ঢাকা   সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ | ১৩ কার্তিক ১৪৩১

হাত ও চোখ বেঁধে ডায়াপার পরিয়ে ফেলে রাখা হয় ফিলিস্তিনিদের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১২ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৪, ১২:০৩ এএম

ইসরাইলের নেগেভ মরুভূমিতে থাকা কারাগারটিতে এখন বন্দির সংখ্যা অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি। এই কারাগারে কর্মরত এক ইসরাইলি বন্দিদের দুটি ছবি তুলেছিলেন। সেই দৃশ্য এখন তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। একটি ছবিতে দেখা গেছে, ধূসর ট্র্যাকস্যুট পরা ফিলিস্তিনি পুরুষদের সারি বেঁধে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা একটি জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের সবার চোখ বাঁধা। তাদের মাথার ওপর ফ্লাডলাইটের তীব্র আলো। কারগারটিতে কর্মরত এক ইসরাইলি জানিয়েছেন, বন্দিদের রাখার স্থানটি দুর্গন্ধে পূর্ণ। এখানে পুরুষদের কথা বলা নিষেধ। তাই তারা নিজের সঙ্গে নিজেই বিড়বিড় করে কথা বলেন। ওই ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল তাদের যেন নড়াচড়া করতে দেওয়া না হয়। তাদের সোজা হয়ে বসতে হবে। তাদের কথা বলতে দেওয়া হবে না। তাদের চোখ বাঁধা থাকবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, রক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল চিৎকার করে ‘উসকট’ বলতে,যার অর্থ চুপ থাক এবং ‘সমস্যাযুক্ত লোকদের বাছাই করতে এবং তাদের শাস্তি দিতে।’ এখানে থাকা অনেক বন্দির হাতে সারাক্ষণ হাতকড়া থাকে। টানা আবদ্ধ থাকায় অনেক সময় অকেজো হয়ে যায় বিধায় বন্দিদের হাত কেটে ফেলতে হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য এই বন্দিশিবির গবেষণার স্বর্গরাজ্য। তাদের আনাড়ি চিকিৎসার কারণে বন্দিদের পঁচন ধরে যাওয়া অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়। এখানকার বাতাসে ভেসে বেড়ায় বন্দিদের পঁচে যাওয়া অঙ্গের দুর্গন্ধ। সিএনএন গোপন তথ্য ফাঁসকারী তিনজন ইসরাইলির সঙ্গে কথা বলেছে। তারা গাজায় ইসরাইলের কট্টরপন্থী নীতির সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে আইনি প্রতিক্রিয়া এবং প্রতিশোধের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই কথা বলেছেন। তবে তারা কেউ নিজেদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি। তাদের বিবরণ অনুসারে, গাজা সীমান্ত থেকে প্রায় ১৮ মাইল দূরে অবস্থিত কারাগারটি দুই ভাগে বিভক্ত- একটি অংশে গাজা থেকে আনা প্রায় ৭০জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে চরম শারীরিক নিপীড়নের মধ্যে রাখা হয় এবং একটি ফিল্ড হাসপাতাল যেখানে আহত বন্দিদের তাদের বিছানায় বাঁধা হয়। এই বন্দিদের ডায়াপার পরিয়ে রাখা হয় এবং স্ট্র এর মাধ্যমে খাওয়ানো হয়। হাসপাতালের অংশে কাজ করা এক ইসরাইলি বলেন, ‘মানুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এমন সবকিছু তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের জন্য এদের মারাধর করা হয় না। প্রতিশোধের জন্য তাদের মারধর করা হয়। এটি হচ্ছে, ৭ অক্টোবর যা করেছিল (ফিলিস্তিনিরা) তার জন্য শাস্তি এবং শিবিরে আচরণের শাস্তি।’ কারাগারটিতে রক্ষী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা আরেক ইসরাইলি জানান, রাতে রক্ষীরা ঘুমন্ত বন্দিদের ওপর কুকুর ছেড়ে দিত। বন্দিদের সেলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারত সেনারা। এতে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়তো বন্দিরা। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি চিকিৎসক আল-রান বলেন, ‘আমাদের যখন তার দিয়ে বেঁধে আটকানো হয়েছিল, তখন তারা কুকুরগুলোকে ছেড়ে দিত। এগুলো আমাদের মধ্যে চলাচল করতো এবং আমাদের শরীরের ওপর দিয়ে হেটে যেত। আপনি আপনার পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকবেন, আপনার মুখ মাটিতে চাপা থাকবে। আপনি নড়াচড়া করতে পারবেন না এবং তারা আপনার উপরে চলে যাচ্ছে।’ ইসরাইলি ওই কারারক্ষী বলেন, ‘এটি ছিল সামরিক পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট যারা তথাকথিত অনুসন্ধান চালাতো। কিন্তু আদতে এটি তাদের আঘাত করার একটি অজুহাত ছিল। এটা একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ছিল। মানুষের চিৎকার আর কুকুরের ঘেউ ঘেউ।’ সিএনএন।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

লগি-বৈঠার হত্যাযজ্ঞ ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম আওয়ামী বর্বরতা : ডা. ইরান

লগি-বৈঠার হত্যাযজ্ঞ ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম আওয়ামী বর্বরতা : ডা. ইরান

দৌলতদিয়ার শীর্ষ মাদক স¤্রাট জাহাঙ্গীর হেরোইন সহ গ্রেপ্তার  পালিয়েছে ২ মাদক ব্যবসায়ী

দৌলতদিয়ার শীর্ষ মাদক স¤্রাট জাহাঙ্গীর হেরোইন সহ গ্রেপ্তার পালিয়েছে ২ মাদক ব্যবসায়ী

ভোলার তজুমুদ্দিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু

ভোলার তজুমুদ্দিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু

শেখ হাসিনাকে রাজনীতির জন্য নয়,ফাঁসির বিচারের জন্য দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে

শেখ হাসিনাকে রাজনীতির জন্য নয়,ফাঁসির বিচারের জন্য দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে

বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা ও শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনায় ৮১ জন অভিযুক্ত

বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা ও শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনায় ৮১ জন অভিযুক্ত

গণভবনকে দ্রুত জাদুঘরে রূপান্তরের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

গণভবনকে দ্রুত জাদুঘরে রূপান্তরের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

১৬ বছরে জেল জুলুম নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামী পালায় নাই অথচ আওয়ামী লীগ পালায়ে গেছে

১৬ বছরে জেল জুলুম নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামী পালায় নাই অথচ আওয়ামী লীগ পালায়ে গেছে

কে হচ্ছেন এবারের বর্ষসেরা

কে হচ্ছেন এবারের বর্ষসেরা

কালিয়াকৈরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নববধূ নিহত

কালিয়াকৈরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নববধূ নিহত

নিত্যপণ্যের বাজারে ঊর্ধ্বগতি, স্বস্তিতে নেই জনগণ : বাংলাদেশ ন্যাপ

নিত্যপণ্যের বাজারে ঊর্ধ্বগতি, স্বস্তিতে নেই জনগণ : বাংলাদেশ ন্যাপ

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হলেও, গ্রুপিং বিলুপ্ত হয়নি নেতারা শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরে ব্যস্ত

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হলেও, গ্রুপিং বিলুপ্ত হয়নি নেতারা শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরে ব্যস্ত

ছাত্র-জনতার হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা এখনো বহাল

ছাত্র-জনতার হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা এখনো বহাল

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক নেই একমাস

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক নেই একমাস

মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় ৩১ জন আটক

মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় ৩১ জন আটক

ইসরায়েলকে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান মিশরের

ইসরায়েলকে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান মিশরের

২৮ অক্টোবর পল্টনসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে- খুলনায় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ

২৮ অক্টোবর পল্টনসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে- খুলনায় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ

শিশুদের লালন-পালনের জন্য সেরা পাঁচ দেশ

শিশুদের লালন-পালনের জন্য সেরা পাঁচ দেশ

মনিরামপুরে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ

মনিরামপুরে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ

মাদারীপুরে শিশু ধর্ষন মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেছে ‌র‌্যাব

মাদারীপুরে শিশু ধর্ষন মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেছে ‌র‌্যাব

বিজমায়েস্ট্রোজ-ইউএফএলপি ২০২৪: তরুণরা উপভোগ করবে বাস্তব ব্যবসার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা

বিজমায়েস্ট্রোজ-ইউএফএলপি ২০২৪: তরুণরা উপভোগ করবে বাস্তব ব্যবসার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা