পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার দাবির সময়েই মা-মেয়ের উপর হামলা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম

 

 

 

আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় কলকাতা যখন প্রতিবাদে উত্তাল, তার মধ্যেই একাধিক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বুধবারই কলকাতার বেলঘরিয়ায় ছাত্রী ও তার মা-কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র।

 

এর পাশাপাশি বারাসতে আরজি কর হত্যা ও ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদ করার সময় দুই মহিলার প্রতি কুমন্তব্য ও পরে মারধর করে এক যুবক। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। যাদবপুরে যখন রাত দখলের কর্মসূচি চলছিল, তখন এক ব্যক্তি এক নারীর শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। মধ্যমগ্রামে এক অপ্রাপ্তবয়স্কার শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিক্ষোভ।

 

বেলঘরিয়ার মেয়েটির অপরাধ সে ওই ছেলেটিকে ‘প্রত্যাখ্যান' করেছে। বুধবার দুপুরে মেয়েটি যখন তার মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল, তখন প্রফুল্ল নগরের রাস্তায় ছেলেটি এসে মেয়েটিকে কোপ মারতে থাকে। তার মাথা ও ঘাড়ে আঘাত লাগে। তার মা-কেও কোপানো হয়। মা-মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে দুই প্রত্যক্ষদর্শীও আহত হন।

 

স্থানীয়রা ছেলেটিকে ধরে পিটুনি দেয়। তারপর পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। মেয়েটি ও তার মা-কে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাদের একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের আঘাত গুরুতর।

 

এই ঘটনার পর প্রবল বিক্ষোভ দেখা দেয়। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। শাসকদলের এক নেতা গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।

 

স্থানীয়রা জানান, পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা ছেলেটির সম্পর্কে আর কিছু জানতে পারেননি। দিনে-দুপুরে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়ে তারা স্তম্ভিত। বিশেষ করে আরজি করের ঘটনার পরও এরকম ঘটনা ঘটছে দেখে তারা রীতিমতো আতঙ্কিত।

 

মেয়েটির পরিবার জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে মা বাড়ি ফিরছিলেন। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ভূগর্ভস্থ পথ দিয়ে ফেরার সময় কিশোরটি তাদের আক্রমণ করে। পরিবার জানিয়েছে, কিশোরের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক ছিল। মেয়েকে বোঝানোর পর সে সম্পর্ক ছিন্ন করে। কিশোরের নম্বর ব্লক করে দেয়। তারপর সে এই আক্রমণ করলো।

 

মেয়েটির দুইটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর সে বাড়ির মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। জানা গেছে, হামলাকারীও এখন হাসপাতালে। সেখানে পুলিশ প্রহরায় তাকে রাখা হয়েছে।

 

যাদবপুরে যা ঘটেছে

 

বুধবার মাঝরাতে যাদবপুরে বিক্ষোভ চলছিল। সেখানেই এক ব্যক্তি নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করে। ওই ব্যক্তি এক নারীর শ্লীলতাহানিও চেষ্টাও করে। আন্দেলনরতরা তাকে ধরলে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে দ্রুত উল্টো পথে থানায় চলে যায়। পুলিশ এভাবে তাকে বাঁচাবার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন প্রতিবাদীরা।

 

অভিনেত্রী সোহিনী সরকার, বিদীপ্তা চক্রবর্তী এবং চলচ্চিত্র পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। তারা থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। যে নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা হয়েছিল, তাঁকেও থানায় আনা হয়।

 

পুলিশ অভিযুক্তকেআটক করেছে।

 

মাথাভাঙার ঘটনা

 

উত্তরবঙ্গের মাথাভাঙায় রাত দখল কর্মসূচি চলছিল। সেখানে হামলা হয়। তৃণমূলের শহর ব্লক সভাপতির সামনেই মারধর করা হয় আন্দোলনকারীদের। চুন দিয়ে মুছে দেওয়া হয় রাস্তায় লেখা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান।

 

এই ঘটনার ছবি প্রকাশ্যে এলেও ঘটনায় দলীয়-যোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, রাস্তায় প্রতিবাদ-আলপনা আঁকা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ সামাল দিতেই ঘটনাস্থলে যান তৃণমূলের শহর ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়।

 

পরে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

 

মধ্যমগ্রামের ঘটনা

 

মধ্যমগ্রামে এক অপ্রাপ্তবয়স্কার বাড়িতে প্রতিবেশী যুবক ঢুকে তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরই স্থানীয় মানুষ ভয়ংকর উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার