ঢাকা   শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মোদি সরকারের আগ্রাসনে কানাডায় ক্ষতিগ্রস্থ ভারতীয় শিক্ষার্থীরা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম

 

 

গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলন মনপ্রীত সিং। ২২ বছর বয়সী এই তরুণ ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরদাবাদের বাসিন্দা। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডা যাওয়া। কারণ সেখানে অনেক শিখ স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেছেন। খবর আল জাজিরা

 

তবে বর্তমানে কানাডা ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছানোর কারণে তার সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে মনপ্রীত সিং এখন ইউরোপে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং সেখানে সে শিক্ষা গ্রহণের চিন্তা করছে।

 

ওই তরুণ বলেন, ‘বিদেশে শিক্ষার জন্য কানাডা ছিল আমার পছন্দের দেশ। কারণ সেখানে আমাদের সম্প্রদায়ের অনেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এজন্য আমি আমার বাবা মাকে রাজিও করেছিলাম। তবে বর্তমান ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তজনাকর পরিস্থিতির কারণে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।’

 

মনপ্রীত সিংয়ের বাবা ইন্দ্রারজিত সিং আল জাজিরাকে বলেন, ‘তার সন্তানের নিরাপত্তা সবার আগে। আমরা চাই আমাদের সন্তান ভালো শিক্ষা পাক। এজন্য আমরা তার কানাডা যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজিও ছিলাম। কিন্তু ভারত ও কানাডার মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের পুনরায় চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। এজন্য আমি তাকে নিরাপদ কোনো দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

 

মনপ্রীত সিংয়ের মতো ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যে বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার অনেক ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তবে গত বছর হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিতে হচ্ছে। হারদীপ সিং নিজ্জার কানাডিয়ান নাগরিক। তিনি ভারতে শিখদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। যেটি খালিস্তান আন্দোলন নামে পরিচিত।

 

গত বছরের জুন মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে নিজ্জারকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় দুই বন্দুকধারী গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় অটোয়া ভারতকে দায়ী করে। এমনকি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে শিখ নেতাদের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো এবং সহিংসতার পেছনে তাকে দায়ী করেছে কানাডা।

 

রাজনৈতিক উত্তজনার কারণে দুই দেশের খারাপ সম্পর্কের ফলে হাজার হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে কানাডা যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে এডুকেশন এবং ইমিগ্রেশন পরামর্শ কেন্দ্রগুলোতেও। কারণ কানাডায় যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ রুপি নিয়ে থাকে এবং আবেদন থেকে শুরু করে কাগজপত্র সংহের যাবতীয় কাজ তারা করে থাকে।

 

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বিদেশে অধ্যায়রত ১৩ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কানাডায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। দেশটিতে ৪ লাখ ২৭ হজার ভারতীয় শিক্ষার্থী রয়েছে। এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্র (৩ লাখ ৩৭ হাজার) এবং যুক্তরাজ্য (১ লাখ ৮৫ হাজার) এবং জার্মানিতে ৪২ হাজার ৯৯৭ জন শিক্ষার্থী।

 

পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান এডুঅ্যাবরোডের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিভা জেইন, যিনি গত তিন দশক ধরে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, কানাডাতে শিক্ষার্থী পাঠানোর হার ১০ শতাংশ কমেছে। এর পরবর্তীতে এখন যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই এবং ইউরোপে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

উত্তেজনা নিরসনে ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক ইলন মাস্কের : নিউ ইয়র্ক টাইমস
রেগে সংসদের মধ্যেই নাচ তরুণী এমপির, ভিডিও ভাইরাল
মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্কট নিরসনে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করবে রাশিয়া
কুরস্কে একদিনে কিয়েভের ৪৩০ সেনা নিহত
অ্যাপাচি গানশিপে যৌনমিলন, দুই সেনা গ্রেফতার
আরও

আরও পড়ুন

সিরাজগঞ্জে ডাকাত দলের ৯ সদস্য আটক

সিরাজগঞ্জে ডাকাত দলের ৯ সদস্য আটক

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর: উপদেষ্টা আসিফ

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর: উপদেষ্টা আসিফ

উত্তেজনা নিরসনে ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক ইলন মাস্কের : নিউ ইয়র্ক টাইমস

উত্তেজনা নিরসনে ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক ইলন মাস্কের : নিউ ইয়র্ক টাইমস

গাজীপুরে বেতন পেলেন ৫ কারখানার সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক

গাজীপুরে বেতন পেলেন ৫ কারখানার সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক

১৯ বছর পর বক্সিং রিংয়ে কিংবদন্তী টাইসন,প্রতিপক্ষ ২৭ বছরের পল,

১৯ বছর পর বক্সিং রিংয়ে কিংবদন্তী টাইসন,প্রতিপক্ষ ২৭ বছরের পল,

আইসিএমএবি বেস্ট কর্পোরেট গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী ব্যাংক

আইসিএমএবি বেস্ট কর্পোরেট গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী ব্যাংক

সিলেটে এপেক্স জেলা ৪ এর ৩৯ তম কনভেনশন মোহনাপেক্স সম্পন্ন

সিলেটে এপেক্স জেলা ৪ এর ৩৯ তম কনভেনশন মোহনাপেক্স সম্পন্ন

রেগে সংসদের মধ্যেই নাচ তরুণী এমপির, ভিডিও ভাইরাল

রেগে সংসদের মধ্যেই নাচ তরুণী এমপির, ভিডিও ভাইরাল

চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ চোলাই মদ ও অটোরিকশাসহ দুইজন গ্রেপ্তার

চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ চোলাই মদ ও অটোরিকশাসহ দুইজন গ্রেপ্তার

দেশের সব বন্ধ চিনিকল সচল করা হবে: শিল্প উপদেষ্টা

দেশের সব বন্ধ চিনিকল সচল করা হবে: শিল্প উপদেষ্টা

রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাঠামোতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আওয়ামী লীগকে রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে: জাতীয় নাগরিক কমিটি

রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাঠামোতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আওয়ামী লীগকে রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে: জাতীয় নাগরিক কমিটি

উপাচার্যের আশ্বাসে ১৮ ঘন্টা পর অনশন ভাঙলেন রাবি শিক্ষার্থীরা

উপাচার্যের আশ্বাসে ১৮ ঘন্টা পর অনশন ভাঙলেন রাবি শিক্ষার্থীরা

ছেলে নয়, গৃহবধূকে হত্যার পর মরদেহ ফ্রিজে রাখেন বাড়ির ভাড়াটিয়া: পুলিশ তদন্তে নতুন মোড়

ছেলে নয়, গৃহবধূকে হত্যার পর মরদেহ ফ্রিজে রাখেন বাড়ির ভাড়াটিয়া: পুলিশ তদন্তে নতুন মোড়

দীর্ঘ ৯ মাস পর চালু হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানা

দীর্ঘ ৯ মাস পর চালু হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানা

মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্কট নিরসনে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করবে রাশিয়া

মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্কট নিরসনে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করবে রাশিয়া

সেনবাগে কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার!

সেনবাগে কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার!

ফারুকীকে প্রত্যাহার না করলে আবারো রাজপথে নামবো মুফতি ফয়জুল করীম

ফারুকীকে প্রত্যাহার না করলে আবারো রাজপথে নামবো মুফতি ফয়জুল করীম

কুরস্কে একদিনে কিয়েভের ৪৩০ সেনা নিহত

কুরস্কে একদিনে কিয়েভের ৪৩০ সেনা নিহত

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব: মঈন খান

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব: মঈন খান

সেনবাগে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু!

সেনবাগে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু!