ইউরোপীয় কমিশনে যেভাবে লিঙ্গসমতা আনতে চান উরসুলা
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ এএম | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ এএম
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনে লিঙ্গসমতা আনতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন। আসছে ডিসেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জার্মানির এই রাজনীতিবাদ।
২০১৯ সালে প্রথম ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জার্মানির নারী রাজনীতিবিদ ফন ডেয়ার লাইয়েন ২৭ দেশের কমিশনে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন। এ নিয়ে কাজও করছিলেন তিনি। তার এই চেষ্টা ও লক্ষ্য ব্লকের সদস্যরাষ্ট্রগুলোতেও সমাদৃত হয়।
এর অংশ হিসেবে তিনি জোটের প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে কমিশনার হিসেবে একজন নারী ও একজন পুরুষ সদস্যের নাম প্রস্তাবের কথা বলেছিলেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সেইবারের কমিশনে তিনি নিজেসহ মোট ১৩ জন নারী ও ১৪ জন পুরুষ ছিলেন।
নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো কমিশনের দায়িত্ব পেয়ে আবারো জোটের দেশগুলোকে একই আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তবে এবার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তার অনুরোধ খুব একটা আমলে নেওয়া হচ্ছে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
জোটের বিভিন্ন দেশ থেকে এরমধ্যে কমিশনারদের নাম জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। গত সোমবার পর্যন্ত জোটের ২৯ দেশের ১৭টি দেশই শুধুমাত্র পুরুষ প্রতিনিধিদের নাম জমা দিয়েছে। বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন নারী প্রতিনিধির নাম জমা দিয়েছে। আর ইউরোপের আরেক দেশ বেলজিয়াম একজন নারী ও একজন পুরুষ প্রতিনিধির নাম দিয়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে তাদের সাক্ষাৎকার নেবেন ফন ডেয়ার লাইয়েন।
ইউরোপিয়ান উইমেন'স লবি এক খোলা চিঠিতে জানায়, গত মেয়াদে লিঙ্গসমতাভিত্তিক একটি কমিশন গঠনে আপনার নেতৃত্ব একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। যার ফলে ইইউ এবং এর বাইরে শাসন পরিচালনার একটি মাপকাঠির যাত্রা শুরু হয়। বিবৃতিতে সংগঠনটি উরসুলাকে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়ে নিজের অবস্থান ধরে রাখার আহ্বান জানায়।
এদিকে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর উরসুলার আহ্বানকে খুব একটা গুরুত্ব না দেওয়া বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নানা সংস্থা। ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারের ওলিজাবেথ কুইপার ডিডাব্লিউকে বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এই আচরণ নিন্দাজনক। তবে তার মতে, নারীদের অধিকারের বিষয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের মাঝে রাজনৈতিক ইচ্ছার অভাব দেখা যাচ্ছে।
অবশ্য এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ফন ডেয়ার লাইয়েন। সোমবার ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে ইইউর মুখপাত্র আরিয়ানা পোডেস্টা বলেন, ‘‘নিজের লক্ষ্যের বিষয়ে পরিষ্কার নতুন প্রেসাডেন্ট। আসছে কমিশনে নারী-পুরুষ সমতা তৈরিতে নিজের ক্ষমতার সবটুকু্ করবেন তিনি।''
কী করতে পারেন লাইয়েন?
ফন ডেয়ার লাইয়েনের জন্য বড় সমস্যা হবে সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে নারী সমতায় প্রেসিডেন্ট যেই আহ্বান জানিয়েছেন তা মানতে খুব বেশি জোর করার সামর্থ্য নেই। সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি স্টাডিজের গবেষক সোফিয়া রুসাক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘তিনি যেটি করতে পারেন সেটি হলো ভেটো দেওয়া, যদিও এটি হবে নজিরবিহীন।’’
তার মতে, এর ফলে শুরুতেই আগামী পাঁচ বছর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক খারাপের সূচনা হতে পারে।
এদিকে কুইপার এবং ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টার বলছে, ‘‘সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে অতিরিক্ত একটি করে নাম দেওয়ার কথা বলতে পারেন লাইয়েন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এর ফলে নতুন কমিশনের যাত্রা বিলম্বিত হতে পারে, সেটি বিবেচনায় নিয়ে তিনি এই কাজটি করবেন কি না।''
তবে এতো সবকিছুর পরেও মনে হচ্ছে সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে বুঝাতে পেছন থেকে নীরবে কাজ করে যেতে পারেন ফন ডেয়ার লাইয়েন। যেমন এরইমাঝে দেখা গেছে শেষ মুহূর্তে নিজেদের পুরুষ প্রার্থীকে সরিয়ে একজন নারীপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে রোমানিয়া। আর ইউরোপের আরেক রাষ্ট্র মাল্টাও চাপে রয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
সেই সাথে আরকটি কাজ করতে পারেন লাইয়েন। নারী কমিশনারদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া।
কমিশনে নারী-পুরুষের সমতা আনতে হয়তো আরো কিছু পরিবর্তন আনতে পারবেন নতুন প্রধান। তবে সোমবার পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করতে আরো অনেক দূর যেতে হবে উরসুলাকে।
ইউরোপিয়ান উইমেন'স লবির মুখপাত্র মির্তা বাসেলোভিচ বলেন, ‘‘আমরা ফন ডেয়ার লাইয়েন এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের উপর আস্থা রাখছি। তারা প্রমাণ করবে, ইইউ'র নেতৃত্ব কোনো ছেলেদের ক্লাব নয়।’’
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার