চাপ বাড়লেও সরে যেতে রাজি নন বাইডেন
০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:১৯ পিএম | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১২:১৯ পিএম
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাজে পারফরমেন্সের পর তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার সিনিয়র ডেমোক্র্যাট নেতা ও কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
নভেম্বরের নির্বাচনে তার জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আসতে পারেন এমন গুঞ্জনের মধ্যে তিনি হোয়াইট হাউজে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নিয়েছেন। এরপর তারা ফোনে দলের এক প্রচারণায় অংশ নেন যেখানে বাইডেন পরিষ্কার করেছেন যে, তিনি লড়াইয়ে আছেন এবং হ্যারিসও তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। ‘আমি ডেমোক্র্যাট পার্টির নমিনি। কেউ আমাকে বের করে দিতে পারে না। আমি চলে যাচ্ছি না,’ তিনি এমন কথা বলেছেন বলে বিবিসি নিউজকে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর তহবিল সংগ্রহের একটি ই-মেইলে একই বক্তব্য তুলে ধরা হয়। ‘আমি পরিষ্কারভাবে ও সহজভাবে বলতে চাই যে আমি লড়ছি,’ তিনি ই-মেইলে বলেছেন এবং এর সাথে যোগ করেন ‘শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে থাকবো’। ট্রাম্পের সাথে বিতর্কের পর প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে ৮১ বছর বয়স্ক বাইডেন প্রচারণা অব্যাহত রাখবেন কি না। বিতর্কে বারবার খেই হারানো, দুর্বল কণ্ঠস্বর এবং তার কিছু উত্তর বোঝাই কষ্টকর ছিল। এটি দলের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য তার ফিটনেস এবং নির্বাচনে জেতার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে।
এরপর জনমত জরিপগুলোতে যখন দেখা যায় তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে পার্থক্য বাড়ছে তখন লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তার ওপর চাপ বাড়তে থাকে। বিতর্কের পর নিউইয়র্ক টাইমসের এক জনমত জরিপে দেখা যায় ট্রাম্প এখন তার চেয়ে ছয় পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন, যা এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় ব্যবধান। বুধবার এ জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের পার্টনার সিবিএস এর আরেকটি জরিপে দেখা যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক রাজ্যগুলোতে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্প তিন পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। ওই জরিপ অনুযায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট জাতীয়ভাবেও এগিয়ে আছেন। ডেমোক্র্যাট পার্টির কিছু ডোনার এবং আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্টকে সরে দাঁড়ানোর যে আহবান জানিয়েছেন সেটি নির্বাচনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে।
ম্যাসাচুসেটস ভিত্তিক ভারতীয়-আমেরিকান শিল্পপতি রামেশ কাপুর ডেমোক্র্যাট পার্টির জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ করছেন ১৯৮৮ সাল থেকে। ‘আমি মনে করি মশালটা অন্যের হাতে দেয়ার জন্য তার জন্য এটাই সঠিক সময়,’ কাপুর বিবিসিকে বলেছেন। ‘আমি জানি তার স্পৃহা আছে কিন্তু আপনি প্রকৃতির সাথে লড়তে পারেন না’।
কংগ্রেসের দুই ডেমোক্র্যাটও দলের মনোনয়নের পরিবর্তনের আহবান জানিয়েছেন। সবশেষ আরিজোনার রাউল গ্রিজালভা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে যে ডেমোক্র্যাটদের অন্যদিকে তাকানোর সময় এটা।
এ সত্ত্বেও হোয়াইট হাউজ ও বাইডেন প্রচারণা দল এসব খবরাখবর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন তিনি আগামী পাঁচই নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্পকে হারাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন বুধবার সূত্র উল্লেখ না করে বলেছে যে. বাইডেন লড়াইয়ে থাকবেন কি না তা পর্যালোচনা করে দেখেছেন বলে তার এক মিত্রকে জানিয়েছেন।
উভয় সংবাদে বলা হয় তিনি তার সহযোগীদের বলেছেন যে তার পুনর্নির্বাচন যে বিপদে পড়েছে তা নিয়ে তিনি সচেতন এবং উইসকনসিনে সমাবেশ ও এবিসি নিউজের সাথে সাক্ষাৎকার তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মুখপাত্র অবশ্য এসব রিপোর্ট ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এরপর হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন পিয়ারে নির্বাচনে লড়াইয়ে মি. বাইডেনের থাকা নিয়ে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়েন।
তিনি বলেন খবরগুলো সত্যি নয়। “আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চেয়েছি...তিনি সরাসরি জবাব দিয়েছেন এবং বলেছেন যে ‘না’, এটা পুরোপুরি মিথ্যা। এটাই সরাসরি তার কাছ থেকে এসেছে”।
বাইডেনের সারাদেশে কুড়ি জন ডেমোক্র্যাট গভর্নরের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে আছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যাভিন নিউসম ও মিশিগানের গ্রেচেন হুইটমার। মি. বাইডেন সরে দাঁড়ালে তাদের উভয়েরই সম্ভাব্য বিকল্প হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়।
“প্রেসিডেন্ট সবসময় আমাদের সমর্থন দিয়েছেন,আমরাও একইভাবে তাকে সমর্থন দিচ্ছি,” ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর সাংবাদিকদের বলেছেন।
নিউইয়র্ক গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেছেন দুই ডজন গভর্নর প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন এবং বাইডেন বলেছেন তিনি ‘তিনি জয়ের জন্যই আছেন’। তবে হ্যারিস এখনো সবচেয়ে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তার সমর্থক কম হলেও ট্রাম্পের সাথে বাইডেনের বিতর্ক বিপর্যয়ের পর দলের মধ্যে তার সমর্থন বাড়ছে।
ওই বিতর্কের পর সিএনএনকে দেয়া তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রেসিডেন্টের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছেন। তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বিবিসি নিউজকে বলেছে তার কিছুই পরিবর্তন হয়নি এবং তিনি প্রচারাভিযান অব্যাহত রাখবেন।
“তিনি সবসময় প্রেসিডেন্টের ভালো পার্টনার হতে মনোযোগী,” বলছিলেন মিজ হ্যারিসের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর জামাল সিমন্স।
ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল কমিটির সদস্যরা অগাস্টে দলের কনভেনশনে দলীয় প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দেবেন এবং এরপরই সারাদেশ ব্যালট পেপারে তার নাম আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য বিবিসিকে বলেছেন মি. বাইডেন অনুপযোগী হলে ভাইস প্রেসিডেন্টকে মনোনয়ন দেয়া উচিত। “কনভেনশনে কথা বললে সেটা একটা নৈরাজ্যে রূপ নেবে যা নভেম্বরের নির্বাচনে ক্ষতি করবে”।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে বাইডেন ও তার টিম স্বীকার করছে যে সামনের দিনগুলোতে বাইডেনকে তার ফিটনেসের প্রমাণ দিতে হবে। এ সপ্তাহের শেষে তিনি উইসকনসিন ও ফিলাডেলফিয়াতে যাবেন। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার