ইসরাইল যতদিন যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে, ততদিন হামাসও তা করবে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী এই গোষ্ঠীটির চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া। শুক্রবার এক ভিডিওবার্তায় অতিসাম্প্রতিক এই যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি। ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ করা, বন্দি বিনিময় সম্পূর্ণ করা, গাজাকে অবরোধমুক্ত করা এবং আল আকসা মসজিদে হামলা প্রতিরোধ করতে যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই করতে প্রস্তুত আছে হামাস। ইসরাইল যতদিন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে, ততদিন হামাস তা অনুসরণ করবে।’ গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামলার চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরাইলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরাইলি বিমান ও স্থল বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। টানা প্রায় দেড় মাসে যুদ্ধ চলার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতারের মাধ্যমে ইসরাইলের সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় হামাস। সে প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরাইল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরাইলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস। প্রথমদিকে এই শর্ত আমলে না নিলেও পরে ইসরাইলের নাগরিক, জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ২১ নভেম্বর সেই প্রস্তাবে সায় দেয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। রয়টার্স, আল-আরাবিয়া।