আলোচিত জিম্মি ও বন্দি মুক্তির পরের দিন গতকাল শনিবার মিসর আভাস দিয়েছে যে ইসরায়েল-হামাস সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরো দু-এক দিন বাড়তে পারে। ইসরায়েলের প্রতিবেশী মিসর বলেছে, তারা এ ব্যাপারে লড়াইরত পক্ষগুলোর কাছ থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত হিসেবে গতকালই আরো ১৩ ইসরায়েলি জিম্মি ও ৩৯ ফিলিস্তিনি কারাবন্দির মুক্তি পেয়েছে। তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি বিলম্বিত করে হামাস।

মিসরের রাষ্ট্রীয় তথ্যসেবার প্রধান দিয়া রাশওয়ান গতকাল বলেন, গাজায় চার দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে তাঁর দেশ সব পক্ষের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মেয়াদ বাড়লে আরো কারাবন্দি ফিলিস্তিনি এবং হামাসের হাতে জিম্মি থাকা মানুষ মুক্তি পাবে। যুদ্ধবিরতির শর্তের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো হামাসের হাতে জিম্মি ১৩ ইসরায়েলি নারী ও শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর বিনিময়ে কারামুক্তি পায় ৩৯ ফিলিস্তিনি নারী ও কিশোর-তরুণ।

তারা ইসরায়েলি সেনাদের পাথর ছুড়ে মারা এবং কথিত হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বন্দি ছিল। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে পর্যায়ক্রমে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস এবং ১৫০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছাড়বে ইসরায়েল।

এদিকে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো মিসরের রাফা ক্রসিং সীমান্তে গাজামুখী ত্রাণের ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। এদিন খাদ্য ও ওষুধের পাশাপাশি চার ট্রাক ডিজেল ও চার ট্রাক রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার গাজায় পাঠানোর অনুমতি দেয় ইসরায়েল।

এর আগে গত শুক্রবার জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে গাজায় ৬০টি ট্রাকের বহর প্রবেশ করে। গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে সেদিনই এত বড় ত্রাণবাহী গাড়িবহর সেখানে গেছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও পানির গুরুতর অভাবে গাজার বহু মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। দারিদ্র্য ও কঠোর ইসরায়েলি অবরোধের শিকার গাজায় স্বাভাবিক সময়েও জাতিসংঘ ও দাতব্য সংস্থাগুলোকে বহু ট্রাক সাহায্যসামগ্রী পাঠাতে হয়। জল, স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলের টানা বিধ্বংসী হামলার কারণে এগুলোর প্রয়োজন অনেক বেড়ে গেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে সেনাসহ এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। ২৪০ জনকে জিম্মিও করে হামাস। এর জবাবে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিশোধের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা