ঢাকা   বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫ কার্তিক ১৪৩১

বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘ইতিবাচক’ : হামাস

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০২ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০২ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম

 

 

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় অতি ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরে অভিযান না চালাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই অবস্থায় অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ঘোষণা করলেন বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে ‘ইতিবাচক’ বিবেচনা করছে হামাস।
আজ শনিবার এএফপি জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের আহ্বান জানানোর পর গতকাল সন্ধ্যায় হামাস একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং এই উপত্যকার পুনর্গঠন ও বন্দী বিনিময়’ নিয়ে বাইডেনের বক্তব্যকে ইতিবাচকভাবে দেখছে তারা।
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের কথা ঘোষণাকালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রায় আট মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি টানার আহ্বান জানান।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বাইডেনের শান্তি আলোচনা শুরুর আহ্বানে নেতিবাচক মনোভাব দেখান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হামাসের গাজা শাসন করা ও ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে ওঠার ক্ষমতা নিঃশেষ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে অভিযান না চালাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই অবস্থায় অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে গতকাল ইসরায়েলের ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ঘোষণা করলেন বাইডেন।
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এই আহ্বান জানান বাইডেন।
তিনি বলেছেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে’।
তিন পর্যায়ের নতুন এই প্রস্তাবে গাজায় পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে হামাসের উদ্দেশ্যে বাইডেন বলেন, ‘হামাস সবসময় বলে থাকে, তারা যুদ্ধবিরতি চায়। এখন হামাসের সামনে প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে তারা আসলেই এটা চায় কি না।’
বিবিসি জানায়, বাইডেনের প্রস্তাবটি তিনটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে। এই সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের তুলে নেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক’ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং আহত জিম্মিরা থাকবেন। এর বিনিময়ে ইসরায়েলে বন্দি থাকা কয়েকশ’ মানুষকে মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া হামাসের হাতে জিম্মি অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে হবে।
গাজার সব এলাকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফিরতে সুযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো হবে। গাজায় প্রতিদিন মানবিক সহায়তাবাহী ৬শ’ ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজাবাসীর জন্য হাজারো সাময়িক আবাসনের ব্যবস্থা করবে।
ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা অব্যাহত থাকবে। যদি আলোচনা সফল হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। তাদের মধ্যে জিম্মি পুরুষ সেনারাও থাকবেন। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’ উন্নীত করা হবে।
তৃতীয় পর্যায়ে জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরণের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নিমাণ করা হবে।
হামাসের প্রতি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেওয়া ও গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আহ্বানের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবক।
অন্যদিকে জাতিসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসও ‘দৃঢ়ভাবে আশা করেন’ সর্বশেষ প্রস্তাবটি ‘স্থায়ী শান্তির জন্য উভয়পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তির পথে’ যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

প্রধান উপদেষ্টাকে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ

প্রধান উপদেষ্টাকে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ

কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

দুই দিনের রিমান্ড শেষে নোয়াখালী-৪ সাবেক এমপি একরামুল কারাগারে

দুই দিনের রিমান্ড শেষে নোয়াখালী-৪ সাবেক এমপি একরামুল কারাগারে

নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা

নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা

চৌগাছায় পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ বন্ধ, বিপাকে গ্রাহকরা

চৌগাছায় পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ বন্ধ, বিপাকে গ্রাহকরা

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিয়ে রাষ্ট্রের টাকার অপচয় করেছে আওয়ামী সরকার- বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিয়ে রাষ্ট্রের টাকার অপচয় করেছে আওয়ামী সরকার- বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীম

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে -ইসলামী আইনজীবী পরিষদ

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে -ইসলামী আইনজীবী পরিষদ

ঐক্যবদ্ধ্য ভাবে চাঁদাবাজির মূল উৎসগুলো উৎপাটন করতে হবে  ..সোনারগাঁওয়ে এস এম ওয়ালিউর রহমান আপেল

ঐক্যবদ্ধ্য ভাবে চাঁদাবাজির মূল উৎসগুলো উৎপাটন করতে হবে ..সোনারগাঁওয়ে এস এম ওয়ালিউর রহমান আপেল

কেনাকাটা করতে গিয়ে বিপত্তি, খোদ ফরাসি রাষ্ট্রদূতের মোবাইল চুরি চাঁদনি চকে!

কেনাকাটা করতে গিয়ে বিপত্তি, খোদ ফরাসি রাষ্ট্রদূতের মোবাইল চুরি চাঁদনি চকে!

‘ছাত্র-জনতা দুস্কৃতিকারী’ বলার পুরস্কার সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি!

‘ছাত্র-জনতা দুস্কৃতিকারী’ বলার পুরস্কার সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি!

কেমন শিক্ষাঙ্গন চায় জানতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের মতবিনিময়

কেমন শিক্ষাঙ্গন চায় জানতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের মতবিনিময়

পালিয়ে বিয়ে করে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন কোক স্টুডিও তারকা

পালিয়ে বিয়ে করে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন কোক স্টুডিও তারকা

ব্রাহ্মণপাড়ায় সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণপাড়ায় সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত

ইসরাইলকে জব্দ করতে সামরিক বাজেট ৩ গুন বাড়াচ্ছে ইরান

ইসরাইলকে জব্দ করতে সামরিক বাজেট ৩ গুন বাড়াচ্ছে ইরান

ইবির চারুকলা বিভাগের নতুন সভাপতি ড. কামরুল

ইবির চারুকলা বিভাগের নতুন সভাপতি ড. কামরুল

৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতন তাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে তাই সজাগ থাকতে হবে - বাদশা

৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতন তাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে তাই সজাগ থাকতে হবে - বাদশা