গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোট দেয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, রোববার (১০ ডিসেম্বর) রুশ প্রেসিডেন্টকে ফোন করে তিনি এই ক্ষোভ জানান বলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।

সহপৃষ্ঠপোষক ছিল বাংলাদেশসহ অন্তত ৯৭টি দেশ। রাশিয়াসহ ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যদিও দখলদার ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি পাস হয়নি।

গাজায় ইসরাইলি তাণ্ডবের পরও যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়ায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে সমালোচনা পাত্তা না দিয়ে উল্টো ইসরাইলে জরুরিভিত্তিতে ১৪ হাজার গোলা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর মধ্যেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিসে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। হামলায় একদিনে দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় গাজার জনসংখ্যার অর্ধেকই অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

রয়টার্স জানায়, রোববার রুশ প্রেসিডেন্টকে ফোন দেন নেতানিয়াহু। প্রায় ৫০ মিনিট কথা বলেন তারা। এ সময় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ভোটকে ‘ইসরাইল-বিরোধী অবস্থান’ অভিহিত করে অসন্তোষ প্রকাশ করেন নেতানিয়াহু।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘসহ অন্যান্য ফোরামে রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ইরাইলের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছেন, সে বিষয়ে রোববার পুতিনের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়ার পর ইসরাইল যে শক্তি খাটিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, একই পরিস্থিতিতে পড়লে অন্য কোনো দেশ এর চেয়ে কম শক্তি খাটাত না।

রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতানিয়াহু। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও সামরিক খাতে সহযোগিতা বেড়েই চলেছে।

চলতি সপ্তাহে মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন সহযোগিতা, বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, গাজা-সংকট এবং ইরানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে রাশিয়ার বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন দুই নেতা।

বৈঠকে পুতিন জানান, গত এক বছরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পুরো ক্ষেত্রজুড়ে সক্রিয় সহযোগিতায় যুক্ত আছি।’