শেষ রক্ষা হলো না দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম

শেষ রক্ষা হলো না, অবশেষে অভিশংসিতই হতে হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলকে। দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতাদের ভোটে তিনি অভিশংসিত হয়েছেন। সম্প্রতি সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তিনি। এর জের ধরে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাকে অভিশংসের জন্য বিরোধীরা অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর আগে ইউনের অভিশংসনের জন্য দেশটির সংসদের সামনে অবস্থান নেয় হাজার হাজার মানুষ। তবে প্রথম অভিশংসন থেকে সৌভাগ্যক্রমে রেহাই পেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল। কারণ ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা ভোটাভুটির দিন সংসদ থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। তবে এখন অপসারণের জন্য দ্বিতীয় বারের মতো অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করে বিরোধীরা। এর আগে ইউন তার রাজনৈতিক বিরোধীদের সমালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো। এর আগে খবরে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসন ভোটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। দেশটিতে সামরিক শাসন জারির চেষ্টার কারণে বিরোধী দলগুলো তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) প্রথম তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের চেষ্টা চালিয়েছিল। গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন। যদিও জনগণের চাপের মুখে ছয় ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি। তার এই পদক্ষেপের কারণে দেশটির জনগণ হতবাক হয়ে পড়ে। তার নিজ দলের মধ্যেও বিভক্তি তৈরি হয়। মেয়াদের অর্ধেক পথে এসে ঝুঁকির মুখে পড়ে তার প্রেসিডেন্ট পদ। ইউন সুক-ইওল সামরিক শাসন জারির পর তার অভিশংসনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। সেনাবাহিনী ও পুলিশকে উপেক্ষা করেই বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন ভোট হয়। তবে সে ভোটে তিনি উতরে যান। যদিও বিষয়টি দক্ষিণ কোরিয়াকে সাংবিধানিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। আইন ভঙ্গের কারণে দেশজুড়ে তার পদত্যাগের ব্যাপক দাবি উঠছে। বিরোধী দলগুলো শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় অভিশংসন ভোটের পরিকল্পনা করেছে। ভোটকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিক্ষোভের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। প্রথমবার বিরোধী দলগুলো যে অভিশংসন প্রস্তাব এনেছিল, তা পাস করতে পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের মধ্যে ২০০ ভোটের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এর আগে ইউনের দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) অভিশংসন প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করায় তা ব্যর্থ হয়। এর পর থেকে পিপিপির নেতা হ্যান ডং-হুন দলের সদস্যদের দ্বিতীয় দফা ভোটে অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। অন্তত সাতজন পিপিপি নেতা বলেছেন, তারা প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের জন্য ভোট দেবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার এক-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টে ৩০০ আসনের ১৯২টি বিরোধী দলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। অভিশংসন কার্যকর হওয়ার জন্য পার্লামেন্ট সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। সে হিসেবে বিরোধী দলকে পিপিপির অন্তত ৮টি ভোট পেতে হবে। ইউনের দল পিপল পাওয়ার পার্টির কয়েকজন নেতা অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বললেও শুক্রবার দলটি জানিয়েছে, এবারের ভোটেও তারা অভিশংসন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে। অভিশংসিত হলে সাংবিধানিক আদালত তাকে অপসারণ বা পুনর্বহাল করার আগপর্যন্ত ইউন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্তৃত্ব হারাবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান অনুযায়ী, যদি আদালত ইউনকে অপসারণ করেন বা তিনি পদত্যাগ করেন, তাহলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। বিবিসি, রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

পথশিশুদের নিয়ে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন

পথশিশুদের নিয়ে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন

তামিমকে বিসিবির ধন্যবাদ

তামিমকে বিসিবির ধন্যবাদ

গণহত্যাকারীদের বিচারিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে: সারজিস

গণহত্যাকারীদের বিচারিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে: সারজিস

দ্বিতীয় চালানে ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার টন চাল

দ্বিতীয় চালানে ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার টন চাল

গাঁজা সেবনের অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে শাস্তি

গাঁজা সেবনের অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে শাস্তি

উইন্ডিজ সিরিজে পাকিস্তান দলে ৭ পরিবর্তন, নেই আফ্রিদি

উইন্ডিজ সিরিজে পাকিস্তান দলে ৭ পরিবর্তন, নেই আফ্রিদি

সুইজারল্যান্ডে গ্লোবাল এসএমই সামিট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩-২৫ এপ্রিল

সুইজারল্যান্ডে গ্লোবাল এসএমই সামিট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩-২৫ এপ্রিল

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী

ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা

ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত

গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু

গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু

কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর

কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর

পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার

পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত

শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা

শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা

বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান

বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান

ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের

ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের

শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ

শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর

এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌

এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌