবদেল-ফাদিল শৌশা। অঞ্চলটিতে ইসলামি জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য কয়েক বছর ধরে জারি থাকা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি এক নির্দেশে বলেছেন, ইসরাইলি আক্রমণে যদি ফিলিস্তিনিদের ঢল নামে তাহলে প্রয়োজনে স্কুল ও ফাঁকা বাড়িগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। শেখ জুয়েইদ ও রাফাহতে শিবির স্থাপন করা হচ্ছে। সরকারি ভবনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। শিবিরগুলোর নিরাপত্তায় থাকবে মিসরীয় সেনাবাহিনী। গার্ডিয়ান।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা
মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ
ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান
সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ
দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড
বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই
শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী
নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ
ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে
স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ
বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর
গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন
নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে
ব্যবসা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে অফিস খুলবে