গাজার কোনো এলাকাকে ‘নিরাপদ’ বলা আসলে ‘বিপজ্জনক মিথ্যা বর্ণনা’ ছাড়া আর কিছু না বলে মনে করেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। উত্তরাঞ্চলে অভিযানের পর এবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরাইল। বিশেষ করে দক্ষিণের প্রধান শহর খান ইউনিসে। শহরের ভেতর অভিযান শুরুর আগে সেখানে থাকা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ। কিন্তু সরে যাওয়ার নির্দেশ পাওয়া ছয় লাখের বেশি ফিলিস্তিনির আসলে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। মঙ্গলবার ইউএন এজেন্সি ফর প্যালেস্টিন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ) এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ এক পোস্টে লেখেন, “দক্ষিণ গাজায় ছয় লাখের বেশি মানুষকে সরে যেতে বলা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকে এরইমধ্যে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। “অথচ, তারা আশ্রয় নিতে পারে এমন কোনো জায়গা আর গাজায় নেই। এমনকি, ইউএনআরডব্লিউএ, নিজেদের সক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।” বিবিসি জানায়, তারাও গাজার যেসব অঞ্চলে লড়াই চলছে সেখান থেকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ সাধারণ ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বলেছে বলে শুনেছে। যার মধ্যে খান ইউনিসের নামও রয়েছে। আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “আমরা লিফলেট ফেলেছি। যেটিতে কিউআর কোড আছে। ওই কিউআর কোড খুললে একটি ম্যাপ দেখাবে যেখানে গাজার বাসিন্দারা কোন কোন এলাকা নিরাপদ সেটা জানতে এবং সেখানে চলে যেতে পারবে।” আইডিএফ ফিলিস্তিনিদের মিশর সীমান্তের কাছে রাফাহর দিকে অথবা আল-মাওয়াসি নামে ভূমধ্যসাগর উপকূলের ছোট্ট একটি ভূখ-ে চলে যেতে বলেছে। বিবিসি জানায়, কিন্তু ফিলিস্তিনিরা কিউআর কোড দিয়ে ওই ম্যাপে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। আর জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজায় কোনো এলাকা কে ‘নিরাপদ’ বলা আসলে ‘বিপজ্জনক মিথ্যা বর্ণনা’ ছাড়া আর কিছু না। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এর মুখপাত্র জেমস এল্ডার মঙ্গলবার বিবিসিকে বলেন, “আল-মাওয়াসি ছোট্ট একটি অনুর্বর ভূমি মাত্র। যেখানে না আছে পানি, না আছে কোনো সুযোগ-সুবিধা। এমনকি শীত থেকে বাঁচার কোনো জায়গাও নেই। নেই কোনো শৌচাগার।” ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর খান ইউনিসে মঙ্গলবার ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে। গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর এটিই গাজায় ইসরাইলের সবচেয়ে বড় স্থল হামলা বলে মনে হচ্ছে। বিবিসি।