হুথি হামলা ও মার্কিন প্রতিক্রিয়া দুটোই বিপজ্জনক : সউদী আরব

ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্র গড়ার অধিকার অস্বীকার অগ্রহণযোগ্য

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সবাইকে অবশ্যই ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্র গড়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। উগান্ডায় শনিবার জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টেকসই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে নিজের বিরোধী অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় অনুষ্ঠিত ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে অ্যান্তোনিও গুতেরেস জোর দিয়ে বলেন, ‘ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের জন্যে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্র গড়ার অধিকার অস্বীকার অগ্রহণযোগ্য।’ জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘এই ধরনের অবস্থান সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করবে, যা বিশ্ব শান্তির জন্যে হুমকি হিসেবে দেখা দেবে। এ ছাড়া এ কারণে মেরুকরণ এবং সর্বত্র চরমপন্থিরা উৎসাহিত হবে।’ গুতেরেস বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকার সবাইকে স্বীকৃতি দিতে হবে।’ গত ৭ই অক্টোবর ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ইসরাইলে আকস্মিক বড় ধরনের হামলা চালানোর পর ইসরাইলও গাজায় পাল্টা নির্বিচারে হামলা শুরু এবং হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করে। গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ২৪ হাজার ৯২৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় লোকদের বসবাসের অমানবিক পরিস্থিতি তৈরির নিন্দা জানিয়েছে। কারণ ইসরাইলি হামলায় অসংখ্য বাস্তুচ্যুত লোক গাজায় মানবেতর দিনযাপন করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার গুতেরেস অবিলম্বে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। অপর এক খবরে বলা হয়, লোহিত সাগরে হুথিদের আক্রমণ ও এর প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। বাড়িয়ে দিতে পারে ওই অঞ্চলের চলমান সংঘাত। বিষয়টি নিয়ে সউদী আরব ‘খুবই উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সিএনএনের জন্য ফরিদ জাকারিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আমরা অবশ্যই খুব উদ্বিগ্ন। আপনি জানেন যে আমরা এ অঞ্চলে খুব কঠিন ও বিপজ্জনক সময়ে আছি। সে কারণেই আমরা উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানাচ্ছি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লোহিত সাগর ও আশপাশের অঞ্চলে জাহাজে ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠীর হামলায় এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য চলাচলকে মন্থর করে দিয়েছে। এছাড়া গাজায় যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের অনমনীয় অবস্থান সংকট গভীর করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নৌ চলাচলের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে সউদী আরব এবং এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে চায় তারা। প্রিন্স ফয়সাল বলেন, অবশ্যই আমরা চলাচলের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। একে রক্ষা করা দরকার। তবে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাও রক্ষা করতে হবে। তাই সংঘাত যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। ইয়েমেনের বেশির ভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে হুথিরা। এ গোষ্ঠী বলছে, গাজায় ইসরাইলের হামলার শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে লোহিত সাগরে পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বাণিজ্য পথে হামলা ঠেকানোর পাশাপাশি ইয়েমেনে আক্রমণ করছে। এছাড়া সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে ফের ‘সন্ত্রাসী’ তালিকায় জায়গা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। গত ১৮ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে। এ সংঘর্ষ হামাস-শাসিত গাজার বাইরেও সংঘর্ষ সম্প্রসারণের ঝুঁকি তৈরি করবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। গত তিন মাসে অবরুদ্ধে এ ছিটমহলে ইসরাইলি হামরায় প্রায় ২৬ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। যা গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার এক শতাংশেরও বেশি। এছাড়া গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নিহত হন। পরে আরো কয়েকশ ইসরাইলি সেনা গাজায় প্রাণ হারিয়েছে। সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ট্রাম্পের আদেশে তিন গণমাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধ
ইসরায়েলের সমর্থন বন্ধ করুন, ইয়েমেনে হত্যা থামান: ট্রাম্পকে ইরানের হুঁশিয়ারি
ভয়েস অব আমেরিকার ১৩ শতাধিক কর্মীকে পাঠানো হলো ছুটিতে
মিয়ানমারে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ১২, আতঙ্কে স্থানীয়রা
মহাকাশ থেকে ফেরার অপেক্ষায় সুনীতাদের উদ্ধার অভিযানে মাস্কের স্পেসএক্স
আরও
X

আরও পড়ুন

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের উৎপাত বাংলাদেশের দূতাবাস গুলোতে, এ দায় কার?

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের উৎপাত বাংলাদেশের দূতাবাস গুলোতে, এ দায় কার?

কলাপাড়ায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

কলাপাড়ায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

যে কারণে ম্যাচ বয়কটের হুমকি রিয়াল কোচের

যে কারণে ম্যাচ বয়কটের হুমকি রিয়াল কোচের

পাংশায় বৈদেশিক মুদ্রা সহ এক চোরাকারবারী গ্রেপ্তার

পাংশায় বৈদেশিক মুদ্রা সহ এক চোরাকারবারী গ্রেপ্তার

দ্রুত রায় কার্যকর চান আবরার ফাহাদের বাবা

দ্রুত রায় কার্যকর চান আবরার ফাহাদের বাবা

‘আবরার ফাহাদ হত্যার রায় ছাত্র রাজনীতির জন্য কড়া বার্তা’

‘আবরার ফাহাদ হত্যার রায় ছাত্র রাজনীতির জন্য কড়া বার্তা’

পর্তুগালে বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তাদের ঈদ মেলা

পর্তুগালে বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তাদের ঈদ মেলা

ঢাকা ছাড়ার আগে প্রধান উপদেষ্টাকে গুতেরেসের ফোন, যা বললেন

ঢাকা ছাড়ার আগে প্রধান উপদেষ্টাকে গুতেরেসের ফোন, যা বললেন

একদিন বন্ধের পরে আজ সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

একদিন বন্ধের পরে আজ সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

বাউফলে পিটুনিতে নিহত ডাকাতের পরিচয় পাওয়া গেছে

বাউফলে পিটুনিতে নিহত ডাকাতের পরিচয় পাওয়া গেছে

ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ করার সুপারিশ সিপিডির

ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ করার সুপারিশ সিপিডির

ট্রাম্পের আদেশে তিন গণমাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধ

ট্রাম্পের আদেশে তিন গণমাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধ

ইসরায়েলের সমর্থন বন্ধ করুন, ইয়েমেনে হত্যা থামান: ট্রাম্পকে ইরানের হুঁশিয়ারি

ইসরায়েলের সমর্থন বন্ধ করুন, ইয়েমেনে হত্যা থামান: ট্রাম্পকে ইরানের হুঁশিয়ারি

হঠাৎ বুকে ব্যাথা, হাসপাতালে এ আর রহমান

হঠাৎ বুকে ব্যাথা, হাসপাতালে এ আর রহমান

মশার কয়েল থেকে আগুন লেগে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

মশার কয়েল থেকে আগুন লেগে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

মাগুরায় সেনা বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ তিনজন গ্রেফতার

মাগুরায় সেনা বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ তিনজন গ্রেফতার

ভয়েস অব আমেরিকার ১৩ শতাধিক কর্মীকে পাঠানো হলো ছুটিতে

ভয়েস অব আমেরিকার ১৩ শতাধিক কর্মীকে পাঠানো হলো ছুটিতে

মে মাসে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে 'ভয়েস অব জুনুন'

মে মাসে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে 'ভয়েস অব জুনুন'

রাজশাহীর নিউমার্কেটে আগুন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী আহত

রাজশাহীর নিউমার্কেটে আগুন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী আহত

আজ বিএনপি'র প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী

আজ বিএনপি'র প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী