ভারতে ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থান রক্ষার আইন নিয়ে বিতর্ক
১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম
ভারতের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান নিয়ে তদন্ত ও সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া সম্প্রতি আরও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।ভারতের শীর্ষ আদালত বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনের বিরুদ্ধে মামলার শুনানির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের স্বাধীনতার সময় (১৯৪৭) থেকে ধর্মীয় স্থানগুলো প্রকৃত অবস্থা বা চরিত্র এবং পরিচয় রক্ষা করে। ১৯৯১ সালে পাস হওয়া এই আইনটি ধর্মীয় স্থানের চরিত্র পরিবর্তন বা রূপান্তর নিষিদ্ধ করে এবং আদালতকে এসব জায়গার স্ট্যাটাস নিয়ে বিতর্ক গ্রহণ করতে বাধা দেয়, শুধুমাত্র বাবরি মসজিদ কেসের ক্ষেত্রে এটি আলাদা করা হয়েছে।
এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বর্তমানে অনেক হিন্দু সংগঠন বিভিন্ন মসজিদে মামলা করছে, দাবি করছে যে সেগুলি ভাঙা হিন্দু মন্দিরের ওপর তৈরি করা হয়েছে। এই বিতর্কে কিছু শীর্ষ রাজনীতিক, এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর এক সদস্য, এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে দাবি করেছেন যে এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষতার লঙ্ঘন।
আইনটির পিছনে ছিল ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ধর্মীয় উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা। এই আইনটি ঘোষণা করা হয়েছিল যে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টে যেসব ধর্মীয় স্থানের চরিত্র ছিল, সেগুলি অপরিবর্তিত থাকবে। আইনটি মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদুয়ারাসহ সব ধর্মীয় স্থানে প্রযোজ্য, এবং মসজিদ, মন্দির বা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানগুলোর চরিত্র বদলানোর চেষ্টা বা দাবি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে, বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই আইনকে সমর্থন জানিয়েছে, কারণ তারা মনে করে যে এই আইনটি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপাসনাস্থল রক্ষা করতে সাহায্য করে। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই আইনটি যদি বাতিল বা পরিবর্তন হয়, তাহলে ধর্মীয় উত্তেজনা আরও বাড়বে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি হবে।
এখন, এই আইন নিয়ে শুনানি চলছে এবং এর ফলস্বরূপ গয়নাপি মসজিদ, শাহী ঈদগাহ মসজিদসহ বেশ কিছু বিতর্কিত মসজিদ এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থানের ভবিষ্যত নির্ধারণ হতে পারে। ইতিমধ্যে, রাজস্থান রাজ্যে একটি আদালত সম্প্রতি একটি আবেদন গ্রহণ করেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে সেখানে অবস্থিত আজমির শরিফ দরগা একটি পুরনো হিন্দু মন্দিরের ওপর নির্মিত।এর পাশাপাশি, গত মাসে উত্তর প্রদেশের সাম্ভাল শহরে একটি ১৬ শতকের মসজিদ নিয়ে মামলা কেন্দ্র করে জরিপের সময় সহিংসতায় চারজন নিহত হয়।
বিশ্লেষকরা আরও মন্তব্য করেছেন যে, এসব ধর্মীয় স্থানগুলি ঐতিহাসিকভাবে এত জটিল যে, এর উপর ভিন্ন ভিন্ন দাবি প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন হবে, যার ফলে ধর্মীয় সহিংসতা এবং দাঙ্গার আশঙ্কা বাড়বে।ভারতের ধর্মীয় স্থান সংক্রান্ত আইনি কার্যক্রমের উপর নজর দিলে এটি স্পষ্ট যে, দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং শান্তির জন্য ভবিষ্যতে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ভারতের শীর্ষ আদালতের রায় আগামীতে ভারতীয় ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করতে পারে, যেখানে সঠিক নীতি ও সমঝোতার প্রয়োজন। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার