আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) লাই চিং-তে, কুওমিনতানের প্রতিনিধিত্বকারী তাইপের মেয়র হু ইউ-ইহ এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির কো ওয়েন-জি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে তাইওয়ানের জনগণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, বেইজিং তাদের ভোটকে প্রভাবিত করার প্রয়াসে তাইওয়ানের তরুণদের টার্গেট করেছে। খবর এএনআই’র।

তাইওয়ানভিত্তিক সংবাদপত্র তাইপে টাইমস জানিয়েছে, টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে তরুণ ভোটারদের টার্গেট করছে চীন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিকটকে শেয়ার করা ভিডিওগুলো তাইওয়ানের সরকার ও সামরিক বাহিনীর প্রতি অবিশ্বাস ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

তাইপে টাইমসের মতে, চীন সরকার সমর্থিত গ্লোবাল টাইমস এবং অন্যান্য চীন ঘেসা গণমাধ্যমগুলি ক্ষমতাসীন ডিপিপি এবং এর নেতাদের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তাইপে টাইমস সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) এই নির্বাচনকে 'যুদ্ধ ও শান্তির' মধ্যে একটি নির্বাচন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। চীন তার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের হুমকি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

সূত্র বলছে, চীনপন্থী প্রার্থীরা এমনকি এই হুমকির সুরে কথা বলছেন। তারা বলছেন, ডিপিপির পক্ষে ভোট মানে তরুণদের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রেরণ করা। এসব প্রার্থীরা তাইওয়ানকে ভয় দেখানোর জন্য সিসিপির (চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি) সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

এই ভিডিওর উদ্দেশ্য হল ভোটারদের মনোযোগ এমন দলগুলির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যা বেইজিংয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পক্ষে অনুকূল। একইসাথে তাইওয়ানের তরুণ ভোটারদের মধ্যে চীনপন্থী মনোভাব তৈরি করতে পারে।

সূত্রের বরাত দিয়ে তাইপে টাইমস জানিয়েছে, সিসিপি তাইওয়ানের তরুণদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, তারা তাদের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যত বিসর্জন দিচ্ছে। সূত্রটি আরও বলেছে, চীন মূলত তাইওয়ানের তরুণদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নীতিসম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে চায়। যার লক্ষ্য নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করা।

সিএনএন জানিয়েছে, সম্প্রতি রুদ্ধদ্বার নিরাপত্তা ব্রিফিংয়ে তাইওয়ানের গোয়েন্দারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, চীন ভুল তথ্য ব্যবহার করে তাইওয়ানের আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য কাজ করছে। এর লক্ষ্য ছিল বিরোধী প্রার্থীদের সম্ভাবনা বাড়ানো যারা বেইজিংয়ের সাথে সম্পর্ক উন্নতির পক্ষে কাজ করছে।

তাইওয়ানে সরকারি কর্মচারীদের টিকটক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নাগরিকদের জন্য অ্যাপটিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
সমস্ত জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন ডিপিপি এগিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। তাইওয়ানের নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে।