শান্তি সম্মেলনে গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান
২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
শান্তি সম্মেলনে আরব ও মুসলিম দেশগুলি অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশই বোমা হামলা বন্ধের কথা না বলে বরং বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মানবিক ত্রাণ প্রাপ্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছে। ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় মিশরের কায়রোতে শনিবার একদিনের শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে গাজায় ইসরাইলের বোমা বর্ষণের তীব্র নিন্দা জানায় আরব বিশ্বের নেতারা। তবে এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কোনো জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিল না। যোগ দেয়নি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কোনো প্রতিনিধিও। তাই চলমান সহিংসতা বন্ধে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করাও সম্ভব হয়নি। মূলত মিসরের আহ্বানে ও তত্ত্বাবধানে শান্তি সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়। সেক্ষেত্রে আয়োজক দেশটির প্রত্যাশা ছিল, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো চলমান যুদ্ধ বন্ধে সর্বাত্মকভাবে শান্তির আহ্বান জানাবে। একইসাথে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদার কয়েক দশকের যে দীর্ঘ সংগ্রাম; সেটি বাস্তবায়নে পুনরায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোর সরকার-প্রধান ও শীর্ষ কর্মকর্তারা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু দেশগুলো সেখানে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে কোনো ধরণের যৌথ বিবৃতিতে সম্মত না হয়েই সম্মেলনটি শেষ করতে হয়। দুই সপ্তাহ ধরে চলমান যুদ্ধে ইসরাইলের বিমান হামলায় শনিবার পর্যন্ত গাজার প্রায় ৪,৩৮৫ জন মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ লাখ গাজাবাসী। একইসাথে ইসরাইলের খাদ্য, পানি ও জ্বালানির নিষেধাজ্ঞায় উপত্যকাটিতে বসবাসকৃত প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুঃখ, কষ্ট ও দুর্ভোগ। গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আচমকা হামলা চালায়। এতে প্রায় ১৪০০ ইসরাইলি নিহত হয়। এমতাবস্থায় সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী কূটনীতিকরা চলমান যুদ্ধ নিয়ে বড় ধরণের কোনো অগ্রগতির ব্যাপারে ততটা আশাবাদী ছিলেন না। আর অন্যদিকে হামাসকে নির্মূলে গাজায় স্থল অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আবিব। শান্তি সম্মেলনে আরব ও মুসলিম দেশগুলি অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশই বোমা হামলা বন্ধের কথা না বলে বরং বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মানবিক ত্রাণ প্রাপ্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছে। জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ ইসরাইলের হামলার বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের নীরব থাকায় কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন। একইসাথে চলমান সংঘাতে উভয় পক্ষকে একই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। আব্দুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিনিদের জীবন হয়তো ইসরাইলিদের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ; বিশ্বের প্রতিক্রিয়া আরব বিশ্বের কাছে অনেকটা এমনই মনে হচ্ছে! একইসাথে গাজায়, ইসরাইল দখলকৃত পশ্চিম তীর এবং ইসরাইলে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংসতায় তিনি ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করেন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত বা বিতাড়িত করতে পারবে না। আর ফ্রান্সের পক্ষ থেকে গাজায় মানবিক করিডোরের আহ্বান জানানো হয়েছে। যার ফলে আকাঙ্খিত যুদ্ধবিরতি সম্ভবনা তৈরি হতে পারে বলে দেশটি আশা করছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি উভয়ই ইসরাইলের সামরিক বাহিনীকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। আর ইতালি মনে করে যে, চলমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে চলমান সংঘাতে ইসরাইলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এই সম্মেলনে শুধু কায়রোতে থাকা নিজেদের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে পাঠিয়েছে। তিনি সেখানে জনসম্মুখে কোনো বক্তৃতা প্রদান করেননি। আর ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল মনে করেন, এই সামিটের মূল লক্ষ্য ছিল একে অপরের কথা শোনা। তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারছি যে, মানবিক পরিস্থিতি রক্ষায়, আঞ্চলিক উত্তেজনা এড়াতে এবং ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে একসাথে আরও কাজ করতে হবে। ইসরাইলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে গত ৭ অক্টোবরের হামলাকেই মনে করা হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। তাই ভবিষ্যতের বিপদ বিবেচনায় এবার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে চিরতরে ধ্বংস করতে চায় দেশটি। স্থল আক্রমণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরাইল গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও উপত্যকাটি মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। আর ইসরাইলি বিমান হামলা গাজার দক্ষিণাঞ্চলেও আঘাত হেনেছে। কায়রো সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল চলমান সহিংসতাকে কীভাবে একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হওয়া থেকে বন্ধ করা যায়। তবে কূটনীতিকরা এটাও জানতেন যে, নানা ফ্যাক্টরের কারণেই যুদ্ধবিরতির আহ্বানে একটি চুক্তি করা কঠিন হবে। রয়টার্স, এএফপি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান
ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের
গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি
বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান
২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ভারতীয় ৭২ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য প্রচার
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরো ৪৭
প্লাটফর্ম বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
শক্তিশালী অর্থনীতি ও গর্বিত জাতি গড়তে শহীদ জিয়ার দর্শন ধারণ করতে হবে : আমির খসরু
কী আছে তৌফিকার লকারে?
ঘটনার তিনদিন পর থানায় মামলা
অনিয়ম ঢাকতে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের পাঁয়তারা
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দুরবস্থা
৯৬টি সিএনজি ভাঙ্গাড়ি হিসাবে সাড়ে ১১ লাখ টাকায় বিক্রি
৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে রূপগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ