ঢাকা   শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮ কার্তিক ১৪৩১
পদত্যাগ করা মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রথম যৌথ বিবৃতি

গাজায় গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘জড়িত থাকার’ প্রমাণ আছে

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম

মার্কিন সরকারী কর্মকর্তারা যারা বাইডেন প্রশাসনের গাজা নীতির প্রতিবাদে প্রকাশ্যে পদত্যাগ করেছে তারা মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছেন যে, তারা ‘একটি একই বিশ্বাসে একত্রিত হয়েছেন যে প্রতিবাদ করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব’ এবং তারা এ বিষয়ে যে পদক্ষেপ নেয়া উচিত তার রূপরেখা দিয়েছেন। এটি মার্কিন সরকারের গ্রহণ করা উচিত বলে তারা মনে করেন।

১২ জন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ওই যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন মার্কিন আইন লঙ্ঘন করার মাধ্যমে ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে আসছে এবং তাদের মিত্র এদেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সরকার নানা বাহানা ও ছিদ্রপথকে ব্যবহার করছে। বাইডেন প্রশাসন ও মার্কিন পররাষ্ট্রদপ্তরের কেউই তাৎক্ষণিকভাবে তাদের এই বিবৃতির ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ এবং মিত্র ইহুদী দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় বর্তমানে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ১২ কর্মকর্তার পদত্যাগ ইসরাইলকে মার্কিন সমর্থন নিয়ে সরকারের মধ্যে অসন্তোষের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং হোয়াইট হাউস ও সামরিক বাহিনী থেকে এসব কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রে কূটনৈতিক ছত্রছায়া ও অব্যাহত অস্ত্র সরবরাহের ঘটনায় অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা ও অনাহারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অকাট্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করছে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি সমর্থনের জন্য বিদেশে এবং দেশে উভয়ই চাপের সম্মুখীন হয়েছেন - এ সংঘাতের কারণে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের জীবন হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ছিটমহল জুড়ে চরম ক্ষুধা নিয়ে এসেছে।

‘মানবিক অঞ্চলে’ ইসরাইলের বিমান হামলায় নিহত ১২ : আবারও গাজার ‘মানবিক অঞ্চলে’ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই নৃশংস হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বার্তা সংস্থা এপির বরাতে অনলাইন আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরাইলের ওই বিমান হামলায় একই পরিবারের ৯ জন সহ মোট ১২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া গাজার খান ইউনিসের শরণার্থী শিবিরগুলোতেও ইসরাইলের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এবং সেখান থেকে গাজার বাসিন্দাদের সরে যেতে বল প্রয়োগ করছে তেল আবিবের সেনারা।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, সম্প্রতি ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে ২ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি খান ইউনিসের শরণার্থী শিবির এবং তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এতে করে গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখের কাছাকাছি। বলাচলে গাজার প্রায় সকল বাসিন্দারাই কোনো না কোনোভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খান ইউনিসের ইউরোপীয়ান হাসপাতাল থেকে শত শত অসুস্থ ও আহত মানুষকেও পালাতে বাধ্য করেছে ইসরাইলি সেনারা। ইসরাইলের স্থল আক্রমণ থেকে ওই অঞ্চলের হাসপাতালগুলোকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন। অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নুর শামস শরণার্থী বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই হামলায় সেখানে ৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ওই শরণার্থী শিবিরে নারী এবং শিশুসহ নিহত হয়েছেন মোট ৬ ফিলিস্তিনি। এতে গাজায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৫৩ জনে।

হাইফায় হামলার দাবি হুথিদের : ইসরাইলের হাইফায় ‘গুরুত্বপূর্ণ’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি বিদ্রোহীরা। মঙ্গলবার তারা দাবি করেছে, ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

হুথিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। তবে কোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে সেটি প্রকাশ করেননি তিনি। গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে নিয়মিত হামলা করে আসছে হুথিরা। নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথে অসংখ্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথিরা। তাদের হামলায় দুটি নৌযান ডুবেছে, অপর একটি তারা জব্দ করেছে। এছাড়া অন্তত তিনজন ক্রু নিহত হয়েছেন। সূত্র : সিএনএন, আল-জাজিরা, রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন কোচ আমোরি

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন কোচ আমোরি

কন্যার নাম প্রকাশ করলেন রণবীর-দীপিকা দম্পতি,দিয়েছেন মিষ্টি ছবি

কন্যার নাম প্রকাশ করলেন রণবীর-দীপিকা দম্পতি,দিয়েছেন মিষ্টি ছবি

তুরস্কে বিজয়ী বাংলাদেশের হাফেজ মুয়াজকে অভিনন্দন জানালেন পীর সাহেব চরমোনাই

তুরস্কে বিজয়ী বাংলাদেশের হাফেজ মুয়াজকে অভিনন্দন জানালেন পীর সাহেব চরমোনাই

সিলেট মহানগর ‘বৈষম্য বিরোধী হকার ঐক্য পরিষদ’র ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন

সিলেট মহানগর ‘বৈষম্য বিরোধী হকার ঐক্য পরিষদ’র ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন

শেরপুরে তারে জড়িয়ে বন্য হাতির মৃত্যু

শেরপুরে তারে জড়িয়ে বন্য হাতির মৃত্যু

কাঁচা সড়কে জনদুর্ভোগ

কাঁচা সড়কে জনদুর্ভোগ

দেরি করে ভাত দেওয়ায় হত্যা

দেরি করে ভাত দেওয়ায় হত্যা

গ্রামে প্রবেশের সড়ক নেই

গ্রামে প্রবেশের সড়ক নেই

বন্য হাতি হামলা

বন্য হাতি হামলা

পলো বাওয়া উৎসব

পলো বাওয়া উৎসব

গোদাগাড়ীর মহিশালবাড়ী হাটে ময়লার স্তূপ

গোদাগাড়ীর মহিশালবাড়ী হাটে ময়লার স্তূপ

কুয়াকাটায় ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরছে

কুয়াকাটায় ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরছে

গারো পাহাড়ে কলার আবাদ

গারো পাহাড়ে কলার আবাদ

সেতুর পনেরো শতাংশ কাজ করতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

সেতুর পনেরো শতাংশ কাজ করতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

ডেঙ্গুতে ১০ মাসে মৃত্যু ৩০০

ডেঙ্গুতে ১০ মাসে মৃত্যু ৩০০

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা

স্বেচ্ছায় রক্ত ও চক্ষু দানকে উৎসাহিত করতে হবে

স্বেচ্ছায় রক্ত ও চক্ষু দানকে উৎসাহিত করতে হবে

অনন্য চিন্তক-দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ

অনন্য চিন্তক-দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে

বিদ্যুৎ সংকট আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে

বিদ্যুৎ সংকট আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে