ট্রাম্পের সহায়তায় পুরো পশ্চিম তীর দখলের প্রত্যাশা ইসরাইলের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম

অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুততর সময়ে ইহুদি বসতি স্থাপনের নতুন রেকর্ড গড়ার পর কিছু সংখ্যক ইসরাইলি এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের দিকে তাকিয়ে আছেন। যে অঞ্চলটিকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কেন্দ্র বলে মনে করা হয়, তারা চাচ্ছেন সেখানে ইসরাইলের সার্বভৌম ক্ষমতা। দুই বছর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ফেরার পর পশ্চিম তীরে দ্রুতই ইহুদি বসতি স্থাপন বেড়েছে। এ সময় তাদের ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু সরকার বসতি স্থাপনকারীদের জোরালো সমর্থন দিয়ে আসছে। বর্তমানে পশ্চিম তীরের জর্ডান ভ্যালিতে কয়েকটি টিলার চূড়ায় ইসরাইলের পতাকা উড়তে দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা। তারা আরও ভূমি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। শনিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। বসতি স্থাপনকারীদের অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন চলাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য প্রার্থনাও করেছিলেন। পশ্চিম তীরের শিলো এলাকার বসতি স্থাপনকারী ইসরাইলি মেদাদ বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এ জন্য আমরা (ট্রাম্পের জয়ে) অনেকটাই উচ্ছ্বসিত।’ ক্ষমতায় এলে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে সউদী আরবের সঙ্গে ইসরাইলের বিতর্কিত ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ড’ চুক্তি করতে চাইবেন। ওয়াশিংটনের স্বপ্ন ইসরাইলের সঙ্গে সউদীর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সউদী আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের বিরোধী। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান- উভয় পার্টির প্রশাসনে মধ্যপ্রাচ্যে মধ্য¯তাকারীর ভূমিকা পালন করা ডেনিস রস বলেন, ট্রাম্পের অগ্রাধিকারমূলক কাজ হবে আব্রাহাম অ্যাকর্ড সম্প্রসারণ। ইসরাইল আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম তীরকে গিলে ফেললে সউদীরা বিষয়টি ভালোভাবে নেবে না; তারা ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত হতে চাইবে না। পুরোপুরি অধিগ্রহণ ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকেও কবর দেবে। এর ফলে গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে যে যুদ্ধ চলছে, তা থামানোও কঠিন হবে। এ যুদ্ধের জেরে এখন লেবাননেও হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। ট্রাম্প প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন। এর মাধ্যমে তিনি ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে আসেন। ২০২০ সালে তিনি বিদ্যমান সীমানার মধ্যেই একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন, যা-তে দখলকৃত এলাকায় ইসরাইলের সার্বভৌমত্বের দাবি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি নিয়ে তিনি কোনো পরিকল্পনার কথা জানাননি। ট্রাম্পের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিটও ফিলিস্তিন-ইসরাইল নীতি নিয়ে কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ট্রাম্প সামর্থ্য অনুযায়ী বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন। বসতি স্থাপনকারীদের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মোরিচ গত সপ্তাহে বলেছেন, তার প্রত্যাশা ইসরাইল পুরো পশ্চিম তীর দখল করে নেবে। তার প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তায় আগামী বছরের মধ্যে ইহুদিরা পুরো পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ নেবে। পশ্চিম তীরের ইহুদিদের সংগঠন ইয়াশা কাউন্সিলের প্রধান ইসরাইল আঞ্জ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরাইল সরকারকে আরও ‘এগিয়ে যেতে’ সহায়তা করবে। ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন অধিকৃত শিলো এলাকায় ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য প্রার্থনারও আয়োজন করেন তিনি। রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার