ঢাকা   রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ১২ কার্তিক ১৪৩১

আইএমএফের উদ্বেগ, ঋণ নিয়ে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে নিম্ন আয়ের দেশগুলো

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৪ এএম

 বিশ্বজুড়ে ঋণের বোঝা বাড়ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর। অতিরিক্ত ঋণের চাপে আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে অনেক দেশ। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সম্প্রতি আইএমএফের শেয়ারহোল্ডাররা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। চলতি সপ্তাহে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের একাধিক প্রতিবেদনে নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশগুলো কভিড মহামারী ও বিশ্বব্যাপী চলমান নানা সংকট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় ২০২৪ সালে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ। গত জানুয়ারিতে দেয়া ৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়েছে সংস্থাটি। পৃথক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বিশ্বের ৭৫টি দরিদ্র দেশের প্রায় অর্ধেকেই ধনী দেশগুলোর তুলনায় আয় ব্যবধান ব্যাপকভাবে বাড়ছে। আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘সাম্প্রতিক ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে সহায়তা জোরদার করতে কাজ করছে আইএমএফ।’ ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ও সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী এবং আইএমএফের স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আল জাদান উভয়ই জানান, চলতি সপ্তাহে আইএমএফ কর্তৃক প্রণয়নকৃত নীতিমালা অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত ও সহজ করতে সহায়তা করবে। জর্জিয়েভা বলেন, ‘আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক আয়োজিত চলতি সপ্তাহের বৈশ্বিক সার্বভৌম ঋণসংক্রান্ত গোলটেবিল বৈঠকে ঋণ পুনর্গঠনের সময়সীমা নির্ধারণ ও ঋণদাতাদের তুলনাযোগ্যতা নিশ্চিত করার নীতিমালার বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে।’ তিনি জানান, উচ্চ ঋণ আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের দেশগুলোসহ নিম্ন আয়ের অনেক দেশের জন্য একটি বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশগুলো এখন গড়ে ১২ শতাংশ ঋণের মুখোমুখি, যা এক দশক আগেও ছিল ৫ শতাংশ। জর্জিয়েভা বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো কিছু দেশের মোট আয়ের ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এর মানে দেশগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ও কর্মসংস্থান তৈরিতে বিনিয়োগের খুব কমই সুযোগ পাচ্ছে।’ এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি আইএমএফের পরামর্শ হলো, মূল্যম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর বৃদ্ধি, ভোক্তা ব্যয় কমানো ও স্থানীয় পুঁজিবাজারের উন্নয়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি করতে হবে। বুলগেরিয়ান অর্থনীতিবিদ আইওলান্ডা ফ্রেসনিলো বলেন, ‘দেশগুলোকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নিজেদের আরো আকর্ষণীয় করে তোলা দরকার। এক্ষেত্রে আইএমএফ তাদের সহায়তা করতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সার্বভৌম ঋণের প্রবাহ মোকাবেলা করার জন্য জাতিসংঘের উচিত একটি বহুপক্ষীয় আইনি কাঠামো বাস্তবায়ন করা। যেভাবে ট্যাক্স করপোরেশন পরিচালনায় নতুন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।’ তিনি জানান, বর্তমান কাঠামোটি খুবইক্ষুদ্র পরিসরে রয়েছে। এটিকে বৃহত্তর পরিসরে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশের অবক্ষয় ও মানবাধিকার বিবেচনায় নিয়ে প্রণয়ন করা উচিত। এদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলো যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ট্রেজারি আন্ডার সেক্রেটারি জেসি শামবাঘ। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০টি দেশ ২০২২ সালে বাহ্যিক পাবলিক ঋণের বহিঃপ্রবাহ দেখেছিল। ২০২৩ সালে এ প্রবাহ আরো খারাপ হতে পারে।’ আইএমএফ।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বেনাপোলে গৃহবধূকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা, আটক -৪

বেনাপোলে গৃহবধূকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা, আটক -৪

এত সংস্কারের কথা হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

এত সংস্কারের কথা হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সিটি ব্যাংক এর এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে দেয়া যাবে মেটলাইফের প্রিমিয়াম

সিটি ব্যাংক এর এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে দেয়া যাবে মেটলাইফের প্রিমিয়াম

বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ

বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর একসঙ্গে তিন ছেলের জন্ম, দর্শকের উপচে পড়া ভীর

সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর একসঙ্গে তিন ছেলের জন্ম, দর্শকের উপচে পড়া ভীর

গৌরনদীতে শিক্ষকের চড়থাপ্পরে পরীক্ষাথীর্র কানের পর্দা ফেটে গুরুতর আহত

গৌরনদীতে শিক্ষকের চড়থাপ্পরে পরীক্ষাথীর্র কানের পর্দা ফেটে গুরুতর আহত

প্রেসিডেন্টের অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি

প্রেসিডেন্টের অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি

নোয়াখালীতে গাছের ঢাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু

নোয়াখালীতে গাছের ঢাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু

প্রেসিডেন্ট অপসারণ: ‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত’

প্রেসিডেন্ট অপসারণ: ‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত’

ডিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ভারতের মাহিন্দ্রা গাড়ি

ডিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ভারতের মাহিন্দ্রা গাড়ি

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা - সিকৃবি ভিসি ড. মো. আলিমুল ইসলাম

গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা - সিকৃবি ভিসি ড. মো. আলিমুল ইসলাম

মারাত্মক শব্দদূষণ

মারাত্মক শব্দদূষণ

তারেক রহমানের ঐতিহাসিক দায়

তারেক রহমানের ঐতিহাসিক দায়

দলে গণতন্ত্র চর্চা অপরিহার্য

দলে গণতন্ত্র চর্চা অপরিহার্য

বিএনপি এখন সংশোধিত -জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি

বিএনপি এখন সংশোধিত -জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি

রফতানির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

রফতানির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা

আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা

মাওবাদীদের আত্মসমর্পণে আল্টিমেটাম দিলো মোদি সরকার

মাওবাদীদের আত্মসমর্পণে আল্টিমেটাম দিলো মোদি সরকার