পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের (পিআইআইই) সিনিয়র ফেলো জ্যাকব কিরকেগার্ড ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো আর ইউক্রেন সংঘাতকে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে দেখছে না।

সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি অনুসারে তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন এখন আর বিশেষ নয়। এটিকে আর জাতীয় নিরাপত্তার সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয় না, যা ইইউ, ন্যাটো বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যদি তা হতো, তাহলে মানুষ এটা নিয়ে রাজনীতি করতো না’।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর জন্য অতিরিক্ত সহায়তা ঘিরে পরিস্থিতির বিষয়ে মন্তব্য করে কিরকেগার্ড যোগ করেছেন, ‘এটি ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টার একটি অবমূল্যায়ন। আমার মতে এটি করার অন্য কোনো উপায় নেই এবং এটি ইউক্রেনের জন্য একটি ভয়ানক পরিস্থিতি’। বিশেষজ্ঞের মতে, মস্কোর ‘পশ্চিমের চেয়ে বেশি সময় ধরে রাখার চেষ্টা করার কৌশলগত সিদ্ধান্ত কাজ করছে’।

কাগজটি উল্লেখ করেছে যে, ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তায় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদনের আইন পাস করার জন্য হোয়াইট হাউসের সর্বশেষ বিডকে মার্কিন সিনেট প্রত্যাখ্যান করেছে। পরের সপ্তাহে ইইউ নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলন চার বছরের সহায়তা কর্মসূচির ভিত্তিতে কিয়েভকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো প্রদানের প্রস্তাব বিবেচনা করবে। ফিনান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, ‘এ ফাইন্যান্স প্যাকেজগুলোর একটি অনুমোদিত না হলে ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। উভয়ের সাথেই এর ভবিষ্যত ভয়াবহ হবে’।

বিভিন্ন পশ্চিমা যুদ্ধবিমান ক্রয় নিয়ে আলোচনা চলছে - ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী : ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তম উমারভ বলেছেন, কিয়েভ পশ্চিমা তৈরি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য আলোচনা করছে। এদিকে ইউক্রেন এখনও মার্কিন তৈরি এফ-১৬ পায়নি। ‘আমরা বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছি। প্রথমত, আমরা অবকাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম নিয়ে কাজ করছি, আর পাইলটদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করছি। তবে, আমরা স্বল্পমেয়াদে এফ-১৬ বিমান পাব। আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য কিছু মধ্যমেয়াদী আদেশও দিয়েছি। বছরের শেষের আগে ইউক্রেনে প্রথম ঋ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি রাডা টিভি চ্যানেলকে বলেন, এটা প্রায় ২০২৭-২০৩০’।

ওমারভ বলেন: ‘আমরা একা এফ-১৬ নিয়ে আলোচনা করছি না, তালিকাটি দীর্ঘ’। ইউক্রেন এফ-১৬ এর পাশাপাশি অন্যান্য যুদ্ধবিমানও পাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম, সিস্টেম এবং অস্ত্র ব্যবহারের ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই’। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, কিয়েভ শিগগিরই এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাবে, তবে কখন এটি ঘটবে তা তিনি নির্দিষ্ট করেননি।

রয়টার্স এর আগে জানিয়েছে যে, ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) সিস্টেম, এফ-১৮ হরনেট ফাইটার জেট, অ্যাপাচি এবং ব্ল্যাক মর্টার হেলিকপ্টার এবং সি-১৭ গ্লোবমাস্টার এবং সি-১৩০ সুপার ট্রান্সপোর্ট হারকিউলিস সামরিক পরিবহন বিমান সরবরাহ করতে বলেছিল। বার্তা সংস্থার মতে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনে একটি সম্মেলনের একটি বন্ধ অধিবেশনে দেশের প্রয়োজনীয় অস্ত্রের একটি তালিকা উপস্থাপন করেছেন, যেখানে সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে তার পশ্চিমা অংশীদারদেরকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে বলেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন উল্লেখ করেছেন যে, এফ-১৬ বিমান ২০২৪ সালের বসন্তের পরে ইউক্রেনে আসতে পারে। কিয়েভ বলছে, তারা ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে এসব বিমান পাওয়ার আশা করছে। একই সময়ে, ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন : ‘কোনো সিলভার বুলেট নেই, এমন একটি [অস্ত্র] সিস্টেম নেই যা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতিকে আমূল পরিবর্তন করতে পারে’। সূত্র : তাস।