শত কোটি ডলারের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
১৬ মে ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ মে ২০২৪, ১২:০১ এএম
বোমার চালান স্থগিত করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইসরাইলকে অন্যান্য অস্ত্রের সরবরাহ ও সার্বিক সামরিক সমর্থন দিয়ে যাবেন তারা। তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে আরও ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাবে। প্রশাসনের তরফ থেকে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ আইনপ্রণেতাকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আর মঙ্গলবার বিষয়টি প্রকাশ করেছে কংগ্রেসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র। তবে কত দ্রুত এসব অস্ত্রশস্ত্র ও গোলা পাঠানো হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফিলিস্তিনের গাজার ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরে ইসরাইলের সর্বাত্মক স্থল অভিযান শুরুর আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে দেশটিতে চলতি মাসে অস্ত্রের এক চালান পাঠানোর বিষয়টি স্থগিত করে মার্কিন প্রশাসন। এরই মধ্যে দেশটিকে আবার বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গোলা পাঠানো নিয়ে ওই তথ্য বেরিয়ে এল। স্থগিত করা চালানের মধ্যে রয়েছে ২,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত ওজনের ৩ হাজার ৫০০ বোমা। বোমার চালান স্থগিত করার কারণ হিসেবে গাজায় বেসামরিক লোকজনের হতাহতের ঘটনা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বাইডেন প্রশাসন বলেছিল, দক্ষিণ গাজার ঘনবসতিপূর্ণ রাফায়, বিশেষ করে এসব বোমার ব্যবহার ঠেকাতেই ইসরাইলকে চালান পাঠানো স্থগিত করেছে তারা।
ইসরাইলকে নতুন করে অস্ত্রসহায়তা দেয়ার যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭০ কোটি ডলারের ট্যাংকের গোলা, ৫০ কোটি ডলারের কৌশলগত সামরিক যান ও ৬ কোটি ডলারের মর্টারের গোলা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তিনটি সূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, অস্ত্রের চালান পাঠানো নিয়ে আলোচনা চলার বিষয়টি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। অস্ত্রের এ চালান কবে পাঠানো হবে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কংগ্রেসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন সূত্রের দুটি বলেছে, ইসরাইলকে সামরিক ও মানবিক সহায়তা দেয়া নিয়ে গত মাসে কংগ্রেসের পাস করা যে বিলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সই করেছেন, নতুন এ সহায়তা সেটির অংশ নয়। ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান অস্ত্র বিক্রি বা ভিন্ন কিছুর অংশ এ সহায়তা কি না, সেটিও জানা যায়নি।
এদিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলায় একদিনে আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ‘লাইফলাইন’ হিসেবে পরিচিত রাফাহ শহরে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানের পর সাড়ে লাখ ফিলিস্তিনি সেখান থেকে সরে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা বহু সপ্তাহের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা পশ্চিমা মিডিয়ার : জাতিসংঘের বরাত দিয়ে সম্প্রতি পশ্চিমা কিছু মিডিয়া দাবি করছে যে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে হিসাব দিচ্ছে তার থেকে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আসলে কম। কিন্তু জাতিসংঘ কি সত্যিই বলেছে যে, গাজায় ইসরাইলের হাতে কম লোক নিহত হয়েছে? এর সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে, না।
ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) ৮ মে একটি ইনফোগ্রাফিক প্রকাশ করেছে যা মোট ৩৪,৮৪৪ ফিলিস্তিনি মৃত্যুর পরিসংখ্যান উল্লেখ করেছে। এর সাথে তারা মৃত্যুর বিষয়ে জানায়: ’৩০ এপ্রিল অবধি ২৪,৬৮৬ লাশ চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে পুরুষ ১০,০০৬, ৪,৯৫৯ জন মহিলা, ৭,৭৯৭ জন শিশু এবং ১,৯২৪ জন বৃদ্ধ’। গ্রাফিকটিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (এমওএইচ) পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়েছে এবং একটি নোট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যে, পরিসংখ্যানে ‘নিখোঁজ বা ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ১০ হাজার জনের বেশি মানুষের তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয়’। শনাক্ত করা লাশের পরিসংখ্যান অনেক মিডিয়া আউটলেট দ্বারা জব্দ করা হয়েছিল কারণ জাতিসংঘ গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত নারী ও শিশুর সংখ্যা সম্পর্কে তার অনুমান ‘সংশোধন করে’। বরং, মৃতদের শনাক্ত করার ব্যাপক প্রচেষ্টায় জাতিসংঘ গাজার এমওএইচ থেকে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করছিল।
জাতিসংঘ সোমবার এটি নিশ্চিত করেছে, যখন মুখপাত্র ফারহান হক, আল-জাজিরার প্রতিনিধি গ্যাব্রিয়েল এলিজোন্ডোর একটি প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন যে, আপডেট হওয়া ব্রেকডাউনটি কেবলমাত্র ২৪,৬৮৬ জনের কথা উল্লেখ ছিল যাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আরও প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মৃতদেহ রয়েছে যাদের এখনও সম্পূর্ণ শনাক্ত করতে হবে, এবং তারপরে তাদের বিস্তারিত - কোনটি শিশু, কোনটি মহিলা - যেগুলি সম্পূর্ণ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পুনরায় তথ্য হালনাগাদ করা হবে।’
রাফাহ ছেড়েছেন সাড়ে ৫ লাখ মানুষ : ইসরাইলের সামরিক বাহিনী আক্রমণের পর সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাফাহ শহর থেকে অন্যত্র সরে গেছেন। গত বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এ দশকের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত ৭৯ হাজার ছাড়িয়েছেন। এ গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার ২২ লাখ অধিবাসী দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে বিশ্বকে জবাবদিহি করতে হবে। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পথশিশুদের নিয়ে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন
তামিমকে বিসিবির ধন্যবাদ
গণহত্যাকারীদের বিচারিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে: সারজিস
দ্বিতীয় চালানে ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার টন চাল
গাঁজা সেবনের অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
উইন্ডিজ সিরিজে পাকিস্তান দলে ৭ পরিবর্তন, নেই আফ্রিদি
সুইজারল্যান্ডে গ্লোবাল এসএমই সামিট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩-২৫ এপ্রিল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী
ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত
গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু
কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর
পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত
শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা
বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান
ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের
শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর
এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি