বেছে বেছে বিলকিসের ধর্ষকদেরই মুক্তি কেন? গুজরাট সরকারকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
১৮ আগস্ট ২০২৩, ০২:০৭ পিএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০২:০৭ পিএম
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে রীতিমতো চাপে গুজরাট প্রশাসন। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, বিলকিস বানো গণধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকে বাছাই করেই কেন রেহাই দেয়া হয়েছে জেল থেকে?
২০০২ সালের গোধরাকাণ্ড ও তার পরবর্তী সময়ের গুজরাট সহিংসতায় গণধর্ষণের স্বীকার হন বিলকিস বানো। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসের গর্ভের সন্তানটিও নষ্ট হয়ে যায়। বিলকিসের চোখের সামনেই তার তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বাইয়ের সিবিআই আদালতে অপরাধীদের কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়। গত বছর ১৫ আগস্ট ওই ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। সেই প্রসঙ্গেই এদিন প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চ এদিন প্রশ্ন তোলে, ‘ওই মামলায় তিন অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড লাঘব করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। তাদের কী করে ১৪ বছর সাজা কাটানোর পর মুক্তি দেয়া হয়? তেমনই যদি হয়, তা হলে অন্য আসামিদের কেন রেহাই দেয়া হল না? কেন বাছাই করে এই দোষীদেরই নির্দিষ্ট এই আইনের সুবিধা দেয়া হল?’
গত বছর বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের মুক্তি দেয়া ঘিরে গোটা ভারতেই প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। বিলকিস ও তার পরিবার কেন অভিযুক্তদের রেহাই দেয়া হল এই মর্মে ফের বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘১৪ বছর পর দোষীদের রেহাই দেয়ার ক্ষেত্রে আইন যে যুক্তি দেখিয়েছে তাতে অপরাধীদের সুযোগ দেয়া হয় নিজেদের শুধরে নেয়ার। যাতে তারা অপরাধ থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। সেই সুযোগ দেয়া হলে তা সকলের প্রাপ্য হওয়া উচিত। কিন্তু দাগি অপরাধীদের ক্ষেত্রে তা কতটা কার্যকর হতে পারে?’ গুজরাট দাঙ্গার পরপরই মামলাগুলিকে গুজরাট থেকে মহারাষ্ট্রে স্থানান্তরিত করা হয় যাতে সুবিচার ও নিরপেক্ষ রায় নিশ্চিত করা যায়। যে বিচারক অভিযুক্তদের দণ্ডাদেশ দেন, তিনিও আসামিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আদালতে গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে অতর্কিত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু বলেন, এ বিষয়ে সামগ্রিকভাবে কোনও মন্তব্য করা বা জবাব দেয়া ঠিক হবে না। রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। যদিও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা দাবি করেছেন, তাদের নিয়ম মেনেই মুক্তি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের ১৯৯২ সালের আইন অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা ন্যূনতম ১৪ বছর তার বেশি সময় সাজা কাটানোর পর তাদের আচরণের ভিত্তিতে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে সেই রেহাইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় কোর্ট। বিলকিস বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্ত ফের দাবি করেন অন্যায় ভাবে আইনের সুবিধা নিয়ে রেহাই দেয়া হয়েছে ওই দোষীদের। যদিও গুজরাট সরকারের তরফে গঠিত প্যানেল আগেই এ বিষয়ে মন্তব্য করেছিল ‘সংস্কারি ব্রাহ্মণ, যারা ইতিমধ্যেই ১৪ বছর সাজা ভোগ করেছে এবং জেলে যাদের আচরণ ভাল ছিল তাদের মুক্তি দেয়া যায়।’ এরই পালটা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিলকিস, পরবর্তী শুনানি ২৪ আগস্ট। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ দাবানল: ক্ষয়ক্ষতি শত বিলিয়ন ছাড়ানোর আশংকা
নামের কারণে ১৬ বছর বঞ্চিত সৈয়দপুরের শহীদ জিয়া শিশু নিকেতন
মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি'র উঠান বৈঠক ও শীত বস্ত্র বিতরণ
৯ ছক্কায় সাব্বিরের ৩৩ বলে ৮২
কিশোরগঞ্জে ছিনতাই করা মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর বদলে দিতেন মহসিন
দেশ এখন কঠিন সময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে: মঈন খান
ঢাকায় ইউরোপীয় দেশগুলোর ভিসা সেন্টার খোলার চেষ্টা চলমান: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
যশোরে মহাসড়ক সংস্কারসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা ঘিরে যানজট, দুঃখ প্রকাশ করল বিএনপি
মুসাফির হওয়ার জন্য নিয়ত করা প্রসঙ্গে।
বরিশালে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা