ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

দ. কোরিয়ার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবসা ঊর্ধ্বমুখী

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম

পোলিশ সরকারের সঙ্গে গত বছর ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রয় চুক্তি করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এ চুক্তিকে দেশটির প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলো। এ সুযোগে দক্ষিণ কোরিয়া হয়ে উঠেছে বিকল্প প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবসার নতুন কেন্দ্র। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য দশকের পর দশক ধরে যে প্রস্তুতি দক্ষিণ কোরিয়া নিয়েছে, তা দেশটিকে ক্রমে শীর্ষ ১০ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির কাতারে নিয়ে গেছে। আর্টিলারি উৎপাদনকারী হানওয়া অ্যারোস্পেস, ট্যাংক উৎপাদনকারী হুন্দাই রোটেম ও ফাইটার জেট উৎপাদনকারী কোরিয়া অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ বিশ্বজুড়ে ব্যবসা প্রসারিত করছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়া ২০২২ সালে বিশ্বের নবম শীর্ষ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রেতার অবস্থানে উঠে এসেছে। অথচ ২০০০ সালে দেশটির অবস্থান ছিল ৩১তম। হানওয়া অ্যারোস্পেস কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। বিনিয়োগকারীরা আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর দিকে নজর দিয়েছেন। হানওয়া অ্যারোস্পেসের ব্যবসা বর্তমানে দ্বিগুণ হয়েছে। হানওয়া অ্যারোস্পেসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে-ইয়ুং বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির একটি, যারা দ্রুত ও চাহিদা মতো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সক্ষম। আমরা বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠছি। বিশেষ করে যেসব দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জরুরি চাহিদা রয়েছে, সেখানে আমরা ব্যবসার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা করতে পারছি।’ পশ্চিমা অস্ত্রপ্রস্তুতকারী কোম্পানির তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে দক্ষতা দেখাচ্ছে। এরা সাধারণত সাশ্রয়ী মূল্যে ট্যাংক, কামান ও ছোট ফাইটার জেট তৈরি করতে পারে। কোরিয়ান সরকারও রফতানিকারকদের সহায়তা করে থাকে। অর্ডার নেয়া, চাহিদা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি ও সরবরাহ করার ক্ষেত্রে এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকে। কোরিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজির একজন বিশ্লেষক মুন সিওং মুক বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা এখন দ্রুত ও মানসম্পন্ন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে প্রস্তুত। আমাদের অধিকাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম মার্কিন মানদণ্ডের ভিত্তিতে তৈরি। যাতে এগুলো পশ্চিমা ও তাদের মিত্র দেশগুলো সহজে ব্যবহার করতে পারে।’ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি কোরিয়ার চিপ রফতানিকে ব্যাহত করছে। এটা বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছে। কোরিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি স্টাডিসের প্রধান চে উ সেওক বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া বাণিজ্য উদ্বৃত্তের একটি দেশ। গত বছর চিপ রফতানি হ্রাস পাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি নীতিনির্ধারকদের কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে। সরকার আশা করছে, এ ঘাটতি মেটাতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের একজন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইয়ং উক বলেন, ‘অন্য দেশের তুলনায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবসায় বিনিয়োগকারী পাওয়াটা দক্ষিণ কোরিয়ায় সহজ। এছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো সহজ শর্তে বিপুল অর্থ ঋণ দিয়ে থাকে।’ বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবসায় সিউলের অপ্রত্যাশিত উত্থান, বিশেষ করে ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করাটাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী