ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ট্রাম্পের সহায়তায় পুরো পশ্চিম তীর দখলের প্রত্যাশা ইসরায়েলের

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম

অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুততর সময়ে ইহুদি বসতি স্থাপনের নতুন রেকর্ড গড়ার পর কিছু সংখ্যক ইসরায়েলি এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের দিকে তাকিয়ে আছেন। যে অঞ্চলটিকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কেন্দ্র বলে মনে করা হয়, তারা চাচ্ছেন সেখানে ইসরায়েলের সার্বভৌম ক্ষমতা। দুই বছর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ফেরার পর পশ্চিম তীরে দ্রুতই ইহুদি বসতি স্থাপন বেড়েছে। এ সময় তাদের ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু সরকার বসতি স্থাপনকারীদের জোরালো সমর্থন দিয়ে আসছে।

বর্তমানে পশ্চিম তীরের জর্ডান ভ্যালিতে কয়েকটি টিলার চূড়ায় ইসরায়েলের পতাকা উড়তে দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা। তারা আরও ভূমি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। গতকাল শনিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

বসতি স্থাপনকারীদের অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন চলাকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য প্রার্থনাও করেছিলেন। পশ্চিম তীরের শিলো এলাকার বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলি মেদাদ বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রত্যাশা। এ জন্য আমরা (ট্রাম্পের জয়ে) অনেকটাই উচ্ছ্বসিত।’

ক্ষমতায় এলে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে সউদী আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের বিতর্কিত ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ড’ চুক্তি করতে চাইবেন। ওয়াশিংটনের স্বপ্ন ইসরায়েলের সঙ্গে সউদীর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সউদী আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনের বিরোধী। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান- উভয় পার্টির প্রশাসনে মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করা ডেনিস রস বলেন, ট্রাম্পের অগ্রাধিকারমূলক কাজ হবে আব্রাহাম অ্যাকর্ড সম্প্রসারণ। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম তীরকে গিলে ফেললে সউদীরা বিষয়টি ভালোভাবে নেবে না; তারা ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত হতে চাইবে না। পুরোপুরি অধিগ্রহণ ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকেও কবর দেবে। এর ফলে গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে যে যুদ্ধ চলছে, তা থামানোও কঠিন হবে। এ যুদ্ধের জেরে এখন লেবাননেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

ট্রাম্প প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন। এর মাধ্যমে তিনি ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে আসেন। ২০২০ সালে তিনি বিদ্যমান সীমানার মধ্যেই একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন, যা-তে দখলকৃত এলাকায় ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের দাবি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি নিয়ে তিনি কোনো পরিকল্পনার কথা জানাননি। ট্রাম্পের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিটও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল নীতি নিয়ে কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ট্রাম্প সামর্থ্য অনুযায়ী বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন।

বসতি স্থাপনকারীদের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মোরিচ গত সপ্তাহে বলেছেন, তাঁর প্রত্যাশা ইসরায়েল পুরো পশ্চিম তীর দখল করে নেবে। তাঁর প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তায় আগামী বছরের মধ্যে ইহুদিরা পুরো পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ নেবে। পশ্চিম তীরের ইহুদিদের সংগঠন ইয়াশা কাউন্সিলের প্রধান ইসরায়েল আঞ্জ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েল সরকারকে আরও ‘এগিয়ে যেতে’ সহায়তা করবে। ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন অধিকৃত শিলো এলাকায় ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য প্রার্থনারও আয়োজন করেন তিনি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আরএফকে জুনিয়র কি আমেরিকার খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করতে পারবেন?
সউদীতে এক সপ্তাহে ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার
পাকিস্তানে রাতভর শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩২
ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতে নিহত ২০,শুজাইয়া ছাড়ছে শত শত ফিলিস্তিনি
আফগানিস্তানে মাজারে বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত ১০
আরও

আরও পড়ুন

পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত কুষ্টিয়ার কৃষকরা

পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত কুষ্টিয়ার কৃষকরা

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার বিতর্কিত সিলেবাসের মাধ্যমে মানুষকে ধর্মহীন করার চক্রান্ত করেছিল-পীর ছাহেব চরমোনাই

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার বিতর্কিত সিলেবাসের মাধ্যমে মানুষকে ধর্মহীন করার চক্রান্ত করেছিল-পীর ছাহেব চরমোনাই

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাচ্ছে রাষ্ট্র

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাচ্ছে রাষ্ট্র

জবির বোটানি বিভাগ অ্যালামনাইয়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত

জবির বোটানি বিভাগ অ্যালামনাইয়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত

আরএফকে জুনিয়র কি আমেরিকার খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করতে পারবেন?

আরএফকে জুনিয়র কি আমেরিকার খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করতে পারবেন?

জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনায় গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের দুঃখ প্রকাশ

জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনায় গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের দুঃখ প্রকাশ

বর্তমান সরকার পূর্নবাসনসহ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন- আশাবাদী ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা

বর্তমান সরকার পূর্নবাসনসহ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন- আশাবাদী ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা

ফরিদগঞ্জে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে শিশু-কিশোররা

ফরিদগঞ্জে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে শিশু-কিশোররা

সউদীতে এক সপ্তাহে ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার

সউদীতে এক সপ্তাহে ২০ হাজার প্রবাসী গ্রেফতার

চট্টগ্রামে চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহাসড়ক অবরোধ

চট্টগ্রামে চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহাসড়ক অবরোধ

পাকিস্তানে রাতভর শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩২

পাকিস্তানে রাতভর শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩২

মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতে নিহত ২০,শুজাইয়া ছাড়ছে শত শত ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতে নিহত ২০,শুজাইয়া ছাড়ছে শত শত ফিলিস্তিনি

আফগানিস্তানে মাজারে বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত ১০

আফগানিস্তানে মাজারে বন্দুকধারীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত ১০

সকল পুলিশ সদস্যকে জনসাধারণের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে হবে- শেরপুরের পুলিশ সুপার

সকল পুলিশ সদস্যকে জনসাধারণের সাথে উত্তম ব্যবহার করতে হবে- শেরপুরের পুলিশ সুপার

সরকারির চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ আজ

সরকারির চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ আজ

২ মার্চ 'জাতীয় পতাকা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান : ড. আব্দুল মঈন খান

২ মার্চ 'জাতীয় পতাকা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান : ড. আব্দুল মঈন খান

সাংবাদিক নূরুল কবিরকে হয়রানি, তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

সাংবাদিক নূরুল কবিরকে হয়রানি, তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

রাজধানীতে আজও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ

রাজধানীতে আজও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ

"বহুল সমালোচিত ডা. সাবরিনা এবার নাম লেখালেন অভিনয়ে"

"বহুল সমালোচিত ডা. সাবরিনা এবার নাম লেখালেন অভিনয়ে"