ভারতের গ্রেট নিকোবর দ্বীপে 'হংকং' প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ পিএম | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ পিএম
সম্প্রতি ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের গ্রেট নিকোবর দ্বীপে এক বিশাল উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা চলছে, যা দ্বীপের পরিবেশ ও আদিবাসী জনগণের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। ৭২০০ কোটি রুপি (৯ বিলিয়ন ডলার) বাজেটে তৈরি হওয়া এই প্রকল্পটির অন্তর্ভুক্ত থাকবে একটি ট্রান্সশিপমেন্ট হারবার, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিমানবন্দর এবং নতুন একটি শহর, যা ভারতের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথে সংযুক্ত হবে। তবে, স্থানীয় জনগণ এবং পরিবেশবিদরা এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই উন্নয়ন প্রকল্পটি গ্রেট নিকোবর দ্বীপে ১৬৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাস্তবায়িত হবে এবং এতে প্রায় ৬৫০,০০০ মানুষ বসবাস করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দ্বীপটি মালাক্কা প্রণালীর কাছে অবস্থিত, যা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত শিপিং লেন।বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্পটি ভারতের বৃহত্তর লক্ষ্য হিসেবে চীনের আঞ্চলিক প্রভাব মোকাবেলার অংশ। তবে, প্রকল্পটি স্থানীয় আদিবাসী জনগণের জীবনধারা এবং সংস্কৃতির জন্য বিপদজ্জনক হতে পারে, কারণ এতে তাদের ভূমি হারানোর এবং সভ্যতার সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
গ্রেট নিকোবর দ্বীপের ৮০% অঞ্চল ঘন বনাঞ্চলে আবৃত,যেখানে বিপুল সংখ্যক প্রাণীর বসবাস এবং উদ্ভিদ রয়েছে। পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন যে এই প্রকল্পের জন্য যে বনভূমি পরিষ্কার করা হবে, তা প্রকৃতপক্ষে পরিবেশে ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। বিশেষত ‘গ্যালাথিয়া বে’, যা বিশাল গলফ টারটলদের (কচ্ছপ) প্রজননস্থল, সেই অঞ্চলটি বিপন্ন হতে পারে। এছাড়া, আদিবাসী শোমপেনদের ওপরও প্রকল্পটির ব্যাপক প্রভাব পড়বে, যারা এখনও বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এবং একদম প্রাকৃতিক পরিবেশে বাস করেন। তাদের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রা এই প্রকল্পের কারণে বিপর্যস্ত হতে পারে, বিশেষ করে তারা নতুন রোগের সংক্রমণের শিকার হতে পারে।
এছাড়া, গ্রেট নিকোবর দ্বীপের অন্যান্য জীববৈচিত্র্য যেমন জলজ প্রাণী, সল্টওয়াটার কচ্ছপ এবং অন্যান্য প্রজাতি প্রকল্পটির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সরকার বলেছে যে, পরিবেশগত ক্ষতি কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে প্রকল্পটি ওই অঞ্চলের পরিবেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি সাধন করবে।
এভাবে, এই প্রকল্পটি ভারত সরকারের বড় মাপের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হলেও, এটি পরিবেশ এবং আদিবাসী জনগণের জীবনযাত্রার জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এর ওপর আরও গবেষণা এবং নিরপেক্ষ মূল্যায়ন প্রয়োজন যাতে প্রকল্পের সুফল এবং ক্ষতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
কসাই থেকে নদীখেকো জাফর
পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল
সামনের বর্ষায় ঘাসে ঢাকা হবে রাজধানীর অনাবৃত সড়ক বিভাজন: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
মাদারীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি : দুদকের মামলায় হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ আসামি
কোকোর দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরাফাত রহমান বড় ভূমিকা ছিল: কাজী রিপন
তারেক রহমান একজন মানবিক মানুষ: কাইয়ুম চৌধুরী
রাবির সাত হলে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় উত্তাল ক্যাম্পাস, তদন্ত কমিটি গঠন
ডিসেম্বরে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও সউদী আরব থেকে
যশোরে চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকুরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন
অপরাধী যদি আমার ভাই হয়, তাকেও ছাড় দিবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আবারও সিলেটের নায়ক জাকির, খুলনার টানা দ্বিতীয় হার
এবার হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে নারী আইনজীবীর মামলা
ব্যবসায়ীকে কোপানোয় শাস্তির হুঁশিয়ারি উপদেষ্টা আসিফের
৩৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটর সাইকেল চালক নিহত
কুষ্টিয়ায় র্যাবের অভিযানে ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
কুষ্টিয়ার আলফা মোড়ে সিএনজি স্ট্যান্ড’ নাম দিয়ে চাঁদাবাজি