সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে গাজায় নিহতের সংখ্যা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ এএম

গাজায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। গাজা, পশ্চিমতীর সবখানে ইসরাইলি সেনারা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। সর্বশেষ গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে নুসেইরাতে ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। গাজা উপত্যকা জুড়ে এই সংখ্যা কমপক্ষে ৩৪। মাঠপর্যায়ে মেডিকেল সূত্রগুলো এই তথ্য দিয়েছে। এ নিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬০২ ছাড়িয়ে গেছে। আহতের সংখ্যা এক লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। জেনিন শহরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে ওই শহরের বাসিন্দারা খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। কয়েক দশকের মধ্যে পশ্চিমতীরে ইসরাইলের সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক অভিযানে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফিলিস্তিনে শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের এজেন্সি ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, বুধবার পশ্চিমতীরে অভিযান শুরু করে ইসরাইল। তারপর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। এর মধ্যে আছেন একজন বিকলাঙ্গ ও সাতটি শিশু। রোববার থেকে গাজায় পোলিও টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে ইসরাইল যে মাত্রায় হামলা চালাচ্ছে তাতে স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য পৌঁছানো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গ্রুপ। দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্রাজুয়েট স্টাডিজের মিডিয়া স্টাডিজ প্রোগ্রাম বিষয়ক প্রফেসর মোহামেদ এলমাসরি বলেন, গত বছর ৭ই অক্টোবরের আগে থেকেই দখলীকৃত পশ্চিম তীরে অব্যাহতভাবে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তাদের দখলদারিত্ব সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। তারা এক সময় ফিলিস্তিনি জনগণ থেকে মুক্তি পেতে চায়। এ জন্য পশ্চিমতীর এবং গাজায় তারা জাতি নিধনে নেমেছে। ইসরাইলের উদ্দেশ্যের দিক থেকে এখনই পশ্চিম তীরে তাদের যুদ্ধে যাওয়ার উপযুক্ত সময়। কারণ, গাজায় কী ঘটছে তা নিয়ে মানুষ কিছুটা বিভ্রান্ত। গাজা যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় কোনো পদক্ষেপ না থাকায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে ইসরাইল। যদি তারা গাজায় এই হত্যাকাণ্ড চালিয়ে রক্ষা পায়, তাহলে কেন তারা পশ্চিমতীরে অভিযান চালাবে না? প্রশ্ন রাখেন এলমাসরি। ওদিকে ইসরাইলের আর্মি রেডিও’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাস ইটজিওন নামের ইসরাইলি বসতির কাছে সন্দেহজনক ঘোরাফেরার কারণে ৬ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। শুক্রবার দিবাগত রাতে গাস ইটজিওনে দুটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এর কাছাকাছি ইসরাইলি বাহিনী কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে দেখতে পায়। তাদের মধ্যে দু’জনকে হত্যা করেছে তারা। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি জাতি নিধন চালানো হয়। একে বলা হয় নাকবা। এর মধ্যদিয়ে ইসরাইলের সৃষ্টি হয়। তারপর সৃষ্টি করা হয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবির। গাজায় ইসরাইলের হামলার আগে গাজা ছিল ঘনবসতিপূর্ণ। নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বসবাস করতেন ৮৫,৪০৯ জন ফিলিস্তিনি। এই শিবির দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের অসংখ্য হামলার টার্গেটে ছিল। পশ্চিমতীরে গণহারে অভিযান চালানোর নিন্দা জানিয়েছেন প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের সেক্রেটারি জেনারেল মুস্তাফা বারগোতি। তিনি বলেছেন, এর মধ্যদিয়ে আরও ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করে তাদের ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে ইসরাইল। এটা হলো আরও ভূমি দখল করে তার নিয়ন্ত্রণ নেয়া। মুস্তাফা আরও বলেন, ইসরাইলের লক্ষ্য হলো যেকোনো রকম প্রতিরোধকে ভেঙে দেয়া। তাদের এই রাজনৈতিক পরিকল্পনা পশ্চিমতীরে বসতি সম্প্রসারণ ও তা দখল করে নেয়া ছাড়া আর কিছু নয়। কার্যত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরাইল। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বন্দরের অন্ধকার কেটে যাবে, দ্রুত আলো ফিরবে- এইচ এম শফিকুজ্জামান

বন্দরের অন্ধকার কেটে যাবে, দ্রুত আলো ফিরবে- এইচ এম শফিকুজ্জামান

নিষিদ্ধ পল্লীতে কেমন অভিজ্ঞতা ছিল অভিনেত্রী রুনা খানের

নিষিদ্ধ পল্লীতে কেমন অভিজ্ঞতা ছিল অভিনেত্রী রুনা খানের

ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারকে গতিশীল করতে হবে-  উপদেষ্টা শারমীন

ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারকে গতিশীল করতে হবে- উপদেষ্টা শারমীন

এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৭ নির্দেশনা

এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৭ নির্দেশনা

পাংশায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে  মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

পাংশায় মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে  মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

শফিক রেহমান-রহমান মুরুব্বী এক্সপোজড

শফিক রেহমান-রহমান মুরুব্বী এক্সপোজড

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

মেহেরপুর জেলা বিএনপির নেতাদের বাগোয়ান বাসীর সংবর্ধনা

মেহেরপুর জেলা বিএনপির নেতাদের বাগোয়ান বাসীর সংবর্ধনা

জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন

জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন

কৃষির সাথে যেমন কৃষকের সম্পর্ক তেমনি দেশের জনগনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক :  শামীম তালুকদার

কৃষির সাথে যেমন কৃষকের সম্পর্ক তেমনি দেশের জনগনের সাথে বিএনপির সম্পর্ক : শামীম তালুকদার

৪২ চার ও ১৬ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪৬!

৪২ চার ও ১৬ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪৬!

কুমারখালীতে টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ

কুমারখালীতে টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ

দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কৃষকের স্বার্থে কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি'

দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কৃষকের স্বার্থে কোনো সংগঠন গড়ে ওঠেনি'

নিজের বিয়ে নিয়ে কি বললেন পড়শী

নিজের বিয়ে নিয়ে কি বললেন পড়শী

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী  গ্রেফতার

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী গ্রেফতার

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

ফেব্রুয়ারিতে পার্স-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান

ফেব্রুয়ারিতে পার্স-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর